সেই পুরোনো চিত্র। চেনা এটিকে মোহনবাগান। ডুরান্ড হোক বা এএফসিতে যে চিত্র দেখা গিয়েছে, আইএসএল-এও সেই ছবির প্রত্যাবর্তন ঘটল। একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি। এবং তাঁর সদ্ব্যবহার না করতে পারা।
মনবীর সিং ডেডলক ভেঙে শুরুতেই বাগানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে কারিকারি এবং পরে রহিম আলির গোলে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করল এটিকে মোহনবাগান। আর বিশাল কাইথের ফাউল এবং তারপর চেন্নাইয়িনের পেনাল্টি পাওয়াকেই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলছেন বাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো।
আরও পড়ুন: বাঙালি ফুটবলাররা বেশ ভদ্র! বঙ্গ তারকাদের দিয়েই বাগান-বধের হুঙ্কার চেন্নাইয়িনের জার্মান কোচের
ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সবুজ মেরুন বস বলে গেলেন, "পেনাল্টির পরে ম্যাচের গতিটাই বদলে যায়। প্লেয়াররা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ে, আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলেছিল। খেলার স্টাইল বদলানো প্রয়োজন ছিল। পরিস্থিতি মোটেই ভাল ছিল না। তবে মানসিকতায় এরপরে একশো শতাংশ বদল ঘটবে, একথা বলতে পারি।"
"প্লেয়াররা গোল হজম করার পরেই মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলেছিল। তারপরেই মিসপাস, সুযোগ নষ্টের ঘটনা ঘটতে থাকে। এমন অবস্থায় ওঁদের স্রেফ বলতে হত, সবকিছু ঠিকঠাক রয়েছে। এটাই ফুটবল। এমনটা ঘটেই থাকে। তবে এমন পরিস্থিতি থেকে সমাধানের বের করাটা জরুরি। পরিস্থিতি বদলানো মোটেই কঠিন নয়। কারণ আমরা মার্কিংয়ে, সুযোগ তৈরি করা, স্পেস বানানোর ক্ষেত্রে উন্নতি করতে পারি।"
আরও পড়ুন: জাপানি কোচ প্ৰথমবার ভারতীয় ফুটবলে! বড় দায়িত্ব নিয়ে এদেশে আসছেন নাকামুরা
দুই উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়ান এবং আশিস রাই প্ৰথম ম্যাচেই অপ্রতিরোধ্য। একের পর এক ক্রস তুললেন বক্সে। তবে ম্যাচের শেষে সেই হতাশা। তিনি বলে দিলেন, "আমরা সুযোগ তৈরি করেও সদ্ব্যবহার করতে পারছি না। এই সমস্যা বারবার হচ্ছে। ৫-৬ টা গোলের সুযোগ তৈরি করলে অন্তত তিনটে কাজে লাগাতেই হবে। এই ম্যাচেও সেই কাজ করতে আমরা সমস্যায় পড়েছি। এটা একদম বস্তব ব্যাপার। আমরা সুযোগ তৈরি করেছি, ফিনিশ করেছি, স্পেস বানিয়ে নিয়েছি। তবে প্রতিপক্ষ পেনাল্টি আদায় করে নিয়ে গোল করে গিয়েছে।"
বারবার একই ঘটনা ঘটতে থাকায় স্প্যানিশ কোচের প্ল্যান ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছেন না বাগান ফুটবলাররা, এমন দাবি উঠে গিয়েছে। তবে সবকিছুর পরেও ফেরান্দো ফুটবলারদের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন, "আমার প্ল্যান ফলো করলে প্লেয়ারদের সুযোগ মিসের ঘটনা ঘটত না, এমন দাবি ঠিক নয়। ফুটবলারদের নিয়ে এমন প্রশ্ন, হারের জন্য দায়ী করা যথার্থ না। ফুটবলারদের প্রতি ভরসা রয়েছে আমার। ওঁদের বিশ্বাস করি। আমার কাজ হল ওঁদের পাশে দাঁড়িয়ে দলের জন্য সমাধান বের করা।"
"প্লেয়াররা আমার প্ল্যান ফল করছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলি ওঁরা পেশাদার। ৬-৭ মাস ধরে আমরা এই ভাবেই কাজ করে গিয়েছি। প্রত্যেক সপ্তাহে আমাদের মিটিং হয়। প্রত্যেক ম্যাচ তো বটেই প্রত্যেকটা অনুশীলনেই ওঁরা নিজেদের সেরাটা দেয়।"
ম্যাচের পর প্রচন্ড হতাশ মনবীর, লিস্টনরা। সেকথাও স্বীকার করে নিয়েছেন বাগানের বস। খোলামেলা সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, "ম্যাচের পরে ওঁদের চোখ-মুখ দেখলেই বোঝা যাবে ওঁরা মোটেই খুশি নয়, প্রচন্ড হতাশ। আমি যতটা প্রকাশ করতে পারব, তার থেকেও বেশি হতাশ ওঁরা। প্ল্যান নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। পিচে আমরা সেভাবে মেলে ধরতে পারছি না, এটা চিন্তার। এছাড়াও মানসিকতার সমস্যা রয়েছে।"