/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/01/jemimah-rodrigues-1-2025-11-01-16-41-08.jpg)
Jemimah Rodrigues: জেমিমা রডরিগেজ।
Jesus & Jemimah Rodrigues: ওয়ার্ল্ড কাপ সেমিফাইনালে ভারতের হয়ে ম্যাচজেতানো ইনিংস খেলেছেন জেমিমা রডরিগেজ। ১২৭ রানের অনবদ্য ইনিংস শেষে তবুও তাঁর চোখে জল। কারণটা নিজেই সামনে এনেছেন। মাইক্রোফোন হাতে ফাঁস করেছেন সত্যিটা।
জেমিমার কথায়
গদগদ কণ্ঠে জেমিমা বলেছেন, 'আমি যিশুকে ধন্যবাদ জানাই। আমি নিজে থেকে কিছু করিনি। তিনিই আমাকে চালনা করেছেন।' এই একটা লাইন যেন প্রকাশ করে দিয়েছে, জেমিমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তিটা কী! সেটা যে আর কিছু নয়, বিশ্বাস- সেকথাই যেন প্রকাশ পেল এই স্বীকারোক্তিতে।
আরও পড়ুন- টেনিস ছাড়লেন ভারতের 'গ্র্যান্ড স্ল্যাম কিং' রোহন বোপন্না, ২০ বছরের দুর্দান্ত কেরিয়ারের অবসান
খেলাধুলার জগতে চাপ, প্রত্যাশা, ব্যর্থতা — সবকিছুই প্রতিদিনের সঙ্গী। খেলোয়াড়রা জানেন, মাঠে তাঁরা একা। তবুও কারও কাছে সেই একাকিত্বে আশ্রয় মেলে প্রার্থনায়, কারও কাছে ধ্যান, বিশ্বাসে। জেমিমা বলেন, 'প্রতিটি ম্যাচের আগে আমি প্রার্থনা করি। ঈশ্বর আমাকে শান্ত থাকতে শেখান। যখন আমি ব্যর্থ হই, তখনও আমি জানি, তিনি আমার পাশেই আছেন।'
আরও পড়ুন- ফাইনালে বদলে যাবে সবকিছু? বাদের খাতায় ভারতের তারকা ক্রিকেটার!
যাঁরা ঘনিষ্ঠ, তাঁরা জানেন যে জেমিমা রডরিগেজ ছোটবেলা থেকেই খুব আবেগপ্রবণ খেলোয়াড়। ব্যর্থতায় যেমন হতাশা প্রকাশ করতেন, সাফল্যে তেমনই উচ্ছ্বাস। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি যেন নিজের ভিতরের শক্তিকে খুঁজে পেয়েছেন প্রার্থনার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন- বাবাকে অপমানের যোগ্য জবাব, মেয়ে হয়ে প্রতিশোধ নিলেন জেমিমা!
এক সাক্ষাৎকারে জেমিমা বলেছেন, 'বিশ্বাস মানে কিন্তু এটা নয় যে সবকিছু ঠিকঠাক চলবে। এটার মানে হল যে যাই ঘটুক না কেন, আমি ঠিক আছি।' এই দৃঢ় মানসিকতাই তাঁকে ক্রিকেটের কঠিন দুনিয়ায় টিকে থাকতে সাহায্য করেছে বলেই মনে করছেন তাঁর অনুরাগীরা।
আরও পড়ুন- শ্রেয়সের চোট নিয়ে বিশাল বড় আপডেট, সমর্থকদের 'সুখবর' দিল বিসিসিআই
বিশ্বাস কেবল জেমিমার নয়। অনিশ্চয়তার এই ব্যাট-বল খেলায় ক্রিকেটারদের মধ্যে হামেশাই ভক্তির স্রোত দেখা গিয়েছে। সচিন তেন্ডুলকর নিজের ব্যাটের ব্যাগে ঈশ্বরের ছবি রাখতেন। সূর্যকুমার যাদব ব্যাটিংয়ে নামার আগে পাঠ করতেন হনুমান চালিশা। আর উসেইন বোল্ট প্রতিবার দৌড় শুরুর আগে ঈশ্বরকে স্মরণ করতেন। তারপর চোখ তুলে আকাশের দিকে তাকাতেন। এ যেন খেলাধূলার অদৃশ্য প্রেরণাশক্তি, যা খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের প্রেরণা।
প্রতিটি পেশাদার খেলোয়াড় জানেন, ব্যর্থতার পর ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক। জেমিমার মতে, 'ঈশ্বর বিশ্বাসই আমাকে বাস্তবের কাছাকাছি রাখে। যখন আমি হেরে যাই, তখনও আমি জানি, ঈশ্বরের পরিকল্পনাটা অনেক বড়।' এই বিশ্বাসই তাঁকে আত্মবিশ্বাসী রাখে এমনটাই জানিয়েছেন জেমিমা। তাঁর মতে, প্রতিটি ব্যর্থতাই এক নতুন শিক্ষার দিকনির্দেশ।
চলতি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের প্রয়োজন ছিল এক বড় ইনিংসের। সেই সময় জেমিমা ঠান্ডা মাথায় খেলেছেন। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে তিনি কেঁদে ফেলেন। ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার বলেন, 'যিশু সব সময় আমার সঙ্গে ছিলেন। যখনই আমার নার্ভাস লেগেছে, ওঁনার উপস্থিতি টের পেয়েছি।' সম্ভবত এই আস্থাই তাঁকে দিয়েছে এক অদ্ভুত শক্তি, যা ক্রিকেটীয় দক্ষতার বাইরেও এক ধরনের মানসিক স্থিতি তাঁর জীবনে তৈরি করেছে।
জেমিমা রডরিগেজের এই গল্প কেবল ক্রিকেটের নয়। এই গল্প আত্মবিশ্বাসের, আত্মসমর্পণের। আর এক বিশ্বাসের গল্প।
যে বিশ্বাস হয়তো বলের গতিপথ বদলায় না, কিন্তু খেলোয়াড়ের মন বদলে দেয়।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us