এটিকে মোহনবাগান: ০ (৪)
হায়দরাবাদ এফসি: ০ (৩)
২৪ ঘন্টা আগেই রুদ্ধশ্বাস সেমিফাইনাল উপহার দিয়েছিল বেঙ্গালুরুর ক্রান্তিবীরা স্টেডিয়াম। দ্বিতীয় সেমিফাইনালও গড়াল টাইব্রেকার শ্যুট আউটে। যুবভারতীর সবুজ ঘাসে যেখানে টানটান থ্রিলারে হায়দরাবাদ বধ করে ফাইনালে পৌঁছে গেল এটিকে মোহনবাগান।
ঠিক যেন প্ৰথম সেমিফাইনালের পুনঃসম্প্রচার। নব্বই মিনিট খেলার শেষে দুই দলই গোল করতে পারেনি। প্ৰথম লেগেও গোলশূন্য খেলা শেষ হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোলের মুখ দেখেনি দুই দল। এরপরেই টাইব্রেকারে ফয়সালা হয় খেলার। এটিকে মোহনবাগান নিজামের শহরের ফুটবলারদের ৪-৩ গোলে হারিয়ে দেয়।
আইএসএল ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গোলশিকারি ধরা হয় বার্থালোমিউ ওগবেচেকে। তিনিই হায়দরাবাদের হারের খলনায়ক। ওগবেচে স্পটকিক মিস করার পর জেভিয়ের সিভেরিওর শট রুখে দেন বিশাল কাইথ। চতুর্থ কিকেই ম্যাচের ফয়সালা করার সুযোগ পেয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। তবে চাপের মুখে টাইব্রেকার থেকে জালে বল রাখতে পারেননি ব্রেন্ডন হ্যামিলও। শেষমেশ ক্যাপ্টেন প্রীতম কোটাল দুর্ধর্ষ কিকে বাগানের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেন।
ম্যাচে দুই দলই সতর্কভাবে শুরু করেছিল। গত মরশুমে হায়দরাবাদের কাছেই দুই লেগ মিলিয়ে গোল পার্থক্যে পরাস্ত হয়ে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল ফেরান্দোর বাগানের। ঘরের মাঠে গতবছর সেমিতে জিতলেও এওয়ে ম্যাচের হার ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল সবুজ মেরুন শিবিরের। এবার সেই হায়দরাবাদ বধ করেই এল প্রতিশোধ।
যাইহোক, এদিন ম্যাচে ঘরের দর্শকদের সামনে আগাগোড়া প্রাধান্য নিয়ে খেলে গেল এটিকে মোহনবাগান। গোলের মুখটাই যা খুলতে পারল না। কিয়ান নাসিরি খেলা শুরুর বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ পরেই গোল করে ফেলতে পারতেন। তবে বলের সঙ্গে সংযোগ করতে পারেননি তিনি। ১০ মিনিটে মহম্মদ ইয়াসিরের সঙ্গে জুটিতে বাগানের গোলে প্রায় গোল দেওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে তা হয়নি।
ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই দুই কোচের প্ল্যান একদম স্পষ্ট হয়ে যায়। হায়দরাবাদ বস মানোলো মারকুয়েজ ডিফেন্স আঁটোসাঁটো করার দিকে নজর দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছিলেন বুমোস, পেত্রাতোসরা। হায়দরাবাদ রক্ষণে টানা চাপ রেখে চলেছিলেন বাগান ফুটবলাররা।
এটিকে মোহনবাগান ম্যাচে গোল করার মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিল ২২ মিনিটে। মনবীর সিং নিজের মার্কারকে এড়িয়ে বাঁ পায়ের গোলমুখী শট নেন। হায়দরাবাদ গোলকিপার গুরমিত সিংকে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে প্রতিহত হয় সেই শট। ৫৭ মিনিটে আশিস রাইয়ের ক্রস থেকে হুগো বুমোসের দুরন্ত শট দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন গুরমিত।
হায়দরাবাদ টানা আক্রমণে না উঠলেও মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত স্পেলে বাগান অর্ধে হানা দিচ্ছিল। ম্যাচের সময় যত ফুরিয়ে আসছিল দুই দলই রক্ষণ মজবুত করায় মন দেয়। এতেই খেলা গোলশূন্য হওয়ার দিকে এগোয়। যে শেষ পরিণতি পায় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি থেকে পেত্রাতোস, গ্যালেগো, মনবীর সিং এবং প্রীতম কোটাল গোল করে যান বাগানের হয়ে। হায়দরাবাদের হয়ে জোয়াও ভিক্টর, রোহিত দানু এবং রিগান সিং গোল করলেও স্পটকিক থেকে গোল করতে পারেননি ওগবেচে এবং সিভেরিও। মার্চের ১৮ তারিখে গোয়ায় এটিকে মোহনবাগান ফাইনালে মুখোমুখি হবে বেঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে।