ডার্বির নায়ক মাত্র ২১ বছর বয়সেই। গোয়ায় মান্ডবির তীরে স্কিলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যিনি ডার্বির ইতিহাসে নতুন তারা হিসাবে আবির্ভূত হলেন তাঁর শরীরে বইছে ইরানি রক্ত। অথচ জন্ম-পরিচয় ভারতীয় হিসাবে।
কিংবদন্তি জামশেদ নাসিরির পুত্র কিয়ান নাসিরি নিজের আগমন ঘোষণা করলেন একদম বড় মঞ্চে। রয় কৃষ্ণ, লিস্টন কোলাসো, ডেভিড উইলিয়ামস থেকে মার্সেলো, পেরোসেভিচ- দুই দলের সমস্ত বিদেশিদের ছাপিয়ে নায়ক পরিবর্ত হিসাবে দ্বিতীয়ার্ধে নামা কিয়ান।
সংযোজিত সময়ে জামশেদ-পুত্রের জোড়া গোল সমেত সমতাসূচক গোল, কিয়ান-ময় হয়ে থাকল শনিবাসরীয় ডার্বি। ডার্বির ইতিহাসে চতুর্থতম তারকা হিসাবে হ্যাটট্রিককারীদের তালিকায় নাম তুললেন কিয়ান। আইএসএলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠতম হ্যাটট্রিককারী তো বটেই, এটিকে মোহনবাগানের হয়েও সবথেকে কমবয়সী গোলস্কোরার তিনি। তাছাড়া পরিবর্ত হিসাবে নেমে ডার্বিতে হ্যাটট্রিককারী, এরকম নজিরই বা ক'জনের আছে!
আরও পড়ুন: ইরানি ঝড়ে তছনছ ডার্বি! সবুজ-মেরুন গালিচায় ফুল ফুটিয়ে হ্যাটট্রিক নাসিরি-পুত্রের
আর নজিরবিহীনভাবে কিয়ান চুরমার করে দিলেন পিতা জামশেদের সঙ্গে যে ক্লাবের গর্বের সম্পর্ক, তাদেরই। আশির দশকে নস্ট্যালজিয়ার মাঝদরিয়া ছুঁয়ে বসে থাকা বাঙালি ফুটবল প্রেমীদের হৃদয়ে অমলিন হয়ে রয়েছেন জামশেদ নাসিরি-মজিদ বিষকর নামের দুই মহাতারকা।
বন্ধু মাজিদ ট্র্যাজেডিকে সঙ্গী করে ইরানে ফিরে গেলেও জামশেদ বাসা বেঁধেছেন ভারতে। রয়ে গিয়েছেন একজন ভারতীয় হয়ে। পুত্র কিয়ানের জন্ম ভারতেই। পিতা ইরানি হলেও কিয়ান ভারতীয়। বেড়ে উঠেছেন ডার্বির মোহময় গল্প শুনে।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ-কে দেওয়া এক ইন্টারভিউয়ে কিয়ান জানিয়েছিলেন, "বাবা ডার্বিতে নামার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। শুনেছি এই ম্যাচের কত আকর্ষণ, কতটা উত্তেজনাপূর্ণ হয়! সেরকম কোনও ম্যাচ চাক্ষুস করতে পারিনি। তবে বাবা, বাবার বন্ধুদের থেকে শুনেছি সেই সমস্ত গল্প, ইতিহাস। সেই সময়ের ফুটবল বিস্ময় জাগাত।"
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে নেই, এটাই লজ্জার! মাদ্রিদ বসেই রক্তাক্ত বোরহা
১৬ বছর বয়সে কিয়ানের মাঠে আবির্ভাব জুনিয়র আইলিগে মহামেডানের জার্সিতে। তারপরে মহামেডানের হয়েই সিনিয়র দলে জায়গা করে নেন।
এরপরে মোহনবাগানের যুব দলে নাম লেখান। ২০১৯/২০ আইলিগের স্কোয়াডে ছিলেন সবুজ মেরুন জার্সিতে। তিনিই অবশেষে কুঁড়ি ফুটে ফুল হয়ে ফুটলেন একদম সর্বোচ্চ মঞ্চে, চোখধাঁধানো ইতিহাস গড়ে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন