Kolkata Knight Riders vs Sunrisers Hyderabad IPL 2024 Final Match Report in Bengali: বাংলায় রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব। আর চেন্নাইয়ে আছড়ে পড়ল নাইটদের ঘূর্ণিঝড়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে স্রেফ চিপে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। কয়েক মাস আগেই আহমেদাবাদে বিশ্বকাপের ফাইনালে একপেশে ম্যাচের সাক্ষী থেকেছিলেন প্যাট কামিন্স। তবে সেবার তিনি বিজয়ীর বরমাল্য মাথায় চাপিয়ে ছিলেন। এবার আইপিএল ফাইনাল সেই ভঙ্গিতেই তাঁকে পরাজিতদের সারিতে বসিয়ে দিল।
আইপিএল ফাইনাল চলাকালীনই টুইটারে ট্রেন্ডিং, 'ওর্স্ট এভার আইপিএল।' সত্যি এতটাও নিকৃষ্টতম ফাইনাল উপহার দিয়ে যাবে রবিবারের দ্বৈরথ, ভাবাই যায়নি। বরং ম্যাচের আগে বারবার হায়দরাবাদকেই ফেভারিট বলা হচ্ছিল। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে যতই দুর্দমনীয় ক্রিকেট খেলে যাক না কেন, হায়দরাবাদকে ফাইনালের আগেই দু-বার হারানোর কীর্তি থাকুক না কেন- বিশেষজ্ঞরা হায়দরাবাদকে জয়ী বলে দিচ্ছিলেন স্রেফ কামিন্স নামক ক্রিকেট প্রফেসরের সৌজন্যে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে ম্যাচ বের করেছিলেন অজি নেতা। এদিন পিচ চিনতেই ভুল করে বসলেন সেই বিশ্বজয়ী অধিনায়ক। লাল বলের পিচ যে দেড় গজ করে সুইং করিয়ে দেবেজ ভাবতে পারেননি অজি তারকা।
কামিন্সের স্বপ্ন ধ্বংস করে দিলেন তাঁরই বন্ধু স্টার্ক। প্লে অফ থেকে এতটাই দুরন্ত যে ট্র্যাভিস হেডের মত পেস বোলিং মোকাবিলায় অন্যতম সেরা তারকা হেড নিজে স্ট্রাইক না নিয়ে স্টার্ককে ফেস করার জন্য পাঠিয়ে দিলেন অভিষেককে।
আরও পড়ুন: এক ডেলিভারিতেই তছনছ হায়দরাবাদ, আইপিএলের সেরার সেরা ডেলিভারি এটাই, দেখে নিন স্টার্কের ম্যাজিক
বাকিটা ইতিহাস। স্টার্ক কীভাবে নতজানু করে ছাড়বেন হায়দরাবাদ ব্যাটিংকে, সেরা গোটা বিশ্ব ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছে।
যেভাবে প্ৰথম চার বলে অভিষেককে নাস্তানাবুদ করে পঞ্চম বলে আউট করলেন। তাতেই যেন কেঁপে গেল গোটা হায়দরাবাদের ব্যাটিং। একশো কুড়ির ঘরে বল করা বৈভব অরোরার আউট সুইংয়ে ফিরবেন আতঙ্কের ট্র্যাভিস হেড, ভাবাই যায়নি।
কোনও রকমে স্কোর ১১৩। তবু আশা ছিল ভুবনেশ্বর-কামিন্স-নটরাজনরা মিলে কিছু ভেলকি দেখাতে পারেন কিনা। নারিনকে শুরুতেই ফিরিয়ে দেন কামিন্স। তবে ভেঙ্কটেশ আইয়ার চলতি সিজনে নিজের সবথেকে বিধ্বংসী ইনিংস যেন তুলে রেখেছিলেন রবিবারের উপর। ২৬ বলে ৫২ রানের ঝড়ের পর ম্যাচের কিছু অবশিষ্ট ছিল না। ম্যাচ শেষ হল হাতে ৮ উইকেট এবং ৫৭ বল বাকি থাকতে।
তার আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে হায়দরাবাদ লজ্জাজনক রেকর্ড গড়ে ফেলেছিল। কোনও সংস্করণের আইপিএল ফাইনালে সর্বনিম্ন রান করার নজির গড়ে ফেলেছিলেন প্যাট কামিন্সরা। চিপকে রবিবার হায়দরাবাদ ১১৩ তুলেছিল কোনওরকমে।
২০১৩-র ফাইনালে সিএসকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ১২৩/৯ তুলেছিল। সেটাই ছিল কোনও সংস্করণের ফাইনালে সর্বনিম্ন রানের নজির। সেই রেকর্ড রবিবার অতিক্রম করল রবিবার।
কেকেআর পেসারদের সামনে হায়দরাবাদ টপ অর্ডার একদমই দাঁড়াতে পারেনি। ৭ ওভার শেষেই হায়দরাবাদ ৪৭/৪ হয়ে গিয়েছিল। শুরুটা করেছিলেন মিচেল স্টার্ক। মাত্র ২ রানে বিপজ্জনক অভিষেক শর্মাকে ফিরিয়ে দেন স্টার্ক প্রথম ওভারেই। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
বৈভব অরোরা দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান ট্র্যাভিস হেডকে। রানের খাতা খোলার আগেই রহমনুল্লাহ গুরবাজের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন অজি ব্যাটার। স্টার্ক এরপরে দ্বিতীয় শিকার করেন রাহুল ত্রিপাঠিকে ফিরিয়ে। হর্ষিত রানা নিজের প্ৰথম ওভারেই আউট করেন নীতিশ রেড্ডিকে।
এরপরে হায়দরাবাদ ইনিংস টানার দায়িত্ব পুরোটাই ছিল দুই প্রোটিয়াজ তারকা হেনরিখ ক্ল্যাসেন, আইডেন মার্করামের ওপর। তবে রাসেলকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে স্টার্কের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মার্করাম। এলিমিনেটর ম্যাচের নায়ক শাহবাজ আহমেদ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বরুণ চক্রবর্তীর বলের শিকার হয়ে ফিরতে হয় বাংলার শাহবাজকে।
ব্যাটিং দীর্ঘায়িত করার জন্য ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নিয়ে আসা হয়েছিল আব্দুল সামাদকে। তবে রাসেল তাঁকে ফেরান মাত্র ৪ রানে। হর্ষিত রানার বল স্ট্যাম্পে টেনে এনে ক্ল্যাসেনের ইনিংস-ও ছোট হয় এরপরের।