/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/31/jemima-2025-10-31-10-36-46.jpg)
Jemimah Rodrigues:জেমাইমা রডরিগেজ।
Indian women’s cricket team: অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর বৃহস্পতিবার মাঠে দাঁড়িয়েই চোখে জল এসে গিয়েছিল জেমাইমা রডরিগেজের। ১৩৪ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের দুরন্ত ইনিংস যেন ছিল তাঁর জীবনের সমস্ত লড়াইয়ের প্রতিফলন। সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে পরাস্ত করতে তাঁর ব্যাট একাই যথেষ্ট ছিল। ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম নায়িকা হয়ে উঠেছেন এই মুম্বই কন্যা।
কিন্তু জেমাইমার আজকের এই সাফল্যের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। আগের বিশ্বকাপে দলে জায়গা পাননি তিনি। সেই সময়ের মানসিক যন্ত্রণা তাঁকে ভিতর থেকে ভেঙে দিয়েছিল। অনেকেই ভাবেননি, তিনি আর ফিরবেন আগের ফর্মে। কিন্তু জেমাইমা হাল ছাড়েননি। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে, প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলেছেন।
চলতি বিশ্বকাপেও প্রথম দিকের পারফরম্যান্সে ছন্দ না থাকলেও ধীরে ধীরে সব প্রতিপক্ষের চোখে ভয় হয়ে উঠেছেন তিনি। ব্যাট হাতে নেমে শান্ত মাথায় পরিস্থিতি বুঝে খেলার ক্ষমতাই তাঁকে আজকের এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- ইচ্ছাশক্তি আর প্রতিজ্ঞা’, এভাবেই গড়ে উঠেছে ভারতের মহিলা ক্রিকেটের গৌরবগাঁথা
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর ইনিংস কেবল রান নয়, ছিল এক প্রমাণ—সংগ্রাম, আত্মবিশ্বাস ও অদম্য জেদের প্রতীক। ম্যাচ শেষে জেমাইমার চোখের জল যেন বলছিল, “লড়াই কখনও বিফল হয় না।”
আজ তিনি শুধু দলের নায়িকা নন, ১৪০ কোটি ভারতীয় মেয়ের কাছে প্রেরণার আরেক নাম—জেমাইমা রডরিগেজ। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটার জেমাইমা রডরিগেজ আজ দেশের গর্ব। কিন্তু এই জেমাইমার আজকের অবস্থানে পৌঁছানো সহজ ছিল না। এক সময় মুম্বইয়ের ছোট্ট গলিতে শুরু হয়েছিল তাঁর ক্রিকেট যাত্রা—সেই যাত্রাপথ জুড়ে ছিল অসংখ্য বাধা, হতাশা ও ত্যাগের গল্প।
আরও পড়ুন-IND W vs AUS W Semifinal News: উৎসবে মেতেছে দেশ! মাঠে বসে কতজন লিখলেন ভারতের ইতিহাস?
শৈশব থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অদম্য ভালোবাসা ছিল জেমাইমার। বাবা ইভান রডরিগেজ নিজে একজন ক্রিকেট কোচ ছিলেন, যিনি মেয়েকে মাঠে নামতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। সমাজের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন—একটি মেয়ে কেন ক্রিকেট খেলবে? কিন্তু জেমাইমা শুনেছিলেন শুধু নিজের মন ও বাবার কথাই। সকাল থেকে রাত অবধি অনুশীলন, স্কুলের পরেও ব্যাট হাতে নেটে ঘন্টার পর ঘন্টা অনুশীলন—এইভাবেই গড়ে উঠেছিল এক ভবিষ্যতের তারকা।
২০১৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ভারতীয় দলে সুযোগ পান জেমাইমা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অভিষেকেই নজর কাড়েন তাঁর নির্ভীক ব্যাটিংয়ে। এরপর সময়ের সঙ্গে তিনি হয়ে ওঠেন ভারতের মিডল অর্ডারের অন্যতম স্তম্ভ। তবে মাঝেমধ্যে দলে জায়গা হারানো, ইনজুরি আর পারফরম্যান্সের চাপ—সবই এসেছে তাঁর জীবনের অংশ হিসেবে।
আরও পড়ুন-IND W vs AUS W Semifinal: ইতিহাস গড়ল টিম ইন্ডিয়া, 'দেশের গর্ব' বলে কুর্নিশ শচীন-সৌরভদের
তবুও হাল ছাড়েননি জেমাইমা। ২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে তাঁর ঝকঝকে পারফরম্যান্স ভারতের মহিলা দলের রূপালি সাফল্যের বড় কারণ ছিল। এরপর ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন তিনি, যা প্রমাণ করে—সংগ্রামই তাঁর সাফল্যের শক্তি।
আজ জেমাইমা শুধু একজন ক্রিকেটার নন, তিনি অনুপ্রেরণা—যে শিখিয়েছেন, স্বপ্ন যদি সত্যি বিশ্বাস করা যায়, তবে কোনও বাধাই অসম্ভব নয়।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us