খবরটা পেয়েছিলেন সকালেই! তারপর হোয়্যাটসঅ্যাপে দুরুদুরু বুকে মেসেজ করেছিলেন যাঁর ঠিকানায়, তাঁর বাড়ি গ্রিঁজন-এ। প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই জবি জাস্টিন বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন গুরু আলেয়ান্দ্রো মেনেনডেজকে। স্প্যানিশ কোচের কাছেই যে সেলিব্রিটি হয়ে ওঠার হাতেখড়ি! ক্লাব বদলালেও গুরুকে ভোলেন কী করে!
জবি যুদ্ধে নাছোড় ইস্ট-এটিকে, বিতর্কের মধ্যেই তারকার গলায় উত্তেজনা
জবি-কাণ্ডের পরে এবার ফেডারেশনের সম্ভাব্য় শাস্তির মুখে ইস্টবেঙ্গল, তুঙ্গে সংঘাত
ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এক মরশুম বদলে দিয়েছে জবি জাস্টিনকে। কলকাতা লিগ, তারপর আইলিগে দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স! তারপর সুপারস্টার ফুটবলারের ঠিকানা এখন অ্যাটলেটিকো দ্য কলকাতা। আলেয়ান্দ্রো থেকে জবির নতুন কোচ অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস। এর মধ্যেই মে মাসে কেরল তারকা আবার জাতীয় দলের ক্যাম্পে যাওয়ার পাসপোর্টও পেয়ে গেলেন।
জাতীয় দলের নতুন কোচ ইগর স্টিমাচ দায়িত্ব নিয়েই কিংস কাপের জন্য রণকৌশল তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছেন। ২০ তারিখ থেকে দিল্লিতে যে প্রস্তুতি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানেই ৩৭ জনের দলে ডাক পেয়েছেন ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে যাওয়া তারকা। ক্রোয়েশিয়ান কোচের আস্থা অর্জন করেই জাতীয় দলে সুযোগ পেতে মরিয়া জবি জাস্টিন। ফরোয়ার্ড পজিশনে সুনীল ছেত্রী ছাড়াও রয়েছেন বলবন্ত সিং, সুমিত পাসসি, ফারুখ চৌধুরি, মনবীর সিং-রা।
শুরুতেই তাই গুরুর আশীর্বাদ চেয়ে নিয়েছেন জবি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে এটিকের নতুন তারকা বলছিলেন, "আলেয়ান্দ্রো স্য়ারকে প্রথমেই মেসেজ করেছিলাম। তবে এখনও উনি হোয়্যাটসঅ্যাপে মেসেজ দেখেননি।"
প্রথমবার জাতীয় দলের ক্যাম্পে। উত্তেজনার চোরাস্রোতে ভাসছেন লাল-হলুদ জনতার একসময়ের নয়নের মণি। প্রিয় বন্ধু ভিপি সুহের, মেন্টর বিজয়ন কিংবা বাড়ির লোক- প্রত্যেকেই ফোন করে অথবা মেসেজ করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের নিজস্ব হোয়্য়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেখানেও জনি অ্যাকোস্টা, টনি ডোভাল, এনরিকে-র মতো বিদেশিদের পাশে চুলোভা, ব্রেন্ডনদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন।
তবে জবি অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছেন স্পেশ্যাল মেসেজের জন্য। আলেয়ান্দ্রোর আশীর্বাদ পেতে কেন এত উদগ্রীব তিনি। জবি বলছিলেন, "আলেয়ান্দ্রো স্যার নিজের হাতে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন ম্যাচের পর ম্যাচ। আমার এত সাফল্যের পিছনে ওঁর অবদানও কম নেই। অনুশীলনে উনি আমাকে নিয়ে আলাদা করে সময় দিতেন। হয়তো ইস্টবেঙ্গলে নেই। তবে ওঁর আশীর্বাদ নিয়েই দিল্লি যেতে চাই।"
জবি-র নতুন স্প্যানিশ কোচ হাবাসও ছাত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জবি যখন জানাচ্ছেন, "হাবাস স্যারের কোচিংয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।" তখন স্পেন থেকে হাবাস আবার জানিয়ে দিলেন, "জবি ভাল ফুটবলার। ওঁর খেলা দেখেছি। আমার কোচিংয়ে আরও ভাল খেলবে বলেই আশা করি।"
স্প্যানিশ কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেনডেজ আইলিগ চলাকালীন সাংবাদিক সম্মেলনে একসময় প্রায়ই বলতেন, ‘‘জবির এ বার জাতীয় দলে ডাক পাওয়া উচিত।’’ রীতিমতো মন্ত্রের মতো ম্যাচের পর ম্যাচ আওড়ে গিয়েছেন এই 'শ্লোক'। তবে প্রিয় ছাত্র যখন জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেলেন, তখন জবি-র জার্সিটা যা পালটে গিয়েছে। ভালবাসা, স্নেহ রয়ে গিয়েছে একই ভাবে।