দিল্লি ক্যাপিটালস: ১৯১/৫
সিএসকে: ১৭১/৬
Delhi Capitals vs Chennai Super Kings IPL 13th Match Highlights: ধোনি বনাম পন্থ, লড়াইয়ের ট্যাগলাইন ঠিক হয়েই ছিল। ভাইজ্যাগে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ঝড় উঠল পন্থের ব্যাটে। চরম দুর্ঘটনা থেকে ফিরে আসার পর নিজেকে জানান দেওয়া ইনিংস খেলে গেলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে সাইক্লোন উঠল মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাটেও। ব্লকবাস্টার ম্যাচে শেষ হাসি হাসলেন পন্থই। দিল্লির ১৯২ রানের জবাবে সিএসকে থামল ১৭১ রানে। ২০ রানে জিতে অবশেষে জয়ের খাতা খুলল দিল্লি ক্যাপিটালস।
পন্থের জয় এল বোলারদের দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের সুবাদে। সিএসকের প্রত্যেক ব্যাটারদের জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল ক্যাপিটালস। রচিন রবীন্দ্র, ড্যারেল মিচেলকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে টানা লেন্থ বল, শিবম দুবের সামনে স্পিনার নয়, পেসার লেলিয়ে দিয়ে শান্ত রাখা, ডেথ ওভারে টানা ওয়াইড ইয়র্কার করে যাওয়া- দিল্লির এই ব্লু প্রিন্টেই গত পাঁচ বছরে এই প্ৰথম পন্থদের সামনে হার হজম করল সিএসকে।
DC vs CSK IPL 13th Match Report 2024
১৯২ রান চেজ করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই সিএসকেকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছিলেন খলিল আহমেদ, ইশান্ত শর্মারা। শুরুর ৩ ওভারে উঠেছিল মাত্র ৭ রান। শোচনীয় ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলেন রচিন রবীন্দ্র। খলিল-ঈশান্তের সামনে ১২ বলে করেছিলেন মাত্র ২ রান। তার আগে প্ৰথম ওভারেই আউট হয়ে যান ক্যাপ্টেন রুতুরাজ গায়কোয়াড।
আরও পড়ুন: ক্যাচ ধরতে গিয়ে মাঠেই গড়াগড়ি তিন বাংলাদেশির, ফের বিশ্ব ক্রিকেটকে হাসাল টাইগাররা, দেখুন VIDEO
তবে তৃতীয় উইকেটে অজিঙ্কা রাহানে এবং ড্যারেল মিচেলের ৫৮ রানের দুরন্ত পার্টনারশিপে আবার ম্যাচে ভালোই ফিরেছিল সিএসকে। দুজনে আস্কিং রেট অনেকটাই কমিয়ে এনেছিলেন। তবে এই জুটিতে ব্রেক থ্রু এনে দেন অক্ষর প্যাটেল। মিচেলকে (২৬ বলে ৩৪) আউট করার পরেই ফের ব্যাকফুটে চলে যায় হলুদ জার্সি। কিছুক্ষণ পর আউট হয়ে যান রাহানেও (৩০ বলে ৪৫)।
এরপরে রান চেজ করার দায়িত্ব পুরোটাই ছিল শিবম দুবে এবং রবীন্দ্র জাদেজার ওপর। তবে দুবে এদিন খাপ খুলতে পারলেন না দিল্লি বোলারদের সামনে। পন্থ নিখুঁত অধিনায়কত্ব করে গেলেন। আনরিখ নকিয়া এবং মুকেশ কুমারকে ডেথ ওভারে ব্যবহার করলেন চতুরতার সঙ্গে। মুকেশ কুমার একই ওভারে শিবম দুবে এবং সমীর রিজভিকে আউট করার পর সিএসকের জয় কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। স্রেফ ওয়াইড ইয়র্কার করে মুকেশ কুমার-আনরিখ নকিয়ারা ডেথ ওভারে কার্যত জায়গাই দিলেন না সিএসকে ব্যাটারদের।
হারার আবহে ব্যাট করতে নেমে কেমন মহেন্দ্র সিং নামক ব্যক্তি কেমন ব্যাট করেন, সেটা ছিল দেখার। তবে শিষ্য পন্থের কামব্যাকের ম্যাচে ফিরল ভিন্টেজ ধোনিও। নকিয়া, মুকেশ কুমারদের সামনেই ১৬ বলে মাহির ব্যাট থেকে বেরোল ৩৭ রানের গোলা। ২৩১ প্লাস স্ট্রাইক রেটে চারটে বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারি হাঁকালেন। তবে টার্গেট যে বড্ড বেশি ছিল। ৪২ বছরেও ফিনিশ করে আসতেই পারতেন তিনি।
তার আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়েছিল দিল্লি। ক্যাপিটালস ইনিংস পুরোটাই পন্থ-ময়। শুরুটা হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নার, পৃথ্বী শয়ের বিধ্বংসী ওপেনিং জুটিতে ভর করে। দুজনে মিলে শুরুতেই ৯৩ রানের জুটি গড়ে যান। প্রথম ১০ ওভারে দিল্লি স্কোরবোর্ডে ৯৫ তুলে ফেলেছিল।
মাঝের ওভারে মাথিসা পাথিরানা ওয়ার্নার এবং মার্শকে ফিরিয়ে ঝটকা দিয়েছিল। এক ঝটকায় দিল্লির রান রেট কমিয়ে দিয়েছিলেন লঙ্কান পেসার। তবে পন্থ ঝড় তুললেন তারপরেই। ১৯তম ওভারে পন্থ আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ৫১ করে যান সুপারস্টার। হাঁকালেন চারটে বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারি। এমনকি সিএসকের দিনের সেরা বোলার পাথিরানাকে এক ওভারে জোড়া ছক্কা, বাউন্ডারিও হাঁকালেন তিনি। একসময় হাঁসফাঁস করতে থাকা দিল্লি ব্যাটিং পন্থের মাস্টার ক্লাসে ভর করে ১৯১ তুলে দিয়েছিল। আইপিএলে পন্থের শেষ হাফসেঞ্চুরি এসেছিল তিন বছর আগে। সিএসকের বিপক্ষেই। তারপরই ধোনির সামনেই পন্থের ফের জ্বলে ওঠা।