জাতীয় দলের স্টপার আনোয়ার আলিকে তুলে নিয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সেরার সেরা ডিফেন্ডার আগামী সিজনে খেলবেন সবুজ মেরুন জার্সিতে। জাতীয় দলে অপরিহার্য ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির কেরিয়ার শুরু হয়েছিল স্ট্রাইকার হিসাবে। মিনার্ভা পাঞ্জাব একাডেমিতে তাঁর উচ্চতা দেখে কোচেরা স্টপার পজিশনে আনোয়ারকে খেলাতে থাকেন। তারপর পুরোটাই ইতিহাস।
হৃদযোগে একসময় ফুটবল খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সেই হার্ডল পেরিয়ে তিনি বর্তমানে দেশের অন্যতম সেরা তারকা। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে যুব দলের হয়ে যেমন গোল করার নজির রয়েছে আনোয়ারের, তেমন সিনিয়র দলের হয়ে বাহরিনের বিপক্ষেও গোল করেছেন।
বিশ্বকাপে খেলার পর আনোয়ার সই করেন ইন্ডিয়ান এরোজের হয়ে। পরের সিজনেই মুম্বই সিটির হয়ে তিন বছরের চুক্তি করেন তিনি। প্ৰথম সিজনে লোনে ইন্ডিয়ান এরোজে খেলেন। দ্বিতীয় সিজনে মুম্বই নিজেদের স্কোয়াডে প্রতিশ্রুতিমান সেন্টার ব্যাককে রাখলেও হৃদরোগের জন্য ছেড়ে দিতে হয় আনোয়ারকে।
ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই পরের সিজনে মহামেডান এসসি সই করেছিল আনোয়ারকে। এমনকি সমস্যা এড়াতে একসময় সাদা-কালো কর্তারা আনোয়ারকে ছেড়ে দিতেও রাজি হয়।
আরও পড়ুন: মোহনবাগান চেয়েও পেল না! টিম ইন্ডিয়ার সুপারস্টার এবার হয়ত রোনাল্ডো-বেনজিমাদের সঙ্গে সৌদি লিগে
২০২১-এ ফেডারেশনের তরফে তারকার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ফেডারেশন মাঠে ফেরার অনুমতি দেয়। তিনি সই করেন দিল্লি এফসিতে। তারপরের সিজনেই এফসি গোয়ার হয়ে শেষমেশ আইএসএল-এ অভিষেক ঘটে তাঁর।
রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি উঠে গিয়ে খেলার সহজাত প্রবণতা রয়েছে আনোয়ারের। সবুজ মেরুন জার্সিতে সই করেই আনোয়ার নিজের লক্ষ্যের কথা সাফ জানিয়ে দিলেন। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের প্রেস বিবৃতিতে আনোয়ার জানিয়েছেন, "কলকাতায় খেলার স্বপ্ন থাকে সমস্ত ফুটবলারেরই। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল কলকাতায় খেলার। মোহনবাগান দেশের সবথেকে প্রাচীন ক্লাব। কত ঐতিহ্য, গৌরবের ইতিহাস রয়েছে মোহনবাগানের! সেই ক্লাবের জার্সিতে মাঠে নামব, ভেবেই রোমাঞ্চ লাগছে। মোহনবাগান সমর্থকদের অজস্র মেসেজে ফোনের ইনবক্স ভরে গিয়েছে। ওঁদের আগ্রহ দেখে আমি আপ্লুত।"
"হাজার সমর্থকদের সমর্থন নিয়ে মাঠে নামব। সকলে ভালো খেলার জন্য উদীপ্ত করবেন, ভাবতেই ভাল লাগছে। সমর্থকরা যে কোনও ক্লাবের কাছে শক্তি। আমার বয়স কম। সবে শিখতে শুরু করেছি। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবার যা দল করেছে, তাতে সতীর্থদের কাছ থেকেও অনেককিছু শিখতে চাই। নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটা আপাতত মূল লক্ষ্য আমার।"
"মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট-এ সই করার তিনটে লক্ষ্য আমার। প্ৰথমত, জীবনে প্ৰথম কলকাতা ডার্বি খেলব। ডার্বি জিতে মোহনবাগান সমর্থকদের আবেগ, উচ্ছ্বাসকে সমর্থন জানাতে চাই। দ্বিতীয়ত, জাতীয় দলের জার্সিতে কাপ জিতলেও আইএসএল জেতা হয়নি কখনও। আইএসএল জিততেই এখানে আসা। কারণ এবার ক্লাব যা দল গড়েছে, তাতে আইএসএল জেতা সম্ভব বলেই মনে হয়। তৃতীয়ত, মোহনবাগান দেশের সেরা ক্লাব। শুধু ভারত সেরা নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সাফল্য পেতে পারে মোহনবাগান জার্সি। জাতীয় দলের হয়ে অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতেছি। এবার ক্লাবের হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য পেতে চাই। এএফসি কাপে সেটাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে।"