কার্ল ম্যাকহিউকে ধরে রাখা এবং সেদিনই রাতের দিকে তিরির ইঙ্গিতবাহী পোস্ট! ফুটবল মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সমর্থকদের মধ্যেও আশঙ্কা তৈরি হয়, তাহলে কি তিরি শেষমেশ ক্লাব ছাড়ছেন।
আসলে গত তিন মরশুম ধরেই এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণে চিনের প্রাচীর হয়ে একা দুর্গ সামলেছেন। হাবাস তো বটেই নয়া কোচ ফেরান্দোরও নয়নের মণি তিরি। ফিট থাকলে তিরি প্ৰথম এগারোয় অবধারিত চয়েস। এমন নির্ভরযোগ্য স্টপারের বিদায়ী চর্চায় চরমে উঠেছিল জল্পনা।
আরও পড়ুন: পোগবা-হ্যামিলকে সই করানোর পর এবার মুখ খুললেন তিরি! জানালেন নিজের বাগান-ভবিষ্যৎ
মঙ্গলবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সবুজ মেরুন জার্সিতে এক ছবি পোস্ট করেন তারকা। বাঘের ইমোজি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন ‘ব্যাক’। অর্থাৎ দ্রুতই যে তিনি মাঠে ফিরতে চলেছেন, সেদিকেই ইঙ্গিত ছিল তাঁর।
সমর্থকরা যথারীতি স্প্যানিশ তারকার পোস্টে কমেন্টে ভরিয়ে দিচ্ছিলেন। এমন অবস্থাতেই কার্ল ম্যাকহিউকে সই করানোর পরে তিনি প্রিসিজনে আসছেন কিনা, আইএসএল-এ খেলবেন কিনা, সেই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চান এক সবুজ মেরুন সমর্থক। তখনই তিরি রিপ্লাই দিয়ে যান, "দলের সঙ্গে থাকতে পারলে ভালো লাগত। তবে দুর্ভাগ্যবশত এই চোট সারিয়ে ফিরতে সময় লাগবে। তাই দলকে সাহায্য করতে পারছি না। তবে ক্লাব দুজন ভালমানের ডিফেন্ডার নিয়েছে। আমি নিশ্চিত সবকিছুই ঠিকঠাক চলছে।”
এমন ইঙ্গিতবাহী পোস্টের পরেই জল্পনা গাছের মগডাল ছুঁয়ে ফেলে। তবে ঘটনা হল, তিরি ক্লাবের ভাবনায় ভালোভাবেই রয়েছেন। এএফসি কাপে গোকুলাম ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন তারকা। তারপরেই জানা যায়, এসিএল-এর চোট সারিয়ে ফিরতে আট মাসের বেশি সময় খেলতে পারবেন না তারকা স্টপারকে। এএফসি গ্রুপ পর্ব শেষেই তিরি মাদ্রিদে পৌঁছে গিয়েছিলেন। নিজের দেশেই অস্ত্রোপচারের পর রিহ্যাব সারছেন তারকা। মাঠে ফিরবেন সেই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে।
আরও পড়ুন: জাতীয় দলের কোর টিমই বেঙ্গালুরুর! ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার দিনেই বড় মন্তব্যে ঝড় তুললেন হীরা
ক্লাবের অন্দরমহলের খবর বলছে, হুয়ান ফেরান্দোর পরিকল্পনায় ভালোভাবেই রয়েছেন তিরি। এখনই স্প্যানিশ তারকাকে হারাতে চান না তিনি। বরং তারকার ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে প্রস্তুত সবুজ মেরুন কোচ। যেভাবে তিরির রিকভারি সেশন চলছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। তিনি জানুয়ারির পরে তিরির সার্ভিস পাবেন, এমন প্ল্যানিং করেই এগোচ্ছেন।
তিরি বাইরে চলে যাওয়ার এএফসি কাপের পরবর্তী রাউন্ডে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই জন্যই রক্ষণ সংগঠন মজবুত করতে চান কোচ ফেরান্দো। কার্ল ম্যাকহিউয়ের সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়ে নেওয়া এবং ফ্লোরেন্তিন পোগবা এবং ব্রেন্ডন হ্যামিলকে সই করানোতেই সেই বার্তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন: সন্দেশ থাকছেন বাগানেই! ছয় বিদেশির কোটা পূরণেও ফেরান্দোর ভাবনায় বিদেশি স্ট্রাইকার, কীভাবে
খবরের ভিতর খবর বলছে, ফেরান্দো ইতিমধ্যেই নিজের দুই ফার্স্ট চয়েস স্টপার ঠিক করে ফেলেছেন। সন্দেশ ঝিংগান বিদেশে খেলার প্রস্তাব না পেলে সবুজ মেরুন শিবিরেই থাকছেন। তাঁর সঙ্গে সেন্টার ব্যাক হিসাবে জুটি বাঁধতে চলেছেন ব্রেন্ডন হ্যামিল। ফেরান্দোর ৩-৫-২ ছকে ছয় নম্বর পজিশনে ডিফেন্সিভ মিডিও হিসাবে দেখা যাবে পোগবাকে।
উইং থেকে অপারেট করবেন হুগো বৌমাস। এবং আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার অথবা উইথড্রয়াল হিসাবে ব্যবহার করা হতে পারে জনি কাউকোকে। তবে প্ৰথম একাদশে কাউকো এবং বৌমাস-দুজনের মধ্যে একজনকে রেখে দল বাছতে হবে ফেরান্দোকে। আপফ্রন্টে থাকবেন লিস্টন কোলাসো-মনবীর সিং জুটি। তিরিকে জানুয়ারি পর্যন্ত আনরেজিস্টার্ড হিসাবে রেখে নতুন একজন বিদেশি স্ট্রাইকারকেও নেওয়ার কথা ভাবছেন হয়ত ফেরান্দো।
ঘটনা হল, তিরিকে কোনওভাবেই ছাড়ছে না এটিকে মোহনবাগান। ডেভিড উইলিয়ামস, রয় কৃষ্ণরা দল ছেড়েছেন। বিদেশি বিহীন আক্রমণে লিস্টন-মনবীররা কোচের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারবেন, সেটাই দেখার।