/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/03/atk-mohun-bagan.jpg)
সাত-সাতটা বছর হয়ে গেল। এখনও স্মৃতিতে অম্লান ভারত জয়ের সেই কাহিনী। রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার দেখেছিল কোচির জওহরলাল স্টেডিয়াম। সেই ম্যাচেই আইএসএল ইতিহাসে পাকাপাকিভাবে ঢুকে পড়েছিলেন হেনরিক সেরেনো। টানটান রোমাঞ্চকর ফাইনালে কেরালার কাছে এটিকে পিছিয়ে পড়ে মহম্মদ রফির গোলে।
পিছিয়ে পড়ার ঠিক ছয় মিনিট পরেই এটিকের হয়ে সমতা ফিরিয়ে যান হেনরিক সেরেনো। তারপরে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে এবং সেখান থেকে দেবজিত মজুমদারের গ্লাভসে ভর করে এটিকের দ্বিতীয়বার আইএসএল জয়।
আবারও সেই মহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। এবার অবশ্য কেরালা নয়, মান্ডবীর তীরে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে এটিকে মোহনবাগানকে পেরোতে হবে বেঙ্গালুরু এফসির বাধা। শনিবারের মেগা-ম্যাচের জন্য এখন থেকেই বুকে হাত রাখছেন সেই সোরেনো। এটিকেকে চ্যাম্পিয়ন করার নায়ক। বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সেরেনো বলে দিলেন, "দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হয়েছিল সেবার। কেরালা ম্যাচ আমাদের নিংড়ে নিয়েছিল।"
ইউরোপে একের পর এক নামি ক্লাবে খেলেছেন। নিজের দেশ পর্তুগালের লিগে ভিটোরিয়া গুইমারেস, পোরতোর মত ক্লাবে যেমন খেলেছেন, তেমন লা লিগায় ভালোদালিদ, আলমেইরা, বুন্দেশলিগায় মেইঞ্জ, এফসি কোলন-এর মত ক্লাবের জার্সি গায়ে চড়িয়েছেন। জাতীয় দলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সতীর্থ হয়েছেন।
তবে কেরিয়ারের সবথেকে রংচংয়ে অধ্যায় বোধহয় আতলেতিকো দে কলকাতা-র জার্সিতেই। এখন পর্তুগালের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব ভিলাফ্রানকুইন্সের প্রেসিডেন্ট। কাজের ব্যস্ততায় সময় হয়ে ওঠে না পুরোনো ক্লাবের ফলাফল ফলো করার। সোরেনো বলছিলেন, "সেমিফাইনালে ওঁরা টাইব্রেকার জিতে ফাইনালে পৌঁছল। ম্যাচ দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায়র মাধ্যমে সমস্ত খবর রেখেছি। ওঁদের জন্য ভালো লাগছে।"
The @HeroMotoCorp Hero of the Match award goes to @atletidekolkata's Henrique Sereno! #KERvATK #LetsFootball pic.twitter.com/3Yy1ppRoGi
— Indian Super League (@IndSuperLeague) December 18, 2016
বছর সাতেক আগে ফাইনালে কলকাতার ক্লাবের প্রতি চূড়ান্ত দায়বদ্ধতার নিদর্শন দেখিয়েছিলেন সোরেনো। টানটান ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে হেড করতে গিয়ে মাথা ফেটে গিয়েছিল পর্তুগিজ তারকার। তবে মাঠ ছাড়েননি তিনি। মাথায় ব্যান্ডেজ জড়িয়েই বাকি ম্যাচ খেলেন।
১৮-র মহা-ফাইনালে কাপ জয়ের জন্য নিজের পুরোনো ক্লাব এটিকের ওপরেই বাজি ধরছেন রক্ত ঝড়ানো সেই পর্তুগালের তারকা। বলছেন, "আশা করি এটিকেই জিতবে। প্রত্যেক বছরেই এই দল উন্নতি করে চলেছে। ওঁদের কাপ না জেতার কোনও কারণ নেই।"
সেবার এটিকেকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন হোসে মোলিনা। কেরালা ব্লাস্টার্সের দায়িত্বে ছিলেন স্টিভ কপেল। মোলিনার সেই চ্যাম্পিয়ন দলে প্রীতম কোটাল সতীর্থ হয়েছিলেন সেরেনোর। গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলেন পুরোনো সতীর্থদের নাম। এতটাই হৃদয়ে ধরে রেখেছেন কলকাতার স্মৃতি। সময়ের ভেলায় পিছনে ফিরতে ফিরতে রোনাল্ডোর জাতীয় দলের একদা সতীর্থ বলে চলছিলেন, "ওখানে কাঠানো প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। শহর, শহরের ফুটবল সমর্থকরা অসাধারণ। কোনও না কোনও দিন আবার কলকাতায় ফিরে একটা ম্যাচ দেখার ইচ্ছে রয়েছে। আমরা সেবার বেঙ্গালুরুকে দু-বার হারিয়েছিলাম। ওঁদের ঘরের মাঠেও হারিয়ে এসেছিলাম। এবারও আমরা জিতব।"
আইএসএল-এর সফলতম কোচ ধরা হয় হাবাসকে। এটিকের মহাগুরু ধরা হয় স্প্যানিশ ম্যানেজারকে। এবার অবশ্য বাগানকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য রণকৌশল তৈরি করছেন হুয়ান ফেরান্দো। দুই কোচের মধ্যে সোরেনো অবশ্য এগিয়ে রাখছেন বর্তমান এটিকেএমবি কোচকেই। জানাচ্ছেন, "হাবাস অনেক আবেগী। তবে ফেরান্দো টেকনিক্যাল দিক থেকে আরও তুখোড়।"
লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি সমর্থকদের মত এখন থেকেই মহারণের জন্য বুক বাঁধছেন সেরেনো!