হাই প্রোফাইল কলকাতা ডার্বিতে পরিবর্ত ফুটবলার হিসাবে নেমেই ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছেন কিয়ান নাসিরি গিরি। সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসাবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে
হ্যাটট্রিক করার কীর্তি ছাড়াও প্রথমবার কলকাতা ডার্বিতে খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক, এমনটা কখনও দেখেনি ভারতীয় ফুটবল।
তারকা ফুটবলার জামসিদ নাসিরির একুশ বছরের ছেলে কিয়ান নানা বিষয় নিয়ে রবিবার কথা বললেন মিডিয়ার সঙ্গে।
আরও পড়ুন: ডার্বির গল্প শুনেই বেড়ে ওঠা কিয়ানের! ইতিহাস গড়ে এবার নায়ক কিংবদন্তি-পুত্র নিজেই
“ডার্বিতে নেমে হ্যাটট্রিক করেছি এটা এখনও আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। ভার্বিতে গোল করার স্বপ্ন সবারই থাকে। আমারও ছিল। তা সত্ত্বেও বলছি আমি মূলত উইঙ্গার ও স্ট্রাইকার, গোল করাটা আমার কাজ। সেটাই করেছি। ইতিহাস নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। আমার এখন একটাই লক্ষ্য আরও বেশি সময় মাঠে থাকা।"
"কোচের কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে,
তিনি ডার্বির মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আমার উপর ভরসা রেখেছেন। সেজন্যই আমি গোল করতে পেরেছি। আমাদের দল অত্যন্ত শক্তিশালী। এখানে আমার মতো জুনিয়র ফুটবলারের সুযোগ পাওয়া কঠিন। সেজন্যই আরও পরিশ্রম করে দলে জায়গা পেতে হবে। ডার্বিতে গোল করে খেমে থাকলে হবে না। পরের ম্যাচে সুযোগ পেলেই ভাল খেলতে হবে।”
আরও পড়ুন: ইরানি ঝড়ে তছনছ ডার্বি! সবুজ-মেরুন গালিচায় ফুল ফুটিয়ে হ্যাটট্রিক নাসিরি-পুত্রের
“তিনটি গোলের মধ্যে দ্বিতীয়টাই সেরা। কারণ ওই গোলেই আমরা এগিয়ে গিয়েছি। সবুজ মেরুন জার্সিতে জুনিয়র ডার্বিতে খেলেছি। কিন্তু সিনিয়র দলে প্রথম। হোটেল থেকে মাঠে আসার সময় কোনও লক্ষ্য নিয়ে আসিনি। ভেবেছিলাম এরকম একটা ম্যাচে আমি কি সুযোগ পাব? দল যখন পিছিয়ে তখন আমি নেমেছি। তবে আমার উপর কোনও চাপ ছিল না। গোল করব বলে ভেবে নামিনি। লক্ষ্য ছিল একটাই, তিন পয়েন্ট।”
“উৎসব হওয়ার মতো কিছু হয়নি। তাই সেরকম কেউ কিছু করিনি। ডার্বিতে জিতে অনেক রাতে হোটেলে ফিরে ডিনার করে সবার মতো আমিও শুয়ে পড়েছি। বাড়ির কারও সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। রবিবার মা ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে বাবার সঙ্গে কথা হয়নি।"
"বাবা মাঠে গিয়েছিলেন ট্রেনিং করাতে। আমার বাবার কোনও খেলা আমি দেখিনি। শুনেছি উনিও ডার্বিতে গোল করেছেন অনেক। বাবার সঙ্গে মাঠে প্র্যাকটিস করেছি। বাবা কখনও কোনও লক্ষ্য বেঁধে দেননি। উনি শুধু বলেন- পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।”
ম্যাচের আগে বা শিবিরে থাকার সময় ফুটবল নিয়ে বাবার সঙ্গে কখনও কথা বলিনা। কোচ হিসাবে আমি তিনজনের কথা বলতে চাই যাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ বর্তমান কোচ ফেরান্দো, আন্তোনিও লোপেজ হাবাস এবং ইয়ান ল। আমাদের ড্রেসিংরুমে সবাই আমাকে সবসময় বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করেন। উৎসাহিত করেন। সেজন্যই আমি এই হ্যাটট্রিক উৎসর্গ করতে চাই পুরো দলকে।”
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে নেই, এটাই লজ্জার! মাদ্রিদ বসেই রক্তাক্ত বোরহা
“শুনলাম কলকাতা ডার্বিতে আমি ছাড়া হ্যাটট্রিক করেছেন ভাইচুং ভুটিয়া ও এডে চিডি। ওঁরা দুজনেই তারকা ফুটবলার। ছোটবেলা থেকেই ওদের নাম শুনেছি। আমি তো একেবারেই
জুনিয়র। ওদের কাছে পৌঁছতে পারলে ভাবব কিছু করেছি। ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করা বড় জিনিস। কিন্তু এটা একটা তিন পয়েন্টের ম্যাচ ছিল সেটা মাথায় রাখছি। এখানে থেমে থাকলে তো চলবে না। আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে। সুযোগ পেলেই দলকে সাহায্য করতে হবে। গোল করা লক্ষ্য তো থাকবেই। আসল লক্ষ্য তিন পয়েন্ট।”
“আমার আইডল এবং স্বপ্নের ফুটবলার লিওনেল মেসি। মেসির খেলা সুযোগ পেলেই দেখি। আমার হ্যাটট্রিক দেখে আই এস এলের আমার মতো জুনিয়র ফুটবলাররা যদি উদ্বুদ্ধ হয় তা হলে ভাল লাগবে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন