আরসিবির জার্সিতে চলতি সিজন স্মরণীয় করে রেখেছেন বিরাট কোহলি। দুটো শতরান সহ ১৪ ম্যাচে ৬৩৯ রান করেছেন। বিরাট কোহলির দুরন্ত ফর্ম সত্ত্বেও আরসিবি ফের একবার প্লে অফের আগে ছিটকে গিয়েছে। আইপিএল ট্রফি জয় কোহলির কাছে অধরাই থেকে গিয়েছে।
তবে পারফরম্যান্স তো বটেই অক্রিকেটীয় কারণেও চলতি সিজনে শিরোনামে উঠে এসেছেন কোহলি। লখনৌ সুপার জায়ান্টস ম্যাচে নভিন উল হকের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছেন। জুতো দেখিয়ে দুর্নাম কুড়িয়েছেন। সেই ম্যাচের শেষেই গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে একপ্রস্থ লেগে গিয়েছে তাঁর।
গম্ভীর পর্বের আগেও সৌরভের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচে। দিল্লির ডাগ আউটে বসে থাকা সৌরভের দিকে রুদ্রমূর্তিতে তাকিয়ে হেডলাইনে উঠে এসেছিলেন। এরপরে করমর্দনের সময় সৌরভ তাঁকে এড়িয়ে যান।
সৌরভের সঙ্গে কোহলির ইগোর লড়াই বারবারই প্রকট হয়েছে এই সিজনে। সৌরভ আইপিএলে অন্যান্য ক্রিকেটারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও কোহলির বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
এর আগে সূর্যকুমার আরসিবির বিপক্ষে ঝড় তোলার পর খুল্লামখুল্লা সূর্যকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। একইভাবে সৌরভের মুখে এবার শুভমান গিলকে নিয়ে উচ্ছ্বাস। লিগ পর্বের একদম শেষদিন তিনটে সেঞ্চুরি দেখেছিল আইপিএল। ক্যামেরন গ্রিনের ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরিতে প্লে অফের লড়াইয়ে টিকে ছিল মুম্বই। তারপর গুজরাটের বিরুদ্ধে মাস্ট উইন ম্যাচে বিরাট কোহলি অনবদ্য শতরান করে দলকে ১৯৭ রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তবে তা কাজে আসেনি। শুভমান গিল সেরার সেরা সেঞ্চুরি করে আরসিবিকে প্লে অফের লড়াই থেকে ঠেলে দিয়েছেন।
সেই ম্যাচের পরে সৌরভ শুভমান গিলের বিষ্ফোরক শতরানকে কুর্ণিশ জানান। যদিও কোহলির শতরান সম্পর্কে একটা শব্দও খরচ করেননি মহারাজ।
সৌরভ নিজের টুইটে লেখেন, "ভারতে প্রতিভার অভাব নেই। দুটো ইনিংসে দুটো শতরান। কী অসাধারণ টুর্নামেন্ট!" তবে কোহলি ভক্তরা এরপরেই সৌরভকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হামলা চালান। সরাসরি মহারাজকে জিজ্ঞাসা করেন কেন কোহলির নাম নিলেন না তিনি। কোহলির প্রশংসা না করায় সৌরভকে কার্যত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যারাকিং করা হয়।
সৌরভের সঙ্গে কোহলির দ্বন্দ্ব অনেক পুরোনো। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বোর্ড সভাপতি থাকার সময়েই জাতীয় দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বিরাট কোহলি। সৌরভ সেই সময় প্রচারমাধ্যমে সরাসরি বলে দেন, বোর্ডের তরফে কোহলিকে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে নিষেধ করা হয়েছিল। তবে সেই অনুরোধ বিরাট রাখেননি। এরপরেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার ঠিক আগে বিদায়ী প্রেস কনফারেন্স-এ কোহলি বিস্ফোরকভাবে সৌরভের বক্তব্য খন্ডন করে বলে দেন, বোর্ডের সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর কোনওরকম আলোচনাই হয়নি।
তার আগে ২০২১ আইপিএল চলার ঠিক আগেই কোহলি জাতীয় দলের টি-২০ ফরম্যাট থেকে নেতা হিসেবে সরে দাঁড়ান। মরশুম শেষে আরসিবির নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণাও করেন তিনি। এরপরে আচমকা কোহলিকে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বোর্ডের তরফে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, সীমিত ওভারের দুই ফরম্যাটে দুই অধিনায়ক থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।
এরকমভাবে অপমানিত হয়ে কোহলি এরপরে টেস্টের অধিনায়ক হিসাবেও পদত্যাগ করেন। সেই সম্পর্ক আজও জোড়া লাগেনি।