scorecardresearch

ডার্বিতে মনে হয় না ইস্টবেঙ্গল পারবে! মহাযুদ্ধের আগেই ভবিষ্যৎবাণী মানোলোর

শনিবারই ফিরতি লেগের ডার্বিতে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে মোহনবাগান। তার আগেই সজোরে বিস্ফোরণ ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ দিয়াজের।

ডার্বিতে মনে হয় না ইস্টবেঙ্গল পারবে! মহাযুদ্ধের আগেই ভবিষ্যৎবাণী মানোলোর

একরাশ স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছিলেন ভারতে। স্প্যানিয়ার্ডদের মহাস্রোতে ইস্টবেঙ্গলের সামনে রিয়াল মাদ্রিদের টেমপ্লেট ধরিয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্ববিখ্যাত যে ক্লাবের যুব পর্যায়ে এক দশকের কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা তাঁর। তবে ভারতীয় ফুটবলে অচিরেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। একটাও ম্যাচ না জেতার খেসারত দিয়ে অপমানজনক প্রস্থান ঘটেছে।

হোসে ম্যানুয়েল মানোলো দিয়াজ ফার্নান্দেজ তবু ডার্বি ম্যাচে নজর রাখবেন, শনিবার। দুপুর ৩টেয় মাদ্রিদে নিজের বাড়িতে টিভি অন করবেন না। তবে ফলাফল জানার জন্য ইন্টারনেট সার্চ করবেন-ই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে ডিসেম্বরেই প্রাক্তন হয়ে যাওয়া লাল হলুদ কোচ বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গলের সমস্ত ম্যাচের স্রেফ রেজাল্ট দেখছি। বাকি কিছু নয়!”

আরও পড়ুন: স্মৃতির কোষে কোষে বিদ্রোহ, প্রাণাধিক সুভাষ-বিদায়ের খবর এখনও জানেন না হাবিব

প্ৰথম পর্বের ডার্বিতে হাবাসের এটিকে মোহনবাগান স্রেফ তুর্কি নাচন নাচিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে শুরুর সেই সবুজ মেরুন এখন পাল্টে গিয়েছে বেমালুম। কোচ হাবাস চার ম্যাচ না জেতার খেসারত দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। কোচ হয়েছেন এফসি গোয়ার সিজার ফেরান্দো। সন্দেশ জিংঘান ফরর একবার যোগ দিয়েছেন। চোট সারিয়ে ফিরে এসেছেন তিরিও।

বদলের এই এটিকে মোহনবাগানের সামনে ফিরতি ডার্বিতে ফের একবার হার হজম করতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। নিজের প্রাক্তন হয়ে যাওয়া দলকে নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করতে গিয়ে গেটাফের একসময়ের ফরোয়ার্ড বলছিলেন, “দেখা যাক কী হয়! তবে পেশাদারিত্বে এটিকে মোহনবাগান অনেক এগিয়ে। মনে হয় না ইস্টবেঙ্গল জিততে পারবে!”

আরও পড়ুন: বস, তুমি আজীবন আমার হৃদয়েই থাকবে!

ক্ষোভে কার্যত ফুঁসতে ফুঁসতে লাল হলুদের মরশুম শুরুর স্প্যানিশ কোচ বলছিলেন, “আগেই বলেছি, ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলার যোগ্যতাই নেই। আসলে গোড়াতেই গলদ। টিম ম্যানেজমেন্টে যাঁদের দায়িত্ব রয়েছে সমস্যা সেখানেই। দল তো তাঁরাই বানিয়েছেন। যা খুশি দল তো তাঁরাই বানিয়েছেন। শুধু ফুটবলারদের দোষ দেওয়া উচিত নয়।”

কার কার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন দিয়াজ? কেপা, লুকাস ভাসকুয়েজ, দিয়েগো লোরেন্ত, ক্যাসেমিরো, ডেনিস চেরনিশভদের মত সুপারস্টারদের কোচিং করিয়ে আসা মহাগুরু বলে দিচ্ছেন, “এটা লজ্জার যে ইস্টবেঙ্গলের মত ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটা দলের দায়িত্বে রাখা হয়েছে শ্রেণিক শেঠ, তাঁর পুত্র এবং কর্নেলকে (শিবাজী সম্মাদ্দার)। ফুটবলাররাও তো ওঁদের চায় না। বহু ফুটবলার আমাকে ওঁদের বিষয়ে জানিয়েছেন। শ্রেণিক বাজে ম্যানেজার তো বটেই, পেশাদারিত্বের দিক থেকেও চূড়ান্ত খারাপ।”

আরও পড়ুন: ৭৫-এর মহাকাব্য থেকে খসল আবেগের পাতা! বন্ধুর বিদায়ে শোকস্তব্ধ সেই ম্যাচের সৈনিকরা

“বিনিয়োগকারী সংস্থার উচিত নয় এরকম খারাপ ম্যানেজারদের হাতে পুরো দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। শ্রী সিমেন্টের ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ আমূল বদলাতে হবে।”

একের এক এক বিষ্ফোরক অভিযোগ, আগুনের লাভাস্রোত যেন থামতেই চায় না হোয়াটসএপে! আদিল খানকে ম্যাচের পর ম্যাচে খেলাতেনই না। দিয়াজের কোচিং, পরিচালনাও কি প্রশ্নাতীত? তিনি এবারেও ফ্রন্টফুটে সপাটে যেন হুক করলেন। বলে দিলেন, “আমি একাদশে রাখার পরেও আদিল খান একটা ম্যাচে খেলতে চায়নি। এটা প্রবলভাবে পেশাদারিত্বের অভাব বলে মনে হয়েছে আমার। তাছাড়া স্কিলের দিক থেকেও ও ভীষণ নিচু মানের।”

আরও পড়ুন: ISL-এ খেলার পরিকাঠামোই নেই ইস্টবেঙ্গলের! বিদায়ের দিনেই ফুঁসে উঠলেন দিয়াজ

মানোলোর বিতর্কিত অধ্যায় শেষ হওয়ার পরে রেনেডির ছোটখাটো কোচিং চ্যাপ্টারও দেখে ফেলেছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্ৰথমবার দেশিদের নিয়েই প্ৰথম এগারো সাজিয়েছেন। চোয়ালচাপা সেই ফুটবল কুর্নিশ, সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছিল ফুটবল মহলের। কীভাবে সম্ভব? ৫৩ বছরের স্প্যানিয়ার্ড অভিমানের বাষ্প চেপে স্রেফ বলছেন, “ভালোই তো। সবকিছুই ভাল। আমার কোচিংয়েও তো সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। ম্যানেজাররাই তো দল গঠনে ভুল করেছেন।”

ইস্টবেঙ্গল কি তাহলে পুরোপুরি অতীত, আগামী দিনেও কি লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে পা পড়বে না ফ্লোরেন্টিনো পেরেজের বন্ধুর? মানোলোর জবাব, “বর্তমান ম্যানেজমেন্টের আমলে কোনওভাবেই ফিরব না। তবে অন্য ম্যানেজমেন্টের আমলে দল যদি যথেষ্ট সিরিয়াসনেসের সঙ্গে বানানো হয়। আইএসএলের লেভেলের পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নশিপের কথা ভেবে তৈরি হয় প্রোজেক্ট, তাহলে ভেবে দেখব।”

আরও পড়ুন: সুয়ারেজের দেশের সুপারস্টারকে চেয়েও পেল না ইস্টবেঙ্গল! বিদেশি নিয়ে অপেক্ষা বাড়ছে লাল হলুদে

কিছুটা থেমে তিনি আরও বলতে থাকেন, “আমি তো বর্তমান স্কোয়াডের কাউকেই সই করিনি। দল গঠনেও আমার কোনও হাত ছিল না। স্রেফ ড্যারেন সিডোয়েল আর পেরোসেভিচের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত যে ছয়জন বিদেশি নেওয়া হল, তাঁদের কারোর আইএসএল খেলার অভিজ্ঞতা নেই। দায়িত্ব নেওয়ার আগে রবি ফাউলারের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত ছিল।”

ইস্টবেঙ্গল নিয়ে চূড়ান্ত বীতশ্রদ্ধ। তবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের মান দেখে তিনি চমকে গিয়েছেন। বলছিলেন, “ভারত দারুণ একটা দেশ। আইএসএল-ও বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কম্পিটিশন। অন্য কোনও দল যদি সিরিয়াস প্রোজেক্ট নিয়ে হাজির হয়, তাহলে রাজি হব। শর্ত থাকবে একটাই- চ্যাম্পিয়নশিপের লক্ষ্য নিয়ে দল গড়তে হবে।”

আপাতত মাদ্রিদে নিজেকে নিজের মত গুছিয়ে নিচ্ছেন। “দেশে ফুটবলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছি। সেইসঙ্গে ট্রেনিংয়ে ফেরার জন্য নতুন প্রস্তাবের অপেক্ষায় রয়েছি।” ফোন রাখার আগে বলে যান তিনি।

Read the article in ENGLISH

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Sports news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Isl 2021 east bengal poor management derby atk mohun bagan manuel manolo diaz interview