আরসিবি: ২১৮/৫
সিএসকে: ১৯১/৭
Royal Challengers Bengaluru vs Chennai Super Kings IPL 68th Match Highlights: ধোনির বল্লা চলল। কোহলিরও ব্যাট ঝলসে উঠল। ক্যাপ্টেন ফাফ দু প্লেসিস ব্যাট হাতে তান্ডব চালানোর পর অতিমানবীয় ক্যাচে ম্যাচের মোড় ঘোরালেন। জাদেজা গত বছরের ফাইনালের রিপিট টেলিকাস্ট প্রায় দেখিয়ে দলকে প্লে অফে কার্যত কোয়ালিফাই করার প্রান্তে নিয়ে এলেন।
RCB vs CSK IPL 68th Match Report 2024: পরের বছর আইপিএলে ধোনি, ডুপ্লেসিসদের মত মহাতারাদের দেখা যাবে কিনা ঠিক নেই। ধোনি-বিরাটও সম্ভবত একসঙ্গে শেষবার বাইশ গজে খেলে ফেললেন। তবে ধোনি, জাদেজা, ডুপ্লেসিস কিংবা বিরাট নন। চিন্নাস্বামীর মায়াবি রাত শাপমুক্তি দিয়ে গেল কোনও এক ইয়াশ দয়ালের। মহাতারকাদের মঞ্চেই প্রচারের চড়া আলো টেনে নিলেন নিজের দিকে।
সিএসকে হারার মুখ থেকে বাজিগরের মত ফিরে এসেছিল ধোনি-জাদেজার ব্যাটে ভর করে। দুজনে ফিনিক্স পাখির মত দলকে তুলে এনেছিলেন অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি থেকে। ১২৯/৬ হয়ে যাওয়ার পর ৬১ রানের ঐশ্বরিক পার্টনারশিপে ভর করে।
টার্গেট ২১৯। তবে সিএসকের পাখির চোখ ছিল ২০১-এ। সেই রানে পৌঁছলেই যে পাওয়া যাবে প্লে অফের টিকিট। তাই পরাজয়-ই সহি, তবে তা যেন ২০১-এর স্টেশনে পৌঁছেই হয়। এমন দ্বৈত টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে ধোনি-জাদেজা দলকে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: টানা ৫ ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন, এবার বন্ধুর ইয়াশের জন্য টুপি খুললেন রিঙ্কু, হৃদয় গলে জল এক নিমেষেই
শেষ দুই ওভারে সিএসকের টার্গেট দাঁড়ায় ৩৪। লকি ফার্গুসন ১৯তম ওভারে ১৭ রান বিলিয়ে দেওয়ার পর শেষ ওভারে সিএসকের দরকার ছিল মাত্র ১৭ রান। ধোনি-জাদেজা ক্রিজে, আর এই রান তো এলেবেলে!
তবে এই মঞ্চই যেন বিধাতা সাজিয়ে রেখেছিলেন ইয়াশ দয়ালের জন্য। রিঙ্কুর কাছে পাঁচ ছক্কা হজম করে কেরিয়ারে অন্ধকারে চলে গিয়েছিল। ডিপ্রেশনের গর্ভে চলে গিয়েছিলেন দীর্ঘ কয়েক মাস। এবার দল বদলে আরসিবিতে। আর ২০ তম ওভারেই যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। দয়ালের প্ৰথম বলই স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠিয়ে দেন ধোনি। শেষ পাঁচ বলে সমীকরণ নেমে আসে ১১-এ।
মাহির ব্যাটে রোমাঞ্চকর টার্গেটে পৌঁছে সিএসকে প্লে অফে পৌঁছবে ধরেই নিয়েছিলেন সকলে। তবে এখানেই টুইস্ট। দয়ালের স্লোয়ার পড়তে না পেরে স্কোয়ার লেগে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন মাহি। তারপর টানা স্লোয়ার শার্দূলকে দাঁড় করিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করিয়ে দেন এক বছর আগে গুজরাট টাইটান্স-কে জেতা ম্যাচ হারিয়ে দেওয়া সেই দয়াল।
ম্যাচে ধোনি-জাদেজার ব্লকবাস্টার পার্টনারশিপ বাদ দিলে কখনই ম্যাচে ছিল না সিএসকে। ডু অর ডাই ম্যাচ। দু দলের জন্যই। তবে আরসিবির সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল বেশি। জিতলেই হবে না। জয়ের ব্যবধান থাকতে হবে ন্যূনতম ১৮ রান।
টসে জিতে আরসিবিকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড। কোহলি (২৯ বলে ৪৭)-দু প্লেসিসের (৩৯ বলে ৫৪) ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পেয়ে যাওয়ায় ফিরে তাকাতে হয়নি আরসিবিকে।
ঝড় তোলার মোমেন্টাম চালু থাকে রজত পাতিদার (২৩ বলে ৪১), ক্যামেরন গ্রিনদের ব্যাটে (১৭ বলে ৩৮)। দীনেশ কার্তিক এবং ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিও আরসিবিকে ২১৮ পার করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: বড় হৃদয়ের পরিচয় দিলেন ক্যাপ্টেন ফাফ! ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েই তা উৎসর্গ দলেরই এই তারকাকে
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্ৰথম বলেই আউট হয়ে ফেরেন ক্যাপ্টেন গায়কোয়াড। ১৯/২ হয়ে যাওয়ার পর অজিঙ্কা রাহানে (২২ বলে ৩৩) এবং রচিন রবীন্দ্র (৩৭ বলে ৬১) বেশ দারুণ এক পার্টনারশিপে সিএসকেকে টানছিলেন। রাহানে দশম ওভারের শুরুর বলেই ফিরে যান। তারপর হঠাৎ করেই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছিল সিএসকে মিডল অর্ডার- শিভম দুবে, মিচেল স্যান্টনার, রচিন রবীন্দ্র ফিরে যাওয়ার পর সিএসকের ইনিংসের হাল ধরেন মাহিদেজা জুটি। দুজনে সোনার সময়ের স্মৃতি ফিরিয়ে সিএসকেকে আরও একটা প্লে অফে পৌঁছনোর দরজায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে দয়ালের অবিশ্বাস্য সেই শেষ ওভার সব হিসাবে গুলিয়ে দিল।
ধোনি-জাদেজাদের প্রস্থানের ম্যাচেই উদয় নতুন তারকার, অভিশাপের স্রোত পেরিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়নের জন্ম হল শনি-রাতে।