লখনৌ সুপার জায়ান্টস: ১৮১/৫
আরসিবি: ১৫৩/১০
Lucknow Super Giants vs Royal Challengers Bengaluru IPL 15th Match Highlights: পাঞ্জাব ম্যাচে গতিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিলেন ব্যাটারদের। আইপিএল অভিষেকে তুলকালাম ঝড়ের ঢেউয়ে বিশ্বক্রিকেটের মনোযোগ আকর্ষণ করে নিয়েছিলেন এক লহমায়। এবার পাঞ্জাবের পর মায়াঙ্ক যাদবের গতির ঝড়ে স্রেফ পিষে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আগের ম্যাচের ৩ উইকেটের পর মায়াঙ্ক আরসিবির ডেরায় গিয়ে লাল-জার্সিকে বধ করলেন ফের তিন শিকারে। তাঁর গতি সামলাতে নাজেহাল হয়ে গেলেন হেভিওয়েট ব্যাটিংলাইন আপ। ৪ ওভারে খরচ করলেন মাত্র ১৪ রান।
লখনৌয়ের ১৮১ রানের জবাবে আরসিবি তরতরিয়ে এগোচ্ছিল। এম সিদ্ধার্থদের সামনে কোহলি-দু প্লেসিসরা ইচ্ছামত বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছিলেন। ওভার পিছু ১০ রান করে দলকে টানছিলেন কোহলি-দু প্লেসিসরা।
LSG vs RCB IPL 15th Match Report 2024
তবে পাওয়ার প্লে-র ঠিক আগে এবং পরের ওভারেই বিপর্যয়। দুজনেই আউট হয়ে যান। দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর আরসিবি ব্যাটিংয়ের মিডল অর্ডার একার হাতে পিষে দেন মায়াঙ্ক যাদব। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিন, রজত পাতিদারকে স্রেফ গতিতে টলিয়ে দেন লখনৌয়ের স্পিডগান।
১৫১ কিমির গতিতে ধেয়ে আসা বল পুল করতে গিয়ে সোজা শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন ম্যাক্সওয়েল। ক্যামেরন গ্রিন আবার ১৫৩ কিমির বলের সামনে ব্যাট নামাতেই সেকেন্ডের ভগ্নাংশ দেরি করে ফেলেন। সম্বিৎ ফিরতেই দেখলেন স্ট্যাম্প মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। একইভাবে প্রচন্ড গতির শর্ট লেংথের বল পুল করতে গিয়ে সোজা লোপ্পা ক্যাচ তুলে দেন রজত পাতিদার।
বিধ্বংসী মায়াঙ্কের সামনে ৫৮/৪ থেকে ৯৪/৫ হয়ে যাওয়া আরসিবির নিশ্চিত হারের মুখে কিছুটা দোলাচল হাজির করেছিলেন মহিপাল লোমরোর। মায়াঙ্কের ৪ ওভারের কোটা ফিনিশ হয়ে যাওয়ার পরেই স্বমূর্তি ধরেন লোমরোর। ইয়াশ ঠাকুরের বলে ১৮ তম ওভারে আউট হওয়ার আগে আরসিবিকে হঠাৎ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে গিয়েছিলেন তিনি ১৩ বলে ৩৩ রানের সাইক্লোন ইনিংসে। তিনটে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি সমেত তিনি ঝড় তোলার সময় মনে হচ্ছিল আরসিবি হয়ত ম্যাচ জিতে যেতেও পারে। তবে নভিন উল হক স্লোয়ার বাউন্সারে দীনেশ কার্তিক এবং ইয়াশ ঠাকুর মহিপালকে ফেরানোর পর আরসিবির হার ছিল সময়ের অপেক্ষা।
এরপরে পুরো ২০ ওভার ব্যাট করার আগেই ১৫৩-এ অলআউট হয়ে যায় আরসিবি। লখনৌয়ের জয় আসে ২৮ রানে।
চিন্নাস্বামীর পিচে হালকা ঘাস রয়েছে। সেই পিচে ত্রা আগে লখনৌকে ব্যাট হাতে টেনেছিলেন কুইন্টন ডিকক। দারুণ হাফসেঞ্চুরি করে যান তারকা। লখনৌয়ের ব্যাটিংয়ের পাটাতন গড়ে দিয়ে যায় ডিকক-রাহুলের ওপেনিং পার্টনারশিপ। দুজনে শুরুটা করেন মসৃণভাবে। প্ৰথম তিন ওভারেই ৩২। পাওয়ার প্লেতে ৫৪।
তবে রাহুল নয়, বেশিরভাগ রান-ই এসেছিল ডিককের ব্যাট থেকে। মহম্মদ সিরাজের ওপর চড়াও হন প্রোটিয়াজ তারকা। প্রথম দুই ওভারেই তিনটে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের রিংটোন সেট করে দেন তিনি। রাহুলের আবার শুরুটা হয়েছিল ধীরগতিতে। ৬ রান করতেই নিয়ে নেন ১০ বল।
ইয়াশ দয়ালকে ছক্কা হাঁকানোর পর গতি পায় রাহুলের ইনিংসে। ঠিক পরেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও ছক্কা হাঁকিয়ে দেন কেএল। তবে অজি অলরাউন্ডারের বলেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। গুড লেংথের বল পুল করতে গিয়ে মায়াঙ্ক দাগারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন গত ম্যাচে ইমপ্যাক্ট পরিবর্ত হিসাবে নামা রাহুল।
পাড়িক্কল ১১ বলে ৬ রানের ইনিংসে কখনই স্বচ্ছন্দে ছিলেন না। তাঁর ক্রিজে থাকার যন্ত্রণা লাঘব করেন সিরাজ। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে শূন্যে ক্যাচ তুলে দেন। দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ নেন উইকেটকিপার অনুজ রাওয়াত। তৃতীয় উইকেটে ডিকক এবং মার্কাস স্টোইনিস ৩০ বলে ৫৬ রানের ইনিংস লখনৌকে অনেকটা এগিয়ে দেয়। পার্টনার স্টোইনিসকে সঙ্গে নিয়ে ৩৬ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডিকক। ছক্কা হাঁকান ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিনকে।
এই জুটির পরিসমাপ্তি ঘটে স্টোইনিস পয়েন্টে মায়াঙ্কের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেওয়ায়। ১৬.৩ ওভার শেষে লখনৌ ১৪৩/৪ ছিল। সেখান থেকে ডেথ ওভারে ব্যাটে ঝড় তোলেন নিকোলাস পুরান। ১৯তম ওভারে রিস টপলিকে টানা তিনটে ছক্কা হাঁকান। শেষ ওভারে সিরাজকেও জোড়া ছক্কা হজম করতে হয়।