একবার নয়, দু-বার নয়। টানা আটটা ডার্বি হারতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। শনিবারের যুবভারতীতেও লজ্জার হারে মুখ পুড়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেডের। বারবার এই ডার্বি হার এবার নড়িয়ে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের একসময়ের সৈনিক উগা ওপারাকেও। আবিয়া থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে গজগজ করতে করতে লাল-হলুদের জার্সিতে মিথ হয়ে যাওয়া নাইজেরিয়ান বলেই দিলেন, "ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ টিভিতে দেখছি নিয়মিত। ওঁরা মোটেই ইস্টবেঙ্গলের জার্সি চাপানোর যোগ্য নয়। বিদেশি হোক বা দেশি- মোটেই পাতে দেওয়ার মত নয়। আমি ডার্বি দেখলাম বাড়িতে নিজের ফোনে। খুব হতাশ।"
কত বড় ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে খেলেছেন। রক্ষণে উগাকে টপকে গোল করা ছিল ভারতীয় ফুটবলে একসময় দুরূহতম চ্যালেঞ্জ। লাল-হলুদের বর্তমান পারফরম্যান্স আক্ষেপে ভাসিয়ে দিচ্ছে উগাকে। দৈত্যাকার নাইজেরীয় জানাচ্ছেন, "আমাদের সময় আমরা ডার্বিতে ফেভারিট ছিলাম। এখন মোহনবাগান ডার্বিতে খেলতে নামে এগিয়ে থেকে। আমরা দর্শকদের আনন্দ দিতাম। মেহতাব, নবি, নওবা, সঞ্জুদের সঙ্গে আমরা কলকাতা তো বটেই ভারতীয় ফুটবল, ডার্বিতে মোহনবাগান ম্যাচে শাসন করতাম। এখন পুরো ব্যাপারটা পাল্টে গিয়েছে। এখন দাপট দেখাচ্ছে মোহনবাগান।"
আরও পড়ুন: কালান্তক ডার্বি কেড়ে নিয়েছে হৃদয়ের মানুষকেই! ইস্টবেঙ্গল থেকে মুখ ফেরালেন বাগুইহাটির বীরাঙ্গনা
ডার্বির ইতিহাস বলে কোনও দলই ফেভারিট থাকে না। যে কোনও দল ম্যাচ জিতে যেতে পারে। তবে ডার্বির সেই সাসপেন্স যেন অনেকটাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ইস্টবেঙ্গল যেন স্রেফ অংশগ্রহণ করতেই মাঠে নামে। এই বিষয়টিই দুঃখ দিচ্ছে উগাকে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সেরার সেরা সেন্ট্রাল ব্যাক জানাচ্ছেন, "ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে, মোহনবাগান কর্তারা স্পনসর, অর্থ সংগ্রহ করার বিষয়ে বরাবর ইস্টবেঙ্গলকে টেক্কা দিয়েছে। শুনছি ইস্টবেঙ্গলের এখনও অর্থ সমস্যা প্রবল। যা ভালো ফুটবলার রিক্রুট করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আশাবাদী দল কামব্যাক করবে।"
আরও পড়ুন: বাতিল দেশিদের নিয়ে খেলতে হচ্ছে! ডার্বি হেরে ফের অজুহাতের বন্যায় ভাসিয়ে দিলেন কনস্টানটাইন
ফুটবলারদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোচ কনস্টানটাইনও দেশীয় ফুটবলারদের মান নিয়ে বারবার আক্ষেপ করে চলেছেন। অতীতে ডার্বিতে লজ্জাজনক হার হজম করে প্রত্যাবর্তনের নজির রয়েছে ভুরি ভুরি। ২০০৯-এ মোহনবাগানের কাছে ৩-৫ হেরে চাকরি গিয়েছিল কোচ সুভাষ ভৌমিকের। কোচ বদলের পর ফিলিপ ডি রাইডারের ইস্টবেঙ্গল ফেডারেশন কাপে গুয়াহাটিতে গিয়ে চমকে দেয়। ডার্বিতে ৫ গোল হজম করা অভ্র মন্ডল তেকাঠির নীচে দুর্ভেদ্য হয়ে উঠেছিলেন।
আরও পড়ুন: বয়কটের ‘ডার্বি’তে ৮-এ ৮! বাগানের টোটাল ফুটবলে যুবভারতীর রং সবুজ-মেরুন
এখন সেই ইস্টবেঙ্গল যেন অতীতের ছায়ামাত্র। কোচ কনস্টানটাইন যদিও বলছেন, আগামী দিনে খেলা দেখাবেন। তবে উগা সাফ জানাচ্ছেন, "মর্গ্যান ইজ দি বেস্ট। মর্গ্যান ফুটবলারদের থেকে সেরাটা বের করে আনতেন। ওঁর কোনও তুলনাই হয় না।"