ইস্টবেঙ্গল: ২ (ক্লেইটন সিলভা-২)
হায়দরাবাদ এফসি: ১ (হিতেশ শর্মা)
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ লগ্নে চাপের ওপর চাপ বাড়ছিল। হায়দরাবাদ ছিঁড়ে খেয়ে নিচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে। ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয়বার ড্র করার দিকেই এগোচ্ছিল লাল-হলুদ শিবির। সেই সময়েই যুবভারতীতে সাম্বা ম্যাজিক। ক্লেইটন মোমেন্ট ঝলসে দিল সবুজ ঘাস।
সংযোজিত সময়ে বক্সের একটু ওপরে হালকা ফ্রিকিক পেয়েছিল। সেখান থেকেই ব্রাজিলিয়ান তারকার আইএসএল-এর ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোল। যে গোলে ইস্টবেঙ্গল আইএসএল-এ প্ৰথমবারের মত হায়দারবাদ এফসিকে হারাল। ২-১ গোলে জিতে কুয়াদ্রাতের জমানায় ইস্টবেঙ্গল আইএসএল-এর প্রথম জয় পেল সমর্থক বোঝাই যুবভারতীতে।
দলের প্রি-সিজনে ছিলেন না। ডুরান্ড কাপ চলার সময় কলকাতায় এসেছিলেন। জামশেদপুরের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ড্র করেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচের শেষে কোচ কুয়াদ্রাতের কাছে প্রশ্ন এসেছিল ক্লেইটনকে কেন তিনি প্ৰথম একাদশে রাখেননি। স্প্যানিশ বসের জবাব ছিল, এখনও পুরোপুরি ম্যাচ-ফিট নন ব্রাজিলীয়। ধীরে ধীরে গেম টাইম বাড়ানো হবে।
তবে হায়দারবাদের বিপক্ষেই যে দলের একনম্বর অস্ত্রকে শুরু থেকে নামিয়ে দেবেন, ভাবা যায়নি। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে প্রথম একাদশে রেখেই দল গড়েন কুয়াদ্রাত। তবে শুরুটা একদমই ভাল হয়নি। ৮ মিনিটেই গোল হজম করে বসেছিল ইস্টবেঙ্গল।
খাবরাদের দুর্বল কমিউনিকেশনের সুযোগ নিয়ে পেনানেন কাট করে ভিতরে ঢুকে শট নিয়েছিলেন। সেই শট প্রতিহত হয়ে বক্সের মধ্যে হিতেশ শর্মার কাছে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে গোল করতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি তিনি।
তবে প্রথম গোল হজম করার দু-মিনিটের মধ্যেই সমতা ফিরিয়ে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এবারেও খলনায়ক দুর্বল ডিফেন্ডিং। বোরহা আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নিম দরজি ট্যাকল করলেও বোরহাকে রুখতে পারেননি। সেই বল চলে যায় ক্লেইটনের কাছে। সেখান থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে ১-১ করে যান তিনি।
ক্লেইটনের গোল ধরেই ম্যাচে ফেরে ইস্টবেঙ্গল। নিয়মিত আক্রমণ শানাতে থাকেন ইস্টবেঙ্গল। তবে হায়দরাবাদ তেকাঠির তলায় অতন্দ্র প্রহরী হয়ে উঠেছিলেন গোলকিপার কাট্টিমানি। ক্লেইটনের সঙ্গে সংঘর্ষে বিরতির আগেই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। পরিবর্তে নামেন অনুজ কুমার।
বিরতির পর ইস্টবেঙ্গল প্রতি আক্রমণ ভিত্তিক স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিল। ৭৯ মিনিটে বিতর্কিত মুহূর্তের অবতারণা ঘটে। বক্সের ঠিক বাইরে আরণকে ফাউল করেন খাবরা। প্ৰথমে দেখে মনে হয়েছিল হয়ত লাল কার্ড দেখানো হবে ইস্টবেঙ্গলের বর্ষীয়ান তারকাকে। তবে রেফারি খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
খেলা শেষের দিকে শারীরিক হয়ে দাঁড়ায়। জোয়াও ভিক্টরের সঙ্গে কখনও খাবরা, কখনও নন্দকুমারের লেগে গেল। শেষদিকে প্রভসুখন গিল হায়দরাবাদের দুটো নিশ্চিত গোল বাঁচান। অন্যদিকে, আইএসএল প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে দুর্ধর্ষ কিপিং করে যাচ্ছিলেন অনুজ কুমার।
গোলের জন্য মরিয়া হয়ে চাপ বাড়াচ্ছিল জামশেদপুর। তবে হঠাৎই ক্লেইটন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন অসাধারণ গোল করে। বক্সের ঠিক ওপরেই বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। সেখান থেকেই ইনসুইংয়ে বিশ্বমানের ফ্রিকিকে ইস্টবেঙ্গলকে ২-১-এ এগিয়ে দেন ক্লেইটন।