Indian Super League 2024 Derby East Bengal vs Mohun Bagan: ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করা যেন অভ্যেস করে ফেলেছেন। আইএসএল হোক বা ডুরান্ড কাপের ফাইনাল- পেত্রাতোস বারবার বল জড়িয়েছেন লাল-হলুদ জালে। আর গোল করার পরেই ভরা স্টেডিয়াম একাধিকবার দেখেছে সেই সেলিব্রেশন। পা উঁচু করে উরুতে হালকা চাপড়। ক্রিকেট মাঠ যে উদযাপন দেখেছে শিখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে।
তবে এই সেলিব্রেশন অসম্মানজনক। এমনটাই মনে করছেন ডগলাস দ্য সিলভা। ইস্টবেঙ্গলের আজীবনের ভরসার প্রতীক ডার্বি মহারণের ঠিক ২৪ ঘন্টা আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, এই আচরণ মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। অন্তত তাঁর প্রতিপক্ষ কোনও স্ট্রাইকার তাঁর সামনে এভাবে উদযাপন করলে তাঁকে ছেরে দিতেন না। ব্রাজিলীয় সুপারস্টার বলে দিচ্ছেন, "পেত্রাতোস ভাগ্যবান যে আমার চ্যালেঞ্জ ওঁকে সামলাতে হয়নি। আমি ওঁকে এই সেলিব্রেশন করতে দিতাম না। এখন যাঁরা আটকানোর দায়িত্বে থাকে, তাঁরা অনেকটাই নরম স্বভাবের।"
কেন আপত্তি ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া বিখ্যাত এই ব্রাজিলীয়র? ডগলাস খোলাখুলি জানাচ্ছেন, "আমার জমানায় প্রতিপক্ষকে সম্মান করা দস্তুর ছিল। এখন যুগ বদলে গিয়েছে। কমবেশি সব দলের ফুটবলারই এই রোগে আক্রান্ত। এমনকি বিদেশি ফুটবলারদের মধ্যেও সংহতি কম।"
নিজের খেলোয়াড়ি সময়ে ডগলাসকে টপকে গোল করা ছিল রীতিমত চ্যালেঞ্জের। ডার্বিতে অপরাজেয় থাকার রেকর্ডও রয়েছে তাঁর। বাঘা বাঘা দেশি-বিদেশি ফরওয়ার্ডকে শান্ত রাখা ডগলাস জানিয়েছেন, "ম্যাচ শুরুর আগেই আমি বিপক্ষ দলকে বলে দিতাম, মাঠে 'অন্যকিছু' করার চেষ্টা হলে, ফল ভুগতে হবে। ওঁদের দলে বিশ্বকাপারও রয়েছে। তবে সম্মানের হক সকলের রয়েছে। আর পেত্রাতোস তো চান্স প্লেয়ার। আমি মাঠে বরাবর সম্মান পেয়ে এসেছি। কারণ সকলেই জানত, উল্টোপাল্টা কিছু করার চেষ্টা হলে ফলাফলও অন্যরকম হবে।"
পেত্রাতোসকে কীভাবে শান্ত রাখতেন, সেটাও খোলসা করেছেন ব্রাজিলীয়। বলেছেন, "মাঠে যদি বেশি কথা বলে, তাহলে প্ৰথম ট্যাকলেই ও বুঝতে পেরে যাবে। তারপর আশা করি শান্ত থাকবে। কড়া ট্যাকলের সামনে পড়লেই ও গুটিয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস।"
গনগনে গলায় পেত্রাতোসের উদ্দেশ্যে যেন একের পর এক বোমা ফাটিয়েই চলেছিলেন ডগলাস, "খেলা ফুটবলার হোক বা সমর্থক সকলকে কাছাকাছি নিয়ে আসে। এই আচরণের মাধ্যমে ও কী বার্তা দিচ্ছে যুব সমাজকে? আগামী প্রজন্মের জন্য কী দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে? একবার নয়, বারবার এমন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। হিংসায় উৎসাহ দিচ্ছে এই আচরণ!"
ডার্বিতে এবারে থাকছে ব্রাজিলীয় কানেকশন। ইস্টবেঙ্গল জেতার জন্য যাঁর দিকে তাকিয়ে সেই ক্লেইটনের সঙ্গে ফোনেই যোগাযোগ রেখেছেন ডগলাস। বলছিলেন, "ও যদি আমার সঙ্গে খেলত তাহলে ডার্বিতে প্রচুর গোল করতে পারত। আমরা চোখের ইশারায় একে অন্যের পাস ধরে ফেলতাম। তবে এখন ইস্টবেঙ্গলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে ওঁর। নিচে নেমে এসে মার্কিং করতে হচ্ছে।"
খেলা ছেড়ে দিয়েছেন বহু বছর হল। কোচিং করিয়েছেন ভারত-বাংলাদেশের একাধিক ক্লাবে। তাঁর পরামর্শ মেনে পেত্রাতোস কি নিজেকে সংযত রাখবেন, সেটাই এখন দেখার।