Swapnil Singh IPL Late Bloomer: চলে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ লিগে খেলতে। কখনও আবার মাথায় ছিল, অনেক হয়েছে। কেরিয়ারে এবার ইতি টানা উচিত। আরসিবির সেই স্বপ্নিল সিং, এবারের আইপিএলের অন্যতম উঠে আসা মুখ। বয়সটা ৩৩। খেলোয়াড়় ক্যাটাগরিতে বেশ বেশিই। বলতে গেলে যেন, এক দেরিতে ফোটা ফুল।
শুরুটা কিন্তু, এতটা খারাপ ছিল না। অনূর্দ্ধ ১৯ জাতীয় দলে বিরাট কোহলির রুমমেট ছিলেন। তারপরটা কোহলির সাফল্য। আর, ভাগ্যের ব্যারিকেডে স্বপ্নিলের বারবার আটকে যাওয়ার গল্প। আইপিএল মিলিয়ে দিল দুই সতীর্থকে।
সেই মেলানোটাও বেশ টানা-হিঁচড়ের গল্প। আরসিবি অন্যদের মত তাঁকে এমনি দলে নেয়নি। স্বপ্নিলের কথায়, 'নিলামে নেওয়ার আগে ট্রায়াল-কাম-ক্যাম্পে ডেকেছিল।' জিম্বাবোয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার আরসিবির দায়িত্বে। তাঁর সামনে কার্যত মৌখিক পরীক্ষার মত বসতে হয়েছে স্বপ্নিলকে। সেখানে ফ্লাওয়ার তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, গত মরশুমটা কেমন কেটেছে? জবাবে স্বপ্নিল বলেছিলেন, 'আমাকে একটা সুযোগ দিন। এটাই হয়তো আমার শেষ সুযোগ। আমার ওপর একটু অন্তত বিশ্বাস রাখুন।'
এরপরও তাঁকে নিলামের প্রথম রাউন্ডে আরসিবি ডাকেনি। স্বপ্নিলের কথায়, 'আমি ভেবেছিলাম, সুযোগ না পেলে চলতি ঘরোয়া মরশুমে খেলব। প্রয়োজনে পরের মরশুম খেলেই কেরিয়ারে ইতি টানব।' কিন্তু, শেষ পর্যন্ত আরসিবি তাঁকে কিনে নেয়। আর, তাতে আরসিবির লাভই হয়েছে। স্পিন বোলার কাম অলরাউন্ডার স্বপ্নিল আরসিবির (RCB)-এর হয়ে ৮.৭৬ ইকোনমি রেটে ছয় উইকেট নিয়েছেন। এমনকী, কখনও-সখনও বোলিং ওপেনও করেছেন। আর, সেসবের প্রভাব? আরসিবি অন্য অনেক দলকে টেক্কা দিয়ে পৌঁছে গিয়েছে এবারের আইপিএলের প্লে-অফ পর্বে।
আরও পড়ুন- ভেঙে পড়া পুরোনো সৈনিককে বুকে টানলেন! ম্যাচ হারতেই শাহরুখের সান্ত্বনা, ঝড় তুলল মোদি স্টেডিয়ামে
স্বপ্নিলের কথায়, 'যখন কেউ কঠোর পরিশ্রম করেন। যখন তাঁর শরীর থেকে ঘাম ঝরে, তখন কিছু না কিছু পুরস্কার মেলেই।' একসময় তো আইপিএলে সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশেই চলে যাচ্ছিলেন। স্বপ্নিলের বাংলাদেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন পেস বোলার ইরফান পাঠান। ইরফান এই প্রসঙ্গে বলেন, 'বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে ও খেলার অফার পেয়েছিল। একইসঙ্গে লখনউ ওকে নেট বোলার হিসেবে ডেকেছিল। ও তখন দোনামনা করছিল। কারণ ওর চিন্তায় ছিল, নেট বোলিং করার চেয়ে বাংলাদেশে গিয়ে ক্রিকেট লিগে খেললে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হবে।' সেই সময় পাঠানও স্বপ্নিলকে বাংলাদেশে যেতে বারণ করেছিল।
বরোদা দলে স্বপ্নিলের সতীর্থ দীপক হুডা ফোন করে লখনউয়ের নেট বোলার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই সুযোগ পাবেন কি না, তা নিয়েও নিশ্চিত ছিলেন না স্বপ্নিল। সেসময় তিনি সরাসরি ইরফান পাঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এলএসজির তৎকালীন মেন্টর গৌতম গম্ভীরকে এরপরই পাঠান অনুরোধ করেছিলেন, স্বপ্নিলকে নেওয়া যেতে পারে কি না, সেটা একবার দেখে নেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত স্বপ্নিল এলএসজিতে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেটাই হয়ে ওঠে তাঁর জীবনের অন্যতম অধ্যায়ের প্রকৃত সূচনা। কারণ, প্রথমে নেট বোলার হিসেবে সুযোগ পেলেও পরবর্তীতে তিনি লখনউয়ের হয়ে আইপিএল খেলার সুযোগ পান।