Mumbai Indians in 2014 IPL: সোমবারের ছবিটা এখনও ভুলতে পারছে না ক্রিকেট দুনিয়া। ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ধরাশায়ী হয়েছে রাজস্থান রয়্যালস (আরআর)-এর কাছে। আর, তারপর গোটা মুম্বই টিম হেঁটে চলে গেল ড্রেসিংরুমে। ব্যতিক্রম অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি গিয়ে বসলেন ডাগ আউটে। সেই ছবি নেটদুনিয়ায় ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি। ক্রিকেটবিশ্ব এই ছবি দেখে স্পষ্ট বুঝে যায়, নিজের দলেই একা হয়ে পড়েছেন মুম্বই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। এককথায় একঘরে।
তারপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, হার্দিকক গোটা টিমের মধ্যে একা করে দেওয়ার পিছনে কার হাত? আর, এক্ষেত্রে যাঁর নাম উঠে আসছে তিনি হলেন মুম্বইয়ের অপসারিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আর, মুম্বইয়ে তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সূর্যকুমার যাদব। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ইরফান পাঠান বলে বসেছেন, অধিনায়ক হার্দিকককেই ভালো কিছু করে দেখাতে হবে। না-হলে তাঁকে কিছুতেই রোহিত, সূর্যরা সম্মান করবেন না।
পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক রশিদ লতিফ আবার মনে করছেন, দোষটা আসলে মুম্বইয়ের মালিক অম্বানিদের। তাঁরাই জোর করে রোহিতকে অপসারণ করেছেন। আর, হার্দিককে টেনে এনে সবার মাথার ওপর বসিয়ে দিয়েছেন। লতিফের স্পষ্ট কথা, মুম্বইয়ের পরপর হারের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সিদ্ধান্তই দায়ী।
মুখ খুলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন স্পিনার হরভজন সিং। তিনি আবার হার্দিকের পাশে দাঁড়িয়ে মুম্বইয়ের খেলোয়াড়দের তীব্র সমালোচনা করেছেন। হরভজন বলেছেন, মুম্বইয়ের খেলোয়াড়রা আসলে হার্দিককে তাঁদের অধিনায়ক হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। সেই কারণে, তাঁকে একা করে দিয়েছেন। এনিয়ে মুম্বইয়ের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন ভাজ্জি।
সোমবারের ম্যাচের পর হরভজন বলেন, 'ছবিটা মোটেও ভালো লাগছে না। ওকে (হার্দিক) একা ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড়দের উচিত ওকেই নিজেদের অধিনায়ক হিসেবে মেনে নেওয়া। সিদ্ধান্ত যখন হয়েছে, তখন গোটা দলের একজোট হয়েই থাকা উচিত। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার পর, ছবিটা দেখতে ভালো লাগছে না।'
হরভজন যে শোয়ে একথা বলেন, সেখানে তাঁর সঙ্গে কয়েক মাস আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া অম্বাতি রায়ডুও ছিলেন। রায়ডু জিজ্ঞাসা করেন, হার্দিককে এমন বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে কেন? স্বাধীনভাবে তাঁকে কেন কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না? জবাবে হরভজন জানিয়েছেন, তাঁর ধারণা যে ড্রেসিংরুমের বড় মাথারাই অধিনায়ক হার্দিকের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে হরভজন বেশ ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেন, 'আমি জানি না যে এটা ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত। কিন্তু, এটা স্পষ্ট যে দলে অনেক লোক আছে যাঁরা ওঁকে বিভ্রান্ত করছে। স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না। এটা কোনও অধিনায়কের জন্যই ভালো পরিস্থিতি নয়।' প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধু বলেছেন, বিসিসিআই যদি রোহিত শর্মাকে আগেই জাতীয় টি২০ দলের অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিত, তবে মুম্বই কিছুতেই অধিনায়ক পদ থেকে রোহিতকে সরাত না।
সিধুর ধারণা, 'বিসিসিআই যদি অক্টোবরেই জানিয়ে দিত যে রোহিত টি২০ বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক, তবে মুম্বই ফ্র্যাঞ্চাইজি কিছুতেই হার্দিককে অধিনায়ক বানাত না। কিন্তু, যেটা হয়েছে তা হল- মুম্বই রোহিতকে সরিয়ে হার্দিককে অধিনায়ক করার দুই মাস পর বিসিসিআই টি২০ বিশ্বকাপ অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেছে। জয় শাহ নামটা জানিয়েছেন। এখন, মুম্বইয়ের কাছে ব্যাপারটা সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
আরও পড়ুন- হারের চোটে মাথা আগুন! ড্রেসিংরুমে গিয়েই চেয়ার ভেঙে একাকার করলেন বিরাট, বিস্ফোরক VIDEO ফাঁস
সিধুর সোজা কথা, 'মুম্বইয়ের ভক্তরা এটা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না, কেন ভারতের নায়ক, ভারতের অধিনায়ক ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্যাপ্টেন নন। তবে, হার্দিককে নিয়ে এত টানাপোড়েন হত না, যদি তিনি দুটো ম্যাচ জিততেন।' সিধু কথাটা খাঁটি বলেছেন, কারণ এবারের আইপিএলের প্রথম তিনটি ম্যাচেই মুম্বই ধরাশায়ী হয়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সমর্থকদের টোন-টিটকিরি। গ্যালারি থেকে তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়াতেও হার্দিককে রীতিমতো তুলোধনা করছেন মুম্বই সমর্থকরা।