ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা প্রতিভা তিনি। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দেশীয় ফুটবলে। বিদেশের লিগে চুটিয়ে খেলা ভারতীয়দের মধ্যে অগ্রগণ্য তিনি। সেই ঈশান পান্ডিতাকেই পাওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই সঙ্গে লড়াইয়ে ছিল একাধিক আইএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে ইস্টবেঙ্গলকে হতাশ করে শেষ পর্যন্ত ঈশান নাম লেখালেন কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে।
গত কয়েক সিজনের হতাশা ঝেড়ে ফেলে এবার ইস্টবেঙ্গল বাকি দলগুলোকে রীতিমত টেক্কা দেওয়ার জন্য স্কোয়াড গড়েছে। ট্রান্সফার ফি দিয়ে একাধিক তারকা ফুটবলারকে তুলে নিয়েছে লাল-হলুদ শিবির। জেভিয়ের সিভেরিও, সাউল ক্রেসপো, হোসে পারদো, এলসে, বোরহা হেরেরার মত নামি বিদেশিদের নেওয়ার পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল দেশীয় ফুটবলারের কোটায় সই করিয়েছে এডুইন ভান্সপাল, মন্দার রাও দেশাই, খাবরা, নন্দকুমার, নিশু কুমারের মত ঘরোয়া ফুটবলের পরিচিত তারকাদের। নাওরেম মহেশ, নন্দকুমারদের মত উইঙ্গার থাকলেও স্কোয়াডে ভালো মানের দেশীয় সেন্টার ফরোয়ার্ড নেই। সেই জন্যই ইস্টবেঙ্গল জামশেদপুর এফসিতে গত সিজনে খেলা ঈশান পান্ডিতাকে সই করানোর জন্য আদা জল খেয়ে নেমেছিল।
তবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গেই লড়াইয়ে ছিল কেরালা ব্লাস্টার্স এবং চেন্নাইয়িন এফসি। যদিও চেন্নাইয়িন আগেই এই লড়াই থেকে পিঠটান দেয়। শেষমেষ লড়াই দাঁড়ায় ইস্টবেঙ্গল বনাম কেরালার। সেই লড়াইয়েই বাজিমাত করল কেরালা। ইয়েলো ব্রিগেড এবার ট্রান্সফার সিজনে বেশ সক্রিয়। সাহালদের মত তারকাদের ছেড়ে দিতে হলেও কেরালা ঘরোয়া ট্রান্সফারে এবার দলে ভিড়িয়েছে লারা শর্মা, প্রীতম কোটাল, নাওচা সিং, প্রবীর দাসকে। সেই তালিকায় এবার নবতম সংযোজন ঈশান পান্ডিতা। ঈশান কলকাতায় চলে এসেছেন। ডুরান্ড কাপে খেলতে আসা কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দিচ্ছেন কলকাতাতেই।
কাশ্মীরি ঈশান অল্প বয়সেই দেশ ছেড়েছিলেন। চলে যান ফিলিপিন্সের ম্যানিলায়। সেখানে কয়েক বছর কাটানোর পর দেশে ফিরে বেঙ্গালুরুতে ঠাঁই গাড়েন। তবে বেশিদিন বেঙ্গালুরুতে থাকেননি। গোথিয়া কাপে দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স করার পর সুইডিশ ক্লাব ব্রোমাপোকার্না নিজেদের যুব দলে নিয়ে নেন ঈশানকে।
সুইডেন থেকে মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্পেনে পাড়ি জমান পান্ডিতা। এরপর স্প্যানিশ লিগে আলকোভেন্ডাস, আলমেইরা, লেগানেস, জিমন্যাস্টিকের মত নামি ক্লাবের যুব দলে খেলেন। সিনিয়র কেরিয়ারে পোবলা মাফুমেত, লোরকায় খেলেন। ২০২০-২১ সিজনে ভারতে ফিরে আইএসএল-এ আত্মপ্রকাশ করেন এফসি গোয়ার হয়ে। ঠিক তারপরে সিজন থেকেই তিনি নাম লেখান জামশেদপুর এফসিতে। টানা দুটো সিজন খেলার পর ঈশান আপাতত কেরালা নাম লেখান।
জাতীয় দলের হয়ে ৬ ম্যাচ খেলে ফেলা তারকা ইস্টবেঙ্গলের সম্পদ হতে পারতেন। তবে সেই লড়াইয়ে আপাতত পিছু হঠতে হল লাল-হলুদ শিবিরকে।