ওয়াংখেড়েতে নিজেদের ঘরের মাঠেই মুম্বই শোচনীয়ভাবে হেরেছে গুজরাট টাইটান্স-এর কাছে। ২০৮ রানের টার্গেট চেজ করতে গিয়ে ১৫২-এর বেশি টানতে পারেনি মুম্বই। আর ৫৫ রানে হারের পর মুম্বইয়ের বোলিং কোচ শ্যেন বন্ড নিজেদের প্রয়োগ করার অক্ষমতাকে দায়ী করেছেন।
ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে বন্ড বলে যান, "একাধিক কারণে হারতে হল। আমাদের যা করতে হবে, তা আমরা মাঠে নেমে প্রয়োগ করতে পারছি না। আমাদের একদম সহজ সরল প্ল্যানিং ছিল। আমরা যেখানে বল রাখছিলাম তা সহজেই ব্যাটসম্যানরা উড়িয়ে দেওয়ার পর বেশ কিছু বদল ঘটিয়েছিলাম। আমরা একাধিক প্ল্যানিংয়ের মধ্যে সঠিক সময়ে সঠিক বিষয় প্রয়োগ করতে পারছি না। এটা হতাশার।"
"শেষ ম্যাচেও প্রতিপক্ষ একসময় ১০০/৪ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমরাই প্লেটে করে রান সাজিয়ে দিলাম। আমরা মিলার, মনোহরদের ফ্রি হিট হাঁকাতে দিলাম। ওঁরাই আমাদের হাত থেকে ম্যাচ ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেল। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই খারাপ লাগছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে, নিজেদের প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। সহজ ভাষায় দিনটা বেশ কঠিন গেল আমাদের কাছে।"
গুজরাটের জয়ের জন্য বন্ড হার্দিক পান্ডিয়া এবং রশিদ খানের স্পেলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। "২০৮ টার্গেট থাকলে প্ৰথম থেকেই হাঁকানো ছাড়া গতি থাকে না। বল আলাদাভাবে সুইং হতেই আমরা ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিলাম। স্রেফ হার্দিক এবং মহম্মদ শামি যেভাবে বোলিং করে গেল দেখুন। বল হাঁকানোর কোনও জায়গাই দিচ্ছিল না। পাওয়ার প্লে-তে স্কোরবোর্ড দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, ওঁরা কীভাবে বোলিং করেছে। একই প্ল্যান নিয়ে ওঁরা খেলে গিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচেও।"
"প্ৰথম ৬ ওভার দুই দলের জন্যই কঠিন ছিল। শিশিরের কারণে পরিস্থিতি পরে আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। আমরা নিজেদের নেট রান রেটের ক্ষতি কমাতেও এদিন চেষ্টা করেছিলাম। এদিনের ম্যাচে যা বেশ বড়সড় ধাক্কা খেল।" বলে দিয়েছেন তিনি।
আগের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৪৮ রান হজম করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অর্জুন তেন্ডুলকর। তবে গুজরাটের বিপক্ষে রান বন্যার ম্যাচে দু-ওভার হাত ঘুরিয়ে অর্জুন খরচ করলেন মাত্র ৫ রান। ব্যাট হাতে নেমে কেরিয়ারের প্ৰথম আইপিএল ছক্কা হাঁকালেন। তার আগে ঋদ্ধিমান সাহার মত পোড়খাওয়া তারকাকে আউট করলেন। বন্ড সেই কারণেই ছাত্র তেন্ডুলকরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। জানাচ্ছেন, ওঁর কাছে যেটা প্রত্যাশা ছিল, সেটাই নিখুঁতভাবে করেছে।
"ও আজকে দারুন বোলিং করেছে। বিশাল ঠাসা স্টেডিয়ামে পারফর্ম করা মোটেই সহজ নয়। ওঁর বলের পেস কীভাবে বাড়ানো যায়, সেই বিষয়ে আমরা কাজ করে চলেছি। তবে ওঁর কাছে এদিন যা চাওয়া হয়েছিল, তা একদম ঠিকঠাক করেছে।" জানাচ্ছেন তিনি।
আগামী ম্যাচগুলোয় দলে বড়সড় কোনও বদল হবে কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে বন্ড জানালেন, "একটা খারাপ দিনের পারফরম্যান্স দেখে দলে বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। দলের বেশ কয়েকজন বোলার গত কয়েক ম্যাচেই ধরেই ফর্মে নেই। খারাপ পারফরম্যান্স সহজে ভুলে যেতে হয়। এটাই টি২০ ক্রিকেটের নিয়ম। প্লে অফে খেলতে হলে আমাদের সমস্ত প্ল্যানিং ঠিকমত মাঠে প্রয়োগ করতে হবে। যাই করি না কেন, আরও ভালো করতে হবে।"
"দলে বদল নিয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। হারের পরে দলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হয়। টুর্নামেন্ট জুড়ে আমাদের ব্যাটিং কিন্তু খারাপ খেলছে না। বোলিং ইউনিট হিসাবে আমরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছি না। পরের ম্যাচের আগে বেশ কিছুদিন সময় রয়েছে হাতে। দলে বদলের বিষয়ে কোচ এবং ক্যাপ্টেন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।"
Read the full article in ENGLISH