শনিবার শহর কলকাতায় সবথেকে ব্যস্ততম কে ছিলেন? কোনও কুইজের প্রশ্ন নয়, আন্দাজ থেকেই বলা যায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জামশিদ নাসিরি। সুদূর গোয়ার ডার্বিতে ছেলের রূপকথার হ্যাটট্রিকে কুপোকাত নিজের প্রিয় ইস্টবেঙ্গল দল। আর তারপর গভীর রাত থেকে নাগারে ফোন বেজে গিয়েছে আশির দশকের কিংবদন্তির। কখনও কর্মকর্তা ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, কখনও আবার সাংবাদিকরা বারবার ডায়াল করেছেন জামশেদ নাসিরিকে।
শনিবার বারবার এনগেজড টোন আসা জামশিদের ফোন অবশেষে পাওয়া গেল রবিবার সকালবেলা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে ফোনে নিজের মনের, স্মৃতির ঝাঁপি উজাড় করে দিলেন-
"ওর কোয়ালিটি নিয়ে আমার কোনওদিনই সন্দেহ ছিল না। তবে ডার্বিতে নেমেই হ্যাটট্রিক সারপ্রাইজিং। মোহনবাগান হোক বা ইস্টবেঙ্গল, যে দলেই খেলুক না কেন, গোল করাটাই ওঁর কর্তব্য। এরকম বড় ক্লাবে খেললে প্রত্যাশার চাপ থাকবেই। এই প্রত্যাশা সম্পর্কে ও ভালভাবেই অবহিত। ও জানে সুযোগ পেলেই পারফর্ম করতে হবে।"
আরও পড়ুন: মেসিই অনুপ্রেরণা, বলছেন ডার্বি রূপকথার হ্যাটট্রিক নায়ক কিয়ান নাসিরি
"পরিবারের সদস্য যে দলে খেলবে সেই দলকেই সমর্থন। তবে ইস্টবেঙ্গল না মোহনবাগানকে ডার্বিতে সাপোর্ট, সেরকমভাবে বিষয়টা দেখছি না। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কোনও দলকে সমর্থন করার মত জায়গায় নেই। যে দলই ভাল খেলবে, তাদের প্রতিই আমার সমর্থন থাকবে।"
"আমাদের সময় অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ডার্বিতে নামতে হত। সমর্থকদের কাছে চাহিদা থাকত তুঙ্গে। ম্যাচে একটা সুযোগে একটাই কাজে লাগাতে হত। ডার্বিতে কোনও দল যদি ৪-৫ টা সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারে, তাহলে এরকম বড় ক্লাবে খেলার কোনও যুক্তিই নেই। ইস্টবেঙ্গল অনেক সুযোগ পেয়েছে। গোল করতে পারেনি।"
আরও পড়ুন: ডার্বির গল্প শুনেই বেড়ে ওঠা কিয়ানের! ইতিহাস গড়ে এবার নায়ক কিংবদন্তি-পুত্র নিজেই
"কিয়ান এরকম ডার্বি ম্যাচের গুরুত্ব ভালভাবেই জানে। কিয়ান যখন বাচ্চা ছিল, তখন ক্লাবের কর্মকর্তারা দেখা হলে ওঁকে আমার কথা, ক্লাবের কথা বলতেন। তখনই ও বুঝতে পারত বড় ম্যাচের গুরুত্ব কতটা।"
"ম্যাচের আগে অথবা পরে কিয়ানকে কখনও ফোন করিনা। ফোন করে মানসিকভাবে ওঁকে ব্যস্ত রাখতে চাই না।"
আরও পড়ুন: ইরানি ঝড়ে তছনছ ডার্বি! সবুজ-মেরুন গালিচায় ফুল ফুটিয়ে হ্যাটট্রিক নাসিরি-পুত্রের
"৭-৮ বছর বয়সে ওঁকে কোচিং করাতাম। বাংলার অনুর্দ্ধ-১৩ পর্যায়ে ক্যাপ্টেন ছিল একটা সময়ে। দুঃখীরাম সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তারপরে সাদার্ন স্পোর্টস লেক গার্ডেন্সের কোচিং ক্যাম্পে ছিল। মোহনবাগানের যুব দলে তারপর যোগ দেয়। সেখান থেকে জি বাংলার ফুটবল টুর্নামেন্টে ভাল পারফর্ম ফের মোহনবাগানে কামব্যাক করে।"
আরও পড়ুন: ডার্বিতে মনে হয় না ইস্টবেঙ্গল পারবে! মহাযুদ্ধের আগেই ভবিষ্যৎবাণী মানোলোর
"ওঁকে বলেছি, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানে খেলাই রাস্তার শেষ নয়। টার্গেট সবসময় থাকবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার। আর ভবিষ্যতে ভারত-ইরান ম্যাচ হলে, পুত্র কিয়ানের জন্য ভারতকেই সাপোর্ট করব। আমরা এখন ইন্ডিয়ান। আমিও ভারতীয় হয়ে গিয়েছি বহুদিন।"
"কিয়ান বিরিয়ানি-কাবাব খেতে পছন্দ করে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন