সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতেই এবার আইএসএল-এ নামবেন কেরালা ব্লাস্টার্স-এর 'ঘরের ছেলে' প্রভসুখন সিং গিল। অনেকদিন ধরেই তারকা গোলকিপারকে পাওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল লাল-হলুদ শিবির। সেই লড়াই অবশেষে সার্থক। অপ্রকাশিত ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে ইস্টবেঙ্গল চূড়ান্ত করে ফেলল গিলকে।
গত কয়েক সিজন ধরেই ইস্টবেঙ্গলের অন্য বিভাগের মত মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গোলকিপিং বিভাগ। অন্য দলের বাতিল অথবা নিজেদের সেরা সময় ফেলে আসা গোলকিপারদের নিয়ে আইএসএল মঞ্চে নামতে হচ্ছিল। তবে এবার ইমামি বাজেট বাড়িয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে সেরা দল নামাতে উদ্যোগী হয়েছে। একের পর এক তারকাকে ট্রান্সফার ফি দিয়েই বড়সড় অর্থ খরচ করে ইস্টবেঙ্গলে নিয়ে এসেছেন ইমামি কর্তারা।
দেশের প্ৰথম সারির একগুচ্ছ তারকার এবার ঠিকানা হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। এর মধ্যে নন্দকুমার, নিশু কুমার, এডুইন ভান্সপাল, মন্দার রাও দেশাই, হরমনজোৎ খাবরার মত তারকারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাউকোর ভাগ্য কার্যত ঠিক মোহনবাগানে! তিরির পরিণতিই হতে চলেছে ফিনিশ সুপারস্টারের
এবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন প্রভসুখন গিল। প্রভসুখন গিলের সঙ্গে কেরালা ব্লাস্টার্স-এর ২০২৪ পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। তবে সেই চুক্তি ভেঙেই ট্রান্সফার ফি দিয়ে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আসতে চাইছে গিলকে। কেরালা ব্লাস্টার্সে খেলা এই কাস্টডিয়ান জাতীয় দলের সেট আপের মধ্যেও ভালো রকম রয়েছে। তরুণ তুর্কিকে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সই করিয়ে ভবিষ্যতের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছে লাল-হলুদ শিবির।
ফেডারেশনের এলিট একাডেমির প্রোডাক্ট গিল। যুব বিশ্বকাপের জন্য জাতীয় দলের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। যদিও স্কোয়াডে ঢুকতে পারেননি। যুব বিশ্বকাপের পরেই ইন্ডিয়ান এরোজের সই করেন প্রভসুখন গিল। ইন্ডিয়ান এরোজে ধীরজ সিংয়ের ব্যাক আপ গোলকিপার হিসাবে খেলতেন তিনি।
ঘটনাচক্রে এরোজের জার্সিতে সিনিয়র স্তরে গিলের অভিষেক ঘটেছিল ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষেই। তৎকালীন যুব দলের হেড কোচ লুইস নর্টন ডি ম্যাতোস গিলের পারফরম্যান্সে রীতিমত প্রভাবিত হয়েছিলেন।
২০১৯-এ বেঙ্গালুরু এফসিতে সই করলেও দুটোর বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। তবে বেঙ্গালুরুতেই কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন গিল। পরের সিজনেই গিলকে দুই বছরের চুক্তিতে সই করায় কেরালা ব্লাস্টার্স। আইএসএল-এ আলবিনো গোমসের ব্যাক আপ হিসাবে ভাবা হয়েছিল কেরালায়। ডুরান্ডে কেরালার জার্সিতে অভিষেক ঘটানোর পর আইএসএল-এ আত্মপ্রকাশ করতেও বেশি সময় লাগেনি। দলের ফার্স্ট চয়েস কিপার আলবিনো গোমস চোট পেয়ে গোটা সিজনের জন্যই ছিটকে যাওয়ায় দলের একাদশে নিয়মিত সুযোগ পেতে থাকেন।
ঘটনাচক্রে, আইএসএল-এও কেরালা ব্লাটার্সের হয়ে অভিষেক ঘটে ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে। ২০২০/২১ সিজনে ৪৭টা সেভ করেন। ৭ ম্যাচে দলকে ক্লিন শিট রাখতে সাহায্য করেন। সেই সিজনেই গোল্ডেন গ্লাভসের পুরস্কার উঠেছিল গিলের হাতে। এর পরেই গিলের সঙ্গে ২০২৪ পর্যন্ত কেরালা চুক্তি বাড়িয়ে নেয়।
কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের সঙ্গেও ইস্টবেঙ্গলে রিইউনিউন ঘটবে তারকার। সবমিলিয়ে, গিল যে ইস্টবেঙ্গলের কোয়ালিটি সাইনিং হতে চলেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।