ইস্টবেঙ্গল: ০
এটিকে মোহনবাগান: ২ (দামজানোভিচ, পেত্রাতোস)
চিত্রনাট্য নির্ধারিতই ছিল। সেই স্ক্রিপ্ট মেনেই টানা অষ্টম ডার্বির দখল নিল এটিকে মোহনবাগান। দামজানোভিচ এবং পেত্রাতোসের জোড়া গোলে ডার্বির বিজয় তিলক পড়ল হুয়ান ফার্নান্দো ব্রিগেড।
বলিউডি ঢংয়ে বয়কট গ্যাং আছড়ে পড়েছিল ডার্বির আগে থেকেই। দুই ক্লাবের সমর্থকদের সম্মিলিত কোরাস ছিল 'বয়কট ডার্বি'। সেই সমর্থকদের মরিয়া মেজাজেই শনিবারের ডার্বি ফাঁকা থাকল। মেরেকেটে দর্শক ৩০-৩৫ হাজার। ঐতিহাসিক ফাঁকা ডার্বিই মাতিয়ে দিল সবুজ মেরুন শিবির।
ম্যাচের শুরু থেকেই বাগান বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। হাইপ্রেসিং ফুটবলে ডান প্রান্ত ধরে ইস্টবেঙ্গলের নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছিলেন মনবীর, হুগো, পেত্রাতোসরা। সবুজ মেরুন ফুটবলাররা যেখানে বারবার আক্রমণের ঝড় তুলছিলেন, সেখানে ইস্টবেঙ্গল ভরসা করছিল প্রতি আক্রমণে।
দ্বিতীয় গোলের পর পেত্রাতোস (এক্সপ্রেস ফটো পার্থ পাল)
তবে এটিকে মোহনবাগানের সুযোগ তৈরির প্রদর্শনীর মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যাওয়ার মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিল। তবে সেই সুযোগ হেলায় হারান সুহের। মোবাশির রহমান থ্রু বল বাড়িয়েছিলেন সুহেরকে। সুহের শুভাশিসকে পেরিয়ে টার্ন করতে গিয়ে বক্সের মধ্যে পিছলে পড়ে যান।
সুহেরের পর বিরতির আগে মিস করে বসেন নাওরেম মহেশও। আসলে বাগান শিবির প্রায় ৬০ শতাংশ বল পজেশন নিয়েও প্রথমার্ধে গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ এটাকিং থার্ডে তীব্রতা না থাকায়। গোটা মাঠ জুড়ে পজেশন ভিত্তিক ফুটবল খেললেও কমলজিতকে বিব্রত করতে পারছিল না।
আরও পড়ুন: কালান্তক ডার্বি কেড়ে নিয়েছে হৃদয়ের মানুষকেই! ইস্টবেঙ্গল থেকে মুখ ফেরালেন বাগুইহাটির বীরাঙ্গনা
ইস্টবেঙ্গলও পাল্টা আক্রমণে সবুজ মেরুন চক্রবুহ্য ভেদ করার চেষ্টা করছিল সামনে জেক জার্ভিস, ক্লেইটন সিলভাকে লেলিয়ে দিয়ে। তবু বিরতি পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য থেকেছিল। ইস্টবেঙ্গল পাল্টা লড়াইয়ের বার্তা দিয়েই যুবভারতীতে লড়াই ছড়িয়ে দিচ্ছিল। রক্ষণ সামলে আক্রমণে ওঠো- মন্ত্রে কনস্টানটাইন ব্রিগেড চমক দিচ্ছিল।
পেত্রাতোস গোটা ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে নাস্তানাবুদ করে গেলেন। ফুল ব্যাক পজিশন থেকে আশিস রাই টানা ওভারল্যাপে উঠে আক্রমণের ঝড় তুলে দিচ্ছিলেন।
বিরতি পর্যন্ত নিজেদের ট্যাকটিক্সে সফলভাবে এটিকে মোহনবাগানকে আটকে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে সমস্ত প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। ৬৮ মিনিটে সেট পিস থেকে গোলের খাতা খুলে যান দামজানোভিচ। বুমোসের কর্ণার থেকে মনবীর ফ্লিক করে বল রেখেছিলেন দামজানোভিচের কাছে। তবে প্রথম প্রচেষ্টায় সার্ব তারকার হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। রিবাউন্ড থেকে তিনিই জালে বল জড়িয়ে দেন।
গোল হজম করার পরে মরিয়া হয়ে সমতা ফেরানোর জন্য আক্রমণে লোক বাড়িয়ে দেন কোচ কনস্টানটাইন। সেই সুযোগে একদম শেষদিকে ৯০ মিনিটে পেত্রাতোস গোল করে ফিনিশিং টাচ দেন।