এটিকে মোহনবাগান: ৩ (রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস, জাভি হার্নান্দেজ)
ইস্টবেঙ্গল: ১ (তিরি-আত্মঘাতী)
কৃষ্ণলীলা! সেই লীলায় ফতরদা স্টেডিয়ামে ধ্বংস হয়ে গেল এসসি ইস্টবেঙ্গল। গোল করলেন। জোড়া গোল করালেন। গোয়ার মাঠে জোড়া ডার্বি জয়ের নায়ক হয়ে থাকলেন রয় কৃষ্ণ। এসসি ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরো মজবুত করল এটিকেএমবি। মুম্বই সিটি এফসির থেকে পয়েন্ট তালিকায় পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে থাকল হাবাসের ছেলেরা।
একদিকে, লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দল। অন্যদিকে, নবম স্থানের ইস্টবেঙ্গল। তবে ডার্বি বলেই ফেভারিট কেউ ছিল না। ম্যাচের স্কোরলাইন যতই একপেশে লাগুক না কেন, তা মোটেই হল না। ইস্টবেঙ্গল এদিন রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুড়ল হাবাসের ছেলেদের।
তবে ম্যাচের বস যে হাবাস তা আরো একবার প্রমাণ কবলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস।
ম্যাচে এদিন হাবাসের স্ট্র্যাটেজি ছিল লং বলে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ চূর্ণ করা। মাঝমাঠে ইস্টবেঙ্গলের একাধিক ফাঁকফোকর তৈরি হচ্ছিল। সেই স্পেসের পূর্ণ ফায়দা তুললেন কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসরা।
ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে অনেকটা এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। বারবার প্রতিপক্ষ অর্ধে আক্রমণ শানাতে থাকে মেরিনার্সরা। ১৫ মিনিটে লং বল থিওরিতেই গোল।
রক্ষণ থেকে তিরি উঁচু বলে একদম মাপা পাস বাড়িয়েছিলেন কৃষ্ণকে লক্ষ্য করে। পিলকিংটন, ফক্সরা ধরতেই পারলেন না কৃষ্ণকে। জোড়া ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে গোলকিপার সুব্রতকে পরাস্ত করে প্রথম গোল করে যান কৃষ্ণ।
এরপর ছোট ছোট পাসে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। তবে ইস্টবেঙ্গল টানা বলের দখল ধরে রাখতে পারছিলেন না। এটাকিং থার্ডে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলছিলেন মাঘোমা, ব্রাইটরা।
তবে এটিকেএমবিকে চাপে রাখছিল রাজুর থ্রো ইন। বারবার মাঝমাঠ থেকে রাজুর লম্বা থ্রো আছড়ে পড়ছিল ইস্টবেঙ্গল বক্সে। এরকম এক রাজুর দুরন্ত থ্রোয়েই ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে এনেছিল ইস্টবেঙ্গল। লম্বা থ্রো ক্লিয়ার করতে গিয়ে তিরি নিজেদের জালেই জড়িয়ে দিয়েছিলেন। বিরতির আগেই সমতা ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন স্ট্যান্ডে বসে থাকা ফাউলারও।
ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ অনেকটাই ছিল ব্রাইট নির্ভর। ব্রাইটের পায়ে বল পড়লেই জেগে উঠছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে ব্রাইটের রিসিভিং, ড্রিবলিংয়ের স্কিল মনমাতানো হলেও ফিনিশিংটাই এদিন করতে পারলেন না তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭২ মিনিটে ফক্স এবং পিলকিংটনের ভুল বোঝাবুঝি ধরে গোল করে যান ডেভিড উইলিয়ামস। রয় কৃষ্ণ বল কেড়ে নিয়েছিলেন বক্সের মধ্যেই। সেখান থেকেই তিনি মাপা পাস বাড়ান ডেভিড উইলিয়ামসকে লক্ষ্য করে। অজি স্ট্রাইকার ২-১ করতে ভুল করেননি।
৮৯ মিনিটের গোলেও সেই রয় কৃষ্ণ! ডান প্রান্তিক আক্রমণ শানিয়েছিলেন ফিজির স্ট্রাইকার। তারপর মার্সেলিনহোর পরিবর্তে নামা জাভি হার্নান্দেজকে দিয়ে গোল করিয়ে স্কোর ৩-১ করে যান।
আগামীকালই জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে খেলতে নামছে মুম্বই সিটি এফসি। ১৮ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট পেয়ে আপাতত শীর্ষে এটিকেএমবি। ১ ম্যাচ কম খেলে পাঁচ পয়েন্টে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মুম্বই।
আরো পড়ুন: কোচ রবি ফাউলারকে চিনি না! ডার্বির আগে বিস্ফোরক বাগানের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান
ইস্টবেঙ্গল: সুব্রত পাল, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, নারায়ণ দাস, ড্যানি ফক্স, রাজু গায়কোয়াড, সার্থক গলুই, সৌরভ দাস, ম্যাটি স্টেইনম্যান, পিকলিংটন, জ্যাকুয়েস মাঘোমা, ব্রাইট এনখোবারে
এটিকে মোহনবাগান:
অরিন্দম ভট্টাচার্য, প্রীতম কোটাল, তিরি, সন্দেশ জিংঘান, মনবীর সিং, লেনি রদ্রিগেজ, কার্ল ম্যাকহিউ, শুভাশিস বোস, মার্সেলিনহো, ডেভিড উইলিয়ামস, রয় কৃষ্ণ
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন