শনিবার আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে মুখোমুখি হচ্ছে এটিকে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। করোনা থাবা বসায় একাধিক ম্যাচ স্থগিত হয়ে গিয়েছিল সবুজ মেরুন শিবিরে। তারপরে ওড়িশা এফসি ম্যাচে খেলতে নেমে মোহনবাগান ড্র করে। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই অন্যরকম। ফিরতি ডার্বি জিতে শেষ চারে পৌঁছতে মরিয়া হুয়ান ফেরান্দোর দল। স্প্যানিশ কোচ কড়া অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন হুগো বৌমাস, তিরি, প্রীতম কোটালদের।
শনিবাসরীয় ডার্বির আগে মিডিয়ার সামনে মুখ খুললেন সবুজ মেরুন শিবিরের তিন স্তম্ভ হুগো বৌমাস, শুভাশিস বোস এবং প্রীতম কোটালরা।
হুগো বৌমাস: "অন্যবারের থেকে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। ফুটবলের সঙ্গে অন্যদিকেও ফোকাস রাখতে হচ্ছে। অনেকদিন অনুশীলনের বাইরে থাকতে হয়েছে আমাদের। তাই সেই খামতি পূরণ করার জন্য নিজেদের জায়গায় ফিরতে হবে। ডার্বির গুরুত্ব সবসময়েই আলাদা। বাড়তি মোটিভেশন নিয়ে নামতে হয়। এই ম্যাচটা আমরা জিতব। আমরা পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী।"
আরও পড়ুন: ডার্বিতে মনে হয় না ইস্টবেঙ্গল পারবে! মহাযুদ্ধের আগেই ভবিষ্যৎবাণী মানোলোর
"এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে প্ৰথম পর্বে আমরা সহজ জয় পেয়েছি। এবং ওঁরা শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে চার গোল হজম করেছে বলে খাটো করে দেখার কোনও জায়গাই নেই। ওঁরা ফিরতি ডার্বিতে প্রতিশোধ নিতে মাঠে নামবে। আমাদের কাছে আলাদা ব্যাপার হল, শেষ চারে যেতে হলে বা চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে থাকার জন্য এই ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। স্থগিত হয়ে যাওয়া ম্যাচ গুলো থেকেও পূর্ণ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে হবে।"
"শেষ ম্যাচে আমরা জিততে পারিনি। তবে আমরা প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। গোলের অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এটা পজিটিভ দিক।"
প্রীতম কোটাল: আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল একবারও আমাদের হারাতে পারেনি। অপরাজেয় তকমা ধরে রাখাই এখন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। অনেকেই বলছেন, ওঁরা হায়দরাবাদের কাছে চার গোল হজম করায় আমরাই এগিয়ে। তবে ঘটনা মোটেই সেরকম নয়। বর্তমান স্কোয়াডের সবথেকে বেশি ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলতে পারি, ডার্বির কোনও আগাম ভবিষ্যৎবাণী হয় না। কেউ এগিয়েও থাকে না। আমরা শেষ দুই ম্যাচে ড্র করলেও ডার্বি জেতার বিষয়ে অবশ্য বেশ আশাবাদী। রক্ষণ যদি আঁটোসাঁটো রেখে যদি গোল হজম না করতে পারি, তাহলে গোল আমরা পাবই।"
আরও পড়ুন: স্মৃতির কোষে কোষে বিদ্রোহ, প্রাণাধিক সুভাষ-বিদায়ের খবর এখনও জানেন না হাবিব
"ডার্বি বরাবর স্পেশ্যাল। বিশেষ করে আমাদের মত বাঙালিদের কাছে। সদস্য-সমর্থকদের কাছে এই ম্যাচের গুরুত্বই আলাদা। লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েও যদি ডার্বি না জিততে পারি, তাহলে বরং পাড়ায় বক্রোক্তি শুনতে হয়, 'যতই চ্যাম্পিয়ন হও ডার্বি তো জিততে পারেনি।' সেই আবেগ থেকেই এই ম্যাচ জেতাতে জরুরি। নতুন কোচের দর্শন আলাদা। সেটা মাঠে পুরোপুরি প্রয়োগ করতে একটু সময় লাগছে। তবে শেষ ম্যাচেও আমাদের দল যথেষ্ট ভাল খেলেছে।"
আরও পড়ুন: বস, তুমি আজীবন আমার হৃদয়েই থাকবে!
শুভাশিস বোস: "আমাদের কাছে ডার্বির গুরুত্বই অন্যরকম। এই ম্যাচে বরাবর অন্য আবেগ কাজ করে। লিগ টেবিলের যা পরিস্থিতি তাতে এই ম্যাচ জিতলে আমরা শেষ চারে পৌঁছে যাব। আবেগের সঙ্গে তাই লিগ টেবিলের হিসাবও মাথায় রাখতে হচ্ছে। অন্যদের তুলনায় আমরা কম ম্যাচ খেলেছি, সেটা আমাদের এডভান্টেজ। সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে।"
"হায়দরাবাদ এফসির কাছে ইস্টবেঙ্গল চার গোল হজম করেছে বলে, ওদের হালকাভাবে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। সামান্য কিছু ভুলে আগের ম্যাচে ওঁরা গোল হজম করেছে। ইস্টবেঙ্গল-হায়দরাবাদ ম্যাচ আমরা হোটেলে বসেই দেখেছি। সেই জন্যই বলছি, লড়াইটা বেশ কঠিনই হবে। সবথেকে বড় বিষয় আইএসএলে যে কোনও ফল অন্য দলকে হারানোর সামর্থ্য রাখে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গাই নেই।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন