মরশুমের মধ্যেই 'ফেরান্দো হঠাও' ধ্বনি উঠে গিয়েছিল। আইএসএলে ভালো শুরু করেও একসময় টানা পয়েন্ট নষ্ট করায় সবুজ মেরুন বসের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে যায়। প্লে অফে খেলা নিয়ে সংশয়ের মুখে পড়ে মেরিনার্সরা। তবে সেইসব প্রতিকূল ঢেউ সামলে চ্যাম্পিয়ন কোচের শিরোপা কোচ হুয়ান ফেরান্দোর গলায়।
জিতেও অবশ্য গনগনে রাগ একটুও পড়ছে না স্প্যানিশ কোচের। কয়েক সপ্তাহ আগের সমালোচনার প্রসঙ্গ উঠতেই বাগান বস বলে দিচ্ছেন, "যারা সমালোচনা করেন, তাঁরা জানেনই না, প্লেয়াররা কীরকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে যায়। অনুশীলনে কী হয়, তা নিয়ে তাঁদের বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। অনেকের বাবা হয়ত হাসপাতালে ভর্তি। কাউকে হয়ত আবার বাবা, দাদুদের হারাতে হয়েছে।"
আরও পড়ুন: ATKMB কে পেনাল্টি উপহার দিয়ে কি চ্যাম্পিয়ন করা হল! রেফারিকে বীভৎস তোপ বেঙ্গালুরু মালিক জিন্দালের
"ফুটবলাররাও মানুষ। ওঁরাও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। দলের সবাইকে বারবার এসব বিষয় অগ্রাহ্য করতে বলি। কেউ কেউ আবার টিভিতে খেলা দেখে ভুলভাল লিখতে শুরু করে দেন। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় কী লেখালেখি হচ্ছে সেগুলো পড়ে অথবা মন্তব্য করে নিজের শক্তির অপচয় করি না।"
"যাঁরা আজ আমার সমালোচনা করেছেন। তাঁরা হয়ত আগামীকাল অন্য কারোর বা রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করবেন। এসব বিষয় তাই আমাকে ভাবায় না। এই জয় আমার ফুটবলারদের জয়। কাউকে জবাব দেওয়ার জন্য এই জয় নয়।"
আরও পড়ুন: ATK আর থাকছে না! চ্যাম্পিয়ন হয়েই সমর্থকদের জন্য বিশাল ঘোষণা কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার
এফসি গোয়ার কোচ হয়ে এসেছিলেন। সেই গোয়ার মাটিতেই আইএসএল চ্যাম্পিয়ন সবুজ মেরুন কোচের জোব্বা পরে। এরকম সুখের সমাপতন মান্ডবীর তীরে অবশ্য সহজে আসেনি। নখ-দাঁত কামড়ানো ম্যাচে জয় এসেছে সহস্র বাধা পেরিয়ে। ১-১ থাকা অবস্থায় খেলা যখন প্রায় শেষের দিকে, সেই সময়েই দূর্যোগের মেঘ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বাগানের একসময় চোখের মণি রয় কৃষ্ণ। হেডে গোল করে। তবে শেষলগ্নে গোল হজম করেও আতঙ্কিত হয়ে তাড়াহুড়ো করে বারবার বদলের পথে হাঁটেননি। বরং নিজের গেমপ্ল্যানে ভরসা রেখেছেন। কিয়ান নাসিরি, ব্রেন্ডন হ্যামিল, ফেদেরকো গ্যালেগোদের নামিয়ে নিজের গেমপ্ল্যানেই অটল থেকেছেন। আর নাসিরিকে আটকাতে গিয়েই ফাউল করে বাগানকে পেনাল্টি দিয়ে যান পাবলো পেরেজ। যেখান থেকে পেত্রাতোসের সমতা ফেরানোর গোল।
আরও পড়ুন: ভারতীয় রেফারিরা উন্নতি করবে আশা করি! বাগানের কাছে হেরে বিদ্রূপে ভরালেন বেঙ্গালুরু কোচ গ্রেসন
ম্যাচের পর নিজের প্ল্যানিং সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ফেরান্দো বলে দেন, "আমাদের নির্দিষ্ট গেমপ্ল্যান ছিল। ম্যাচে এরকম সিচ্যুয়েশন আসতেই পারে। আমি জানতাম আমার দলের ফুটবলাররা কী করতে পারে। গুরপ্রীত, রোহিত, সুনীলদের মত অভিজ্ঞ ফুটবলারে বোঝাই দলের মোকাবিলা করতে হয়েছিল আমাদের। আমাদের স্ট্র্যাটেজি ঠিকমত পালন করে গিয়েছে ফুটবলাররা। দল কঠিন মুহূর্তে যে চারিত্রিক কাঠিন্য দেখিয়েছে, তাতে আমি খুশি।"
"১-১ হয়ে যাওয়ার পরে ম্যাচে বেশ কিছু কঠিন মুহূর্ত পেরোতে হয়েছে। তবে ফুটবলাররা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। এমনকি এক্সট্রা টাইমেও ওঁরা জয়ের আশা ছাড়েনি। এই জয় ফুটবলারদের জয়।"