Rinku Singh Reply on KKR Low Salary: টাকাটা ভারতের বেকারত্বের বাজারে হিসেব করলে বেশ বেশিই। কিন্তু, আইপিএলে যেভাবে টাকা ওড়ে, তার তুলনায় হিসেবেই আসে না। রিংকু সিংয়ের মাইনে মাত্র ৫৫ লক্ষ টাকা। সাত বছর ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)-এ। তারপরও রিংকু এখনও লক্ষের ঘরেই আটকে। যদিও প্রকাশ্যে এই কেকেআর প্লেয়ারের এনিয়ে কোনও তাপ-উত্তাপই নেই। আর এসব নিয়ে প্রশ্ন করলেই, শোনাচ্ছেন দর্শন। যেন কোনও সাধুবাবা অমৃতবাণী দিচ্ছেন!
অথচ, গতবার ধুমধাড়াক্কা খেলে, ওভারে পাঁচটা ছয় মেরে আইপিএলের ইতিহাসে ঢুকে পড়েছেন। টি-২০ ভারতীয় দলে ফিনিশার হিসেবে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের কাছে নাম কিনেছেন। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তদের মত লেজেন্ডরা পর্যন্ত জাতীয় দলে রিংকু না থাকলে বিস্ময় প্রকাশ করেন। ক্ষোভ দেখান। তারপরও মাইনে ৫৫ লক্ষ! আর, এই প্রথমবার কেকেআরে এসে অস্ট্রেলিয়ান মিচেল স্টার্ক কি না, ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা নিয়ে গেলেন। কোটির হিসেবটা না হয় ছেড়েই দেওয়া গেল। ফেউ থাকা লক্ষের পরিমাণটাও রিংকুর মাইনের চেয়ে বেশি।
কেকেআরে রিংকুরই সতীর্থ। এমন নিয়ে প্রশ্ন শুনলে অনেকেই রাগে জ্বলে যেত। কিন্তু, সবসময় খোশমেজাজে থাকা রিংকু অন্যরকম। বাবা বাড়ি বাড়ি গ্যাসের সিলিন্ডার ডেলিভারি করেন। রিংকু নিজেও খুব কষ্ট করে প্রথম জীবনটা কাটিয়েছেন। মাটি আর বাস্তবটা বুঝতে তাই অসুবিধা হয় না। সবসময় থাকেন হাসি-ঠাট্টার মেজাজে। পুরো ছক্কা হাঁকানোর কায়দায় বলেছেন, '৫০-৫৫ লক্ষ টাকাটাও কম না। আমি যখন শুরু করি, ভাবিনি এত টাকা পাব। এত আয় করব। যখন ছোট ছিলাম, ১০ টাকাও অনেক মনে হত। এখন ৫৫ লক্ষ টাকা পাচ্ছি। আমি টাকার মূল্য বুঝি। আমার মনে হয়, এই টাকাটাই আমার কাছে অনেক।'
বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে রিংকু জানিয়েছেন, তিনি টাকার পিছনে ছোটায় বিশ্বাসী না। নিজের কাজটা করে যেতে চান। টাকা এমনিই আসবে। পাশাপাশি, মধ্যবিত্তসুলভ মানসিকতা থেকে টাকা নিয়ে তাঁর সাবধানবাণী, 'টাকা আসে, আবার খরচাও হয়ে যায়। মাটিতে পা রাখাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।'
আরও পড়ুন- ভারতের কোচ হতে আবেদন ‘মোদি-শাহ, শচীন-ধোনির’! আসল সত্যিটা জানতেই চোখ কপালে বোর্ডের
সতীর্থরা যখন সব টাকার পিছনে ছুটছেন, তখন এমন অদ্ভূতুড়ে মানসিকতার কারণটা কী? সেই জবাব দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে রিংকু পুরো দর্শন আউড়ে দিলেন। কোন দর্শন? সেই অমৃতবাণী- 'এ পৃথিবীতে তুমি কী নিয়ে এসেছিলে, কী নিয়ে যাবে?' সাধক বা গুরুদেবদের মার্কা ভঙ্গিতে রিংকুর বচন, 'সত্যি কথা বললে বলতে হয়, এ সবই একটা মায়া। তুমি সঙ্গে করে কিছুই আনোনি। কিছু নিয়েও যাবে না। কখন সময় বদলাবে, তুমি জানো না। একসময় তোমাকে চলে যেতে হবে। তুমি যেভাবে এসেছ, সেভাবেই ফিরে যাবে, আর কী!'