রবিবার রাতে রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারে জিতে গিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ম্যাচ হারলেও প্লে অফের দৌঁড় থেকে কার্যত বিদায়। এমন অবস্থায় হায়দরাবাদ একদম শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে রাজস্থানের ২১৫ রান চেজ করল।
শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। বাউন্ডারি হলেই ম্যাচ গড়াত টাইয়ে। সেই বলেই লং অফে বল হাঁকাতে গিয়ে আব্দুল সামাদ জস বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। মুহূর্তেই বিষাদের ছায়া নেমে আসে সানরাইজার্স ক্যাম্পে।
কিন্তু কে জানত তখনও টুইস্ট বাকি। হঠাৎ করেই আম্পায়ার নো বলের সিগন্যাল দেন। সেই সঙ্গে উপরি পাওনা ফ্রি হিট। হঠাৎ করেই ম্যাচ জেতার সুযোগ চলে আসে হায়দরাবাদের কাছে। শেষ বলে সন্দীপ শর্মা অবশ্য বাঁচাতে পারেননি রয়্যালসদের। সোজা লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন।
কিন্তু ম্যাচের একদম শেষ লগ্নে বিভ্রান্তি হাজির হয়। নো বলে ক্যাচ তুলে আউট হওয়ার পরেও শেষ বলে কেন স্ট্রাইকে থাকলেন আব্দুল সামাদ। বিশেষ করে তিনি যখন ক্যাচ নেওয়ার মুহূর্তে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকা মার্কো জ্যানসেনকে ক্রস করে গিয়েছিলেন রান নেওয়ার তাড়নায়।
কমেন্ট্রি বক্সেও এই বিভ্রান্তি চরমে পৌঁছয়। ধারাভাষ্য দিতে থাকা গ্রেম সোয়ান পর্যন্ত বলে দেন, "ওঁরা কি ক্যাচ নেওয়ার আগেই ক্রস করে ফেলল? ওঁদের এই রান কি যুক্ত হবে?" সহ ধারাভাষ্যকার রবিন উথাপ্পা বলেন, "মনে হয় না ওঁরা ক্রস করেছে। মনে হয়না ওঁরা রান সম্পূর্ণ করেছে।" গ্রেম সোয়ান এরপরে বলেন, "এই বল থেকে ওঁরা বোধহয় তিন রান সংগ্রহ করল।" তবে দুই ধারাভাষ্যকার-ই দিনের শেষে ভুল প্রমাণিত হলেন।
সামাদ এই বিভ্রান্তি দূর করে দেন ম্যাচের শেষে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে সামাদ বলে দেন, "আমরা ক্রস করার পরেই বুঝতে পারি নো বল হয়েছে। সঙ্গেসঙ্গেই মার্কোকে ফিরে আসতে বলি।" ম্যাচেও দেখা যায় আম্পায়ার নো বলের সিগন্যাল দেওয়ার আগেই সামাদ-মার্কো জ্যানসেন পুনরায় নিজেদের ক্রস করে নেন।
তবে সামাদ যদি মুহূর্তের বুদ্ধিতে ক্রস না করতেন, তাহলে তিনি কি শেষ বলে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকতেন? ক্রিকেটের নিয়ম বলছে, সামাদ ফের একবার ক্রস না করলেও স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকতেন। আইপিএলের এক আম্পায়ার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জানিয়েছেন, "সামাদের পুনরায় ক্রস করার সঙ্গে ওঁর স্ট্রাইক পাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। নো বলের ক্ষেত্রে বল ফিল্ডারের তালুবন্দি হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই তা ডেড হিসাবে পরিগণিত হয়। ক্রিকেটের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ক্যাচ নেওয়ার সময় যদি দুই ব্যাটসম্যান পরস্পর প্রান্ত বদল করেন, তাহলে নন স্ট্রাইকার ব্যাটার নন, ক্রিজে সদ্য আসা নতুন ব্যাটসম্যানই নতুন বল ফেস করবেন।"
"একইভাবে নো বলের ক্ষেত্রে ক্যাচ নেওয়ার আগে দুই ব্যাটার ক্রস করেছেন কিনা, তা বিচার্য হবে না। সেই রানটাই কাউন্ট হবে না। স্রেফ নো বলের জন্য এক রান এবং যে স্ট্রাইকিং এন্ডে ছিল, তাঁকেই পরের বল ফেস করতে হবে। সেই কারণেই শেষ বলে জয়ের জন্য হায়দরাবাদের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪ রান, ৩ রান নয়। যেখানে সামাদকেই স্ট্রাইকিং এন্ডে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়।"
সন্দীপ শর্মা শেষ বলে ইয়র্ক করতে চেয়েছিলেন। যে বল সোজা মাঠের বাইরে ফেলে দিয়ে রোমহর্ষক জয় ছিনিয়ে নেন দলের হয়ে।
Read the full article in ENGLISH