Chennai Super Kings New Captain Ruturaj Gaikwad: মহেন্দ্র সিং ধোনি চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার আইপিএলের নতুন মরশুম শুরুর আগে রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে নতুন অধিনায়ক মনোনীত করা হয়েছে। ধোনি, পাঁচটি আইপিএলে শিরোপা জয়ে সিএসকে-কে নেতৃত্ব দিয়েছেন। চলতি মরশুমে তিনি একজন সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবেই দলে থাকবেন। শেষ মুহূর্তে চোট না পেলে শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তাঁকে উইকেটরক্ষক হিসেবে মাঠে নামতে দেখা যাবে।
আইপিএল মরশুমের শুরুতে এই অধিনায়ক পরিবর্তনের পদক্ষেপটি আশ্চর্য মনে হতেই পারে। তবে, শোনা যাচ্ছে যে পরদার আড়ালে সুপার কিংস, রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে অধিনায়কের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরি করেছে। ২০২২ সালে, মহারাষ্ট্রে নতুন মরশুম শুরুর কয়েকদিন আগে, রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ধোনি সিএসকের লাগাম তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু, মরশুমের মাঝপথেই জাদেজা অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। আর, ধোনি ফের দায়িত্ব নেন।
আবার, ২০২৩ সালের আইপিএলের আগে, সিএসকে বেন স্টোকসকে বিকল্প অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিয়েছিল, কিন্তু অলরাউন্ডার স্টোকসের ফিটনেসের সমস্যা থাকায় সিএসকে গায়কোয়াড়ের দিকে নজর ঘোরাতে বাধ্য হয়। নতুন অধিনায়ক, ২৭ বছর বয়সি রুতুরাজ অবশ্য জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য নন। তবে এই ওপেনার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের রীতিমতো নামী খেলোয়াড়।
২০১৯ সালে সিএসকে-তে যোগ দেওয়ার পর, ২০২০ সালে আইপিএলে রুতুরাজের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরপর তিনটি ম্যাচে তিনি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার পান। তারপর ২০২১ সালে, চেন্নাই তাদের চতুর্থ শিরোপা জেতে। রুতুরাজ অরেঞ্জ ক্যাপ হোল্ডার ছিলেন। আর তখন থেকেই তিনি দলের নিয়মিত সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
২০২২/২৩ ঘরোয়া মরশুমে, বিজয় হাজারে ট্রফিতে ধোনির সঙ্গে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছেন গায়কোয়াড়। সেখানেই অধিনায়ক বদলের প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এটা রাঁচিতে হয়েছিল। মিডিয়ার বিনা উপস্থিতিতে ব্যাটন হস্তান্তর ধোনির একটা স্টাইল। ভারতীয় দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে যাওয়ার সময়, বিরাট কোহলির সঙ্গেও ধোনিকে এভাবে সময় কাটাতে দেখা গিয়েছিল।
তারপর থেকেই গায়কোয়াড় টিম হোটেলে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের সঙ্গে অধিনায়কত্বের বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিয়মিতভাবে যোগ দিচ্ছিলেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে এর আগে কথা বলতে গিয়ে সিএসকের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসি বলেছিলেন যে, ওই ওপেনারের (গায়কোয়াড়) মধ্যে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সমস্ত গুণ আছে। হাসি গায়কোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করেছেন। তার সূত্রেই তিনি একথা বলেন। মাইক হাসির কথায়, 'ধোনির মত ও খুব শান্ত। ধোনির মতই চাপ সামলাতে পারে। খেলাটা খুব ভালো বোঝে। আর আমি আগেই বলেছি, ও খুব ভালো করে সবকিছুর ওপর নজর রাখে। আমি মনে করি, স্বভাব, চরিত্র এবং ব্যক্তিত্বের কারণেই মানুষ ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়, ওর চারপাশে থাকতে পছন্দ করে। ওর মধ্যে নেতৃত্বের কিছু চমৎকার গুণাবলি আছে।'
সেই বিজয় হাজারে ট্রফিতে, গায়কোয়াড় মহারাষ্ট্রকে ফাইনালে তুলেছিলেন। তার বেশ কয়েকজন সতীর্থ তাঁর মধ্যে অধিনায়ক ধোনিকেই খুঁজে পান। দলের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা, অনুশীলনের সময়সূচি ঠিক করা- ধোনি যেমন সিএসকেতে করে থাকেন, বিজয় হাজারেতে গায়কোয়াড়ও ঠিক তেমনটাই করেছিলেন।
আরও পড়ুন- এক ওভারে দু-বাউন্সার, ওয়াইড-নো বলেও রিভিউ! ICC-র বিরুদ্ধে গিয়ে যুগান্তকারী নিয়ম এবারের IPL-এ
গায়কোয়াড়ের ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের অলরাউন্ডার আজিম কাজি বলেন, 'উনি আমাদের সবকিছু হয়ে উঠেছে। আমরা নতুন জিনিস শিখতে পাচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতির টোটাল সেট-আপ পরিবর্তন করেছেন। হোটেলেও আমরা দল হিসেবে একসঙ্গেই আছি। যেমন, তিনি হোটেলে তাঁর ঘর সবসময় খোলা রেখেছিলেন, যাতে আমরা সেখানে যেতে পারি। কোনও কিছুর জন্য তাঁর সাহায্য চাইতে পারি। যদি কোনও খেলোয়াড় ভুল করেন, তবে তিনিই (গায়কোয়াড়) প্রথম ব্যক্তি যিনি মাঠের বাইরে থেকে নির্দেশ দেন- কীভাবে তা সংশোধন করা যাবে। আরও আকর্ষণীয় বিষয় হল, তিনি গেম প্ল্যান ঠিক করেন। কে কী করবেন, তা ঠিক করে দেন। সঙ্গে আমাদের পরামর্শও নিয়েছেন।' এভাবেই মহারাষ্ট্রের অধিনায়কের ভূমিকাকে ব্যবহার করে, গায়কোয়াড় এবার ধোনির জুতোয় পা রাখলেন।