সোমবার রাতে ইডেন ফিরে পেয়েছে তাঁদের সেরা নাইটের পুরোনো রুদ্রমূর্তি। ২৩ বলে ৪২ রানের ইনিংস ঝড় হয়ে আছড়ে পড়েছে ইডেনে। পাঞ্জাব কিংসকে পাঁচ উইকেট হারিয়ে কেকেআর লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে।
৩৫ বছরের তারকা কেকেআরকে প্রায় ফিনিশিং লাইনে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তবে শেষ ওভারের পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে বসেন ক্যারিবীয় সুপারস্টার। মাঠ ছাড়ার আগে রিঙ্কু সিংয়ের সঙ্গে কিছু কথা বলতেও দেখা যায় আন্দ্রে রাসেলকে।
রাসেল ম্যাচের পর বলে যান, কী কথা হয়েছিল রিঙ্কুর সঙ্গে! জানান, "ওঁকে স্রেফ বলি ম্যাচটা ফিনিশ করে এসো। ও আমাকে বলে, ওকে বিগ ম্যান, কোনও চিন্তা কোরো না!" তারপর শেষ বলে স্কোয়ার লেগ বাউন্ডারিতে চার হাঁকিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করে যান রিঙ্কু।
আরও পড়ুন: জিতল কলকাতা, বড়সড় শাস্তি পেলেন অধিনায়ক নীতিশ রানা
"অন্য কোনও ম্যাচে, অন্য কোনও সতীর্থ ব্যাটারের সঙ্গে রান নিতাম কিনা, নিশ্চিত নই। আমি সেক্ষেত্রে নিজে রান না নিয়ে শেষ বলে ম্যাচ ফিনিশ করার চেষ্টা করতাম। তবে রিঙ্কুর মত একজন ডেথ ওভারে দুর্ধর্ষ ব্যাটার থাকলে প্রচুর আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে যায়। ও ভয়ডরহীনভাবে ব্যাটিং করে। যেখানেই বল করা হোক না কেন, ওঁর স্টকে প্রচুর শট রয়েছে।" ম্যাচের পর বলেন রাসেল।
রিঙ্কুর কথা উঠলে যেন থামতেই চান না 'বিগ ম্যান'। বলতে থাকেন, "রিঙ্কুর যে বিষয়টি সবথেকে ভালো, তা হল ও খুব ঠান্ডা মেজাজের। ক্রিজে বল করার সঙ্গে একদম সঠিক পজিশনে থাকতে পারে, যাতে যে কোনও বলের মোকাবিলা করতে পারে ও। এটাই ওঁর সাফল্যের রহস্য। ওঁর টেকনিক খুব সহজ-সরল। যেভাবে ও ব্যাট পিক করে শট হাঁকায়, সেটা ওঁর টেকনিকের সঙ্গে ভীষণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওঁর সঙ্গে যখনই কথা হয়, ওঁকে স্রেফ নম্র থাকার পরামর্শ দিই। বলি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ওঁর জন্য ভালো লাগছে। ভাইয়ের মত ওঁকে ভালোবাসি।"
রাসেল যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন তখন কেকেআর বেশ কোণঠাসা। ১৪ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে দেখাচ্ছিল কেকেআর ১১৫/৩। ক্রিজে থিতু হতে সময় লাগছিল রাসলের। তবে শেষ তিন ওভারেই খেলা ঘুরিয়ে দেন রাসেল-রিঙ্কু। প্ৰথমে নাথান এলিসকে টার্গেট করে দুজনে তোলেন ১৫ রান। ১৯তম ওভারে স্যাম কুরানের ওভারে ছক্কার হ্যাটট্রিকে ম্যাচ এলেবেলে করে দিয়েছিলেন রাসেল। জয়ের জন্য শেষ ওভারেই দরকার হয়ে পড়ে মাত্র ৬ রানের। ম্যাচের শেষে রাসেল নিজের প্ল্যান খোলসা করে যান, "কুরানের ওভার থেকে তিনটে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলাম। সেই কারণেই ওঁকে টার্গেট করি। শেষ ওভারে যাতে বেশি রান চেজ করতে হয়, সেটাই নিশ্চিত করে চেয়েছিলাম। জানতাম অর্শদীপ ডেথ ওভারে দুর্ধর্ষ বোলার। কেউ বলতে পারে না, কী ঘটবে। তাই তিন ছক্কা ছিল সোনায় সোহাগা। শেষ ওভারে ছয় রানের টার্গেট একদম আদর্শ ছিল আমাদের জন্য।"
কুরানের সেই মোড় ঘোরানো ইনিংসের পর রাসেল জানাচ্ছেন, "কুরান আমার শরীর ঘেঁষে বল করছিল। যাতে মাঠের লম্বা প্রান্তের দিকে শট নিতে হয় আমাকে। মাঠের বড় দিক দিয়েই ওঁকে দুটো ছক্কা হাঁকাই। তারপরে বুঝতে পারি শরীর ঘেঁষা এরিয়ায় ও আর বল করবে না। ব্যাটিং করার সময়েই বোলারের মানসিকতা বুঝতে অসুবিধা হয় না আমার। ও যখন স্লোয়ার কাটার করল উইকেটে লক্ষ্য করে, আমি জায়গা বানিয়ে মাঠের কম দূরত্বের অংশ দিয়ে সপাটে হাঁকাই।"
Read the full article in ENGLISH