মানুষকে নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর করে ছেড়েছে করোনা। অতিমারীর ছোবল ভুলিয়ে দিয়েছে ধনী-গরিবের বৈষম্য। আধপেটা খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিক ও গরিবরা। এরমধ্যেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ইরফান পাঠান। কঠিন সময়ে কীভাবে একে অন্যের পাশাপাশি দাঁড়াতে হয়, তা দেখিয়ে দিলেন তিনি।
আইপিএল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন খেলোয়াড় থেকে প্রশাসক কিংবা আইপিএলের উপর নির্ভর করে থাকা প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষ। সিএসকের চর্মশিল্পী আর ভাস্করনই যেমন বেজায় মুশকিলে পড়েছিলেন টুর্নামেন্ট স্থগিত হয়ে যাওয়ায়। সেই ভাস্করণকেই এবার ২৫ হাজার টাকা নগদ দিয়ে সাহায্য করলেন ইরফান পাঠান।
চেন্নাইয়ের ওয়ালাজা রোডে ভাস্করণ বসেন। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে। শেষ বারো বছর ধরে তিনিই সিএসকের অফিসিয়াল মুচি। যেদিন সিএসকের খেলা থাকে, সেদিন প্লেয়ার্স এবং ম্যাচ অফিসিয়ালদের এরিয়ার বাইরে ছোট ওয়ার্কস্টেশনে বসে কাজ করেন। তাকেই এবার অর্থসাহায্য করতে এগিয়ে এলেন পাঠান।
পাঠানের এই ভূমিকার প্রশংসা করে দীনেশ কার্তিক টুইটারে লেখেন, "দারুণ নজির গড়লে তুমি! প্রত্যেকের কাছ থেকে এই ছোট ছোট মহানুভবতার দৃষ্টান্ত এই কঠিন সময়ে বাঁচা আরো সহজ করে দেবে।" ইরফানের এমন কান্ড প্রথমে জানান রৌনক কাপুর। তার টুইটই শেয়ার করেন দীনেশ কার্তিক।
সংবাদপত্রের মাধ্যমে সিএসকের এই চর্মশিল্পীর কথা জানতে পারেন পাঠান। আইপিএল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে কীভাবে সমস্যায় পড়েছেন তিনি, সেই সম্পর্কে জানতে পারেন জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা পেসার। তারপরেই সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভাস্করণ দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "প্রত্যেক ম্যাচে আমি ১০০০ করে টাকা পেতাম। সিএসকে ক্রিকেটাররা আমাকে ভালোবাসেন। মরশুমের শেষে ক্রিকেটার ও কোচেরা টাকার তহবিল তুলে আমাকে দিত। গত বছর ধোনির দান বাদ দিয়ে ২৫০০০ টাকা পেয়েছিলাম।"
এরপরেই ইরফান পাঠানের কথা জানান তিনি। ভাস্করণ জানিয়েছেন, "গত মাসে ইরফান পাঠান আমাকে কিছু টাকা পাঠান। তারপরে পরিবারের জন্য কিছু খাবার কিনলাম। খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা পরিশোধ করতে হল। ক্রিকেট যদি দ্রুত শুরু না হয়, তাহলে কীকরে বাঁচব, জানি না। ক্রিকেট বন্ধ হলে, আমি শেষ!"