অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন। তবে একরাশ ব্যর্থতা নিয়ে সরে দাঁড়াতে হল কয়েক ঘন্টা আগে 'প্রাক্তন' হয়ে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল কোচ হোসে ম্যানুয়েল দিয়াজকে। আর তারপরেই সরাসরি বিষ্ফোরণ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে সরাসরি স্প্যানিশ কোচ জানিয়ে দিলেন, পরিকাঠামোই নেই। এমন দল নিয়ে খেলতে নামাই উচিত নয়।
"এটা পুরোপুরি বিপর্যয়ের হয়ে থাকল। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে দুঃস্বপ্নের অভিজ্ঞতা এটা। আইএসএল খেলার মত পরিকাঠামোই নেই ইস্টবেঙ্গলের। এমন টুর্নামেন্টে নামার মত কি এই দল?" ক্ষোভ উগরে পাল্টা প্রশ্ন তাঁর। সেই সঙ্গে তাঁর আরও হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা, "হয়ত ভবিষ্যতে আবারও কোচিং করাতে আসব ভারতে। তবে প্ৰথম অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর হল না।" গনগনে আগুনের হালকা যেন বেরিয়ে আসছিল প্রতি শব্দে।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে শেষ দিয়াজ পর্ব! গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের দিনেই ক্লাবে চূড়ান্ত পরবর্তী কোচ
ক্লাব জানিয়ে দিয়েছে, দু-পক্ষের সম্মতিতে বিচ্ছেদ ঘটেছে। নতুন কোচ না আসা পর্যন্ত আপাতত দায়িত্বে থাকবেন রেনেডি সিং। ক্লাবের অন্দরে ঢুঁ মারলে জানা যাচ্ছে, প্ৰথম দিন থেকেই দল নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন দিয়াজ। ক্লাবকে একাধিকবার সেই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। ফুটবলারদের ফিটনেস লেবেল তো বটেই খেলার মান নিয়েই উষ্মা ছিল কোচের।
রবি ফাউলারের হাত থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পরে নিজের মত করে দল গঠনও করতে পারেননি তিনি। পছন্দের মাত্র দুজন বিদেশিকে তিনি ক্লাবে আনতে পেরেছিলেন। এক, পেরোসেভিচ, দুই, সিডোয়েল। বাকিদের নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি।
টুর্নামেন্ট শুরুর কয়েকদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ভারতে এসেই দলের খেলা দেখে তিনি নাকি আগাম বুঝে যান, বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। তা বুঝেই দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন আইএসএল শুরুর আগেই। তবে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলে মত বদল করেন তিনি। দিয়াজের স্ত্রী ভারতে কোচিংয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ না শুনে থাকতে পারেননি।
আট ম্যাচ। একটাও জয় নেই। বেশ কয়েকদিন আগেই দেওয়াল লিখন পড়তে পারছিলেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল কিছু ফুটবলারদের সঙ্গে মতান্তর। যা ক্রমেই ড্রেসিংরুমে বিদ্রোহের আকার নিচ্ছিল। ক্লাবের তরফেও ছাঁটাইয়ের বার্তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। এমন অবস্থায় হায়দরাবাদ ম্যাচ ছিল অ্যাসিড টেস্ট। সেই ম্যাচেও ১-১ ড্র করে ইস্টবেঙ্গল।
কোচ নিজে অনুশীলন করাতে চাইছিলেন না। শেষমেশ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়।
আরও জানা যাচ্ছে, আইএসএলের মাঝপথে ফেরান্দো মোহনবাগানে চলে আসার পরে এজেন্টের মাধ্যমে এফসি গোয়ার কোচিংয়ের প্রস্তাবও ছিল তাঁর কাছে। তবে ক্লাবের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দেন তিনি।
এত কিছুর পরেও শেষরক্ষা হল না। এটাই যা আক্ষেপের!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন