Advertisment

দেশে সুযোগ মিলল না, ভুটানের হয়ে খেলতে কলম্বো যাচ্ছে জলপাইগুড়ির ছেলে

"ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব উনিশ আইএফএ শিল্ডে ইংল্যান্ডের দলের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। এবার ভুটানের থিম্পু ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে এএফসি কাপ খেলতে ফেব্রুয়ারিতে কলম্বো যাচ্ছি।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

শিলিগুড়িতে খেলার সময়ে ভুটানের ক্লাব কর্তাদের নজরে পড়ে সুরজ

সুরজ রসাইলির নাম শুনেছেন? ফুটবলার সুরজ রসাইলি? না শুনলে অবাক হবেন না। এ রাজ্যে ফুটবল তো ডার্বির বাইরে নড়াচড়া করে না খুব একটা। সুরজ জলপাইগুড়ির ছেলে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। এবং এ দেশের নয়, ভুটানের হয়ে।

Advertisment

শিলিগুড়িতে এক প্রীতি ম্যাচে তার খেলা দেখে মুগ্ধ হন ভুটানের থিম্পু ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের কর্তারা। তারপর থেকেই তার জীবন অন্যরকম হয়ে যায়। তবে তার আগে অনেকটা ঝড়জল দেখতে হয়েছে সুরজকে।

আরও পড়ুন: ভারতীয় ফুটবলের অসুখসমূহ: পর্ব - ৩

সুরজের যখন ক্লাস থ্রি, সেই সময়েই অকস্মাৎ নিখোঁজ হয়ে যান তার বাবা, জলপাইগুড়ি এলআইসি-র কর্মী চন্দু রসাইলি। সংসারে নেমে আসে আঁধার। সুরজের খেলার খরচ শুধু নয়, ছিল অন্যান্য সন্তানদের মানুষ করার দায়িত্ব। সুরজের মা মিনতি বাড়ি বাড়ি কাজ করা শুরু করেন। ভাঙা বাড়িতে থেকে, অন্যের বাড়ির এঁটো বাসন পরিষ্কার করে চলতে থাকে মিনতির লড়াই।

publive-image ক্লাস ফাইভ থেকে ইস্ট বেঙ্গল অ্যাকাডেমির আবাসিক ছিল সুরজ

সুরজ ছোটবেলা থেকেই পাড়ায় ফুটবল খেলত। ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় থেকে ইস্ট বেঙ্গলের জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জ ফুটবল অ্যাকাডেমির আবাসিক হয়ে যায় সে। "ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব উনিশ আইএফএ শিল্ডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। এবার ভুটানের থিম্পু ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে এএফসি কাপ খেলতে ফেব্রুয়ারিতে কলম্বো যাচ্ছি।"

আরও পড়ুন, ভারতীয় ফুটবলের অসুখসমূহ: পর্ব - ২

মা মিনতি রসাইলি জানান, "আজ আমি সত্যিই খুব খুশি। ছেলে খেলতে কলম্বো যাচ্ছে। ওর বাবা নিখোঁজ হয়ে যাবার পর আমরা এলআইসি থেকে চাকরি বা অন্য কোনো সাহায্য পাইনি। ছেলেদের বড় করতে মানুষের বাড়ির এঁটো বাসন পর্যন্ত পরিষ্কার করতে হয়েছে। তাতেও আমার কোনো আক্ষেপ নেই। শুধু একটাই আক্ষেপ রইলো, দেশের কোনো ক্লাব ছেলেকে খেলায় নিল না।"

publive-image ভারতের কোনো দলে সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন দেখে চলেছে তরুণ এই ফুটবলার

সুরজের ছোটবেলার বন্ধু অঙ্কিত থাপা। তার বক্তব্য,  "সুরজ এএফসি কাপ খেলতে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছে বলে আমাদের পাড়ায় এখন খুশির হাওয়া। কিন্তু একটাই আক্ষেপ, দেশের কোনো ক্লাব সুরজকে দলে নিলো না। এবার অন্তত যদি এখানকার কোনো ক্লাব ওকে নেয়, তবে ওর মায়ের এতদিনের পরিশ্রমও সার্থক হবে।"

সুরজও দেশের হয়েই খেলতে চায়। তবে চাওয়া আর পাওয়ার ফারাক যে অনেক তা এই উনিশ বছরেই বুঝে গেছে সে। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে করতে বুঝে গেছেন তার মা, মিনতি রসাইলিও।

Football
Advertisment