আইপিএলে একাধিকবার খেলতে নেমে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এবার আবারও মুখোমুখি দুই তারকা। শুক্রবারই কেকেআর বনাম আরসিবি ম্যাচে দ্বৈরথের মুখে কোহলি এবং গম্ভীর। চিন্নাস্বামীতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে নামছে নাইট রাইডার্স এবং আরসিবি।
আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই হারতে হয়েছে আরসিবিকে। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন কোহলিরা। ৩৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে কোহলি আরসিবিকে চলতি সিজনের প্রথম ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন।
এই মহারণের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন জাতীয় দলের হয়ে একসময় খেলা স্পিডস্টার বরুণ এরণ। তিনি বলে দিয়েছেন, কোহলি গম্ভীরের সামনে নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকবেন।
স্টার স্পোর্টস-এ বরুণ বলেছেন, "বাউন্ডারি লাইনের বাইরের লড়াই দেখার জন্য উদগ্রীব। আরসিবি ডাগ আউটের পাশেই বাউন্ডারি লাইনের ধারে থাকবেন গম্ভীর। জানি না, কী ঘটবে। সকলেই জানেন, বিরাট কেমন! সবসময় ও নিজের মধ্যে আগুন রাখতে পছন্দ করে। আর ও কেকেআর ডাগ আউটের দিকে তাকালেই চার্জড আপ হয়ে যাবে।"
অস্ট্রেলিয়ার তারকা স্টিভ স্মিথও বলেছেন, সকলের নজর থাকবে দুজনের দিকে, "দেখার মত দারুণ একটা লড়াই হতে চলেছে। শত্রুতা এবারেও আলাদা কিছু হবে না। আমি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। শেষ ম্যাচে অনবদ্য খেলেছে বিরাট। দুরন্ত ফর্মে থাকার বার্তা দিয়েছে। আমি মুখিয়ে রয়েছি এই লড়াইয়ের জন্য।"
কোহলি বনাম গম্ভীর লড়াইয়ের ইতিবৃত্ত:
কোহলি এবং গম্ভীর-দুজনে জাতীয় দলে একত্রে খেলেছেন প্রায় পাঁচ বছর। দুজনেই ২০১১-য় ভারতকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। দিল্লি ক্রিকেটে গম্ভীর প্রায় সাত বছরের সিনিয়র কোহলির থেকে। ২০০৬-এ দিল্লিতে কোহলির প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। টি২০-তে কিং কোহলির আত্মপ্রকাশ আরও এক বছর পর।
২০০৯-এ কোহলি প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান। ইডেনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ওয়ানডেতে কোহলি গম্ভীরের সঙ্গে ২২৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। সেই ম্যাচে গম্ভীর নিজের ম্যাচ সেরার পুরস্কার তুলে দেন কোহলির হাতে। যে ঘটনায় দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন গম্ভীর।
আইপিএল ২০১৩: কোহলি বনাম গম্ভীর সংঘর্ষের প্রথম সূত্রপাত হয় ২০১৩-য়। আরসিবি অধিনায়ক হিসেবে কোহলি অল্পরানে আউট হওয়ার পর দুজনে কথা কাটাকাটিতে জড়ান। কোহলি সেই সময় উত্তেজিত হয়ে ডাগ আউটে যাওয়ার পথে নরম গরম কথা শুনিয়ে দেন তৎকালীন কেকেআর অধিনায়ক গম্ভীরকে। বাকি ক্রিকেটারদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে।
আইপিএল ২০১৫: বেঙ্গালুরুতে আইপিএল ম্যাচের সময় ফের একবার তর্কাতর্কিতে জড়ান দুজনে। পরে ভিডিওয় দেখা যায় দিল্লির দুই তারকাকে ছাড়িয়ে দেওয়ার আগে বেশ উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত গম্ভীর অবসর নেওয়ার পর একাধিকবার কোহলির উদ্দেশ্যে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। ভারতীয় দলের কোহলির নেতৃত্ব-দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন করেন গম্ভীর। আরসিবি দীর্ঘদিন কোহলিকে অধিনায়ক রাখার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন তিনি।
আইপিএল ২০২৩: চরম রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে লখনৌ এক উইকেটে হারিয়ে দেয় আরসিবিকে। সেই সময় গম্ভীর বাকি লখনৌ তারকাদের সঙ্গে আরসিবি দর্শকদের উদ্দেশ্যে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ইঙ্গিত করেন।
ফিরতি ম্যাচে আরসিবি আবার লখনৌয়ে গিয়ে হারিয়ে দেয় সুপার জায়ান্টসদের। মাঠে নভিন উল হকের সঙ্গে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে মাঠের বাইরেও। লখনৌ তারকা কাইল মায়ের্স কোহলির সঙ্গে কথা বলার জন্য এগিয়ে যান। এরপরে গম্ভীর হস্তক্ষেপ করেন। এরপরে ক্যামেরায় ধরা পড়ে কোহলি-গম্ভীরের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা। এতে দুই শিবিরের ক্রিকেটাররাই জড়িয়ে পড়েন। পরে যদিও দুজনকে দেখা যায় ড্রেসিংরুমে পরস্পরকে আলিঙ্গন করছেন।