Advertisment

মেসিকে সেরা বলা অ্যাকোস্টার ভারতীয় ফুটবল নিয়ে ধারণাই নেই

শুধু নেইমারই নয়, মেসির বিরুদ্ধেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে অ্যাকোস্টার। সাত বছর আগে কোপা আমেরিকায় আর্জেন্তিনা তিন গোলে হারিয়েছিল কোস্টা রিকাকে। সেই ম্যাচে খেলেছিলেন অ্যাকোস্টা। তাঁর মতে মেসিই সেরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Johnny Acosta

মেসিকে সেরা বলা অ্য়াকোস্টার ভারতীয় ফুটবল নিয়ে ধারণাই নেই। ছবি-ফেসবুক/ইস্টবেঙ্গল সমাচার

আর এক বছর পরেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করবে পদ্মাপারের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল। এবং শতবর্ষের প্রাক্কালে ইতিহাস লিখে ফেলছে লাল-হলুদ। কলকাতা লিগের মাঝেই তারা চলতি বিশ্বকাপারকে সই করিয়ে চমকে দিয়েছে। সদ্যসমাপ্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলে আসা কোস্টা রিকার ডিফেন্ডার জনি অ্যাকোস্টা জামোরা যোগ দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলে। বছর পঁয়ত্রিশের পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চির এই সেন্টার ব্যাকই এখন ইস্টবেঙ্গলের যাবতীয় লাইমলাইটে।

Advertisment

গত বুধবার অ্যাকোস্টার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে মিডিয়ার আলাপচারিতার পর্বটা সেরে নিতে চেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল। কিন্তু ভাষার সমস্যায়, বলা ভাল দোভাষী না-থাকায়, সাংবাদিক বৈঠকটাই ভেস্তে গিয়েছিল। অ্যাকোস্টা শুধুই স্প্যানিশ বোঝেন, অন্য কোনও ভাষা নয়। ইস্টবেঙ্গল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের ড্যামেজ কন্ট্রোল করে ফের অ্যাকোস্টাকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে। এবার অবশ্য গুগুল ট্রান্সলেটর নয়, ঠিকঠাক দোভাষীকে আনিয়েই হলো লাল হলুদের দু’নম্বর জার্সিধারীর সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব।

আরও পড়ুন: পুলিশ আটকাতে পারল না ইস্টবেঙ্গলকে

গত ২২ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গের কিরোভ স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-কোস্টা রিকা। ৯০ মিনিট পর্যন্ত নেইমারদের আটকে রেখেছিল অ্যাকোস্টার দেশ। কিন্তু ৯১ মিনিটে ফিলিপ কুটিনহো ও ৯৭ মিনিটে নেইমারের গোলে ব্রাজিল ম্যাচটা ২-০ জিতে নিয়েছিল। সেদিন নেইমারকে রুখে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকোস্টাই। নব্বই মিনিট পর্যন্ত নেইমারদের রুখেও, তীরে এসে তরী ডুবেছিল কোস্টা রিকার। সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অ্যাকোস্টা। বলেন, "নেইমার কেন, গোটা ব্রাজিল দলের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতাই বেশ ভাল। ওদের নব্বই মিনিট আটকে রেখেও অতিরিক্ত সময়ের দু’গোলে হেরে গেলাম। এই আফসোসটা রয়ে গেল।" নেইমারের প্লে-অ্যাক্টিং নিয়েও প্রচুর কথা হয়েছিল রাশিয়াতে। অ্যাকোস্টা বললেন, "আমি ওসব খেয়ালই করিনি। আমি খেলাতেই ফোকাস করেছিলাম।"

Johny Acosta and Neymar নেইমারকে রুখে দেওয়ার পথে অ্যাকোস্টা

শুধু নেইমারই নয়, মেসির বিরুদ্ধেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে অ্যাকোস্টার। সাত বছর আগে কোপা আমেরিকায় আর্জেন্তিনা তিন গোলে হারিয়েছিল কোস্টা রিকাকে। সেই ম্যাচে খেলেছিলেন অ্যাকোস্টা। তাঁর মতে মেসিই সেরা। যদিও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, মেসির মতো অনেক ফুটবলারকে দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হন, যেহেতু তিনি ডিফেন্ডার সেহেতু সেরা ফুটবলার হিসেবে কিংবদন্তি ইতালিয়ান পাওলো মালদিনিকেই বাছলেন অ্যাকোস্টা।

অ্যাকোস্টা ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার যিনি বিশ্বকাপ খেলেই কলকাতা লিগের মতো তৃতীয় শ্রেণির একটা লিগে খেলবেন। ইতিমধ্যে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন অ্যাকোস্টা বিশ্বের অন্য কোনও লিগে না খেলে ইস্টবেঙ্গলে খেলতে এলেন! অ্যাকোস্টা বললেন, "অন্য দেশ, অন্য সংস্কৃতির স্বাদ পেতেই এই দেশে আসা।" আইএসএল খেলবেন কি খেলবেন না, এসব ভেবে তিনি ভারতে আসেননি। অ্যাকোস্টা জানিয়েছেন, ইস্ট বেঙ্গল খুব বড় ক্লাব, এটা শুনেই তিনি এদেশে এসেছেন। এছাড়াও আইএসএল-এ কোচিং করানো আলেসান্দ্রো গুইমারেসেরও তাঁকে বলেছেন ইস্ট বেঙ্গলে খেলতেই পারেন তিনি।

আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের মাথায় হকি স্টিক ভাঙতে গিয়েছিলেন মোহনবাগান রত্ন 

ইস্ট বেঙ্গল বনাম পুলিশ ম্যাচে সাইডলাইনে বসে খেলা দেখেছেন অ্যাকোস্টা। ওটাই তাঁর দেখা প্রথম ভারতীয় ফুটবল ম্যাচ। কোনও ভনিতা না-করে অ্যাকোস্টা খোলাখুলি বলে দিলেন, ইস্টবেঙ্গল কেন, ভারতীয় ফুটবল সম্বন্ধেই তাঁর সেই অর্থে কোনও ধারণা নেই। অ্যালভিটো ডি কুনহার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। আর সুভাষ ভৌমিককে শুধু বলেছেন তিনি কী করতে চান। এছাড়া দলের আর কোনও বিদেশি ফুটবলারের সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। এখন একটাই প্রশ্ন উঠে আসছে, অ্যাকোস্টা কবে মাঠে নামবেন? তিনি বলছেন, "আমি পুরো ফিট, কিছু কাগজপত্রের বিষয় রয়েছে। সেটা মিটে গেলেই মাঠে নামতে পারব।"

Johny Acosta কথার ফাঁকে হাসি মুখে অ্যাকোস্টা। ছবি: ফেসবুক/ইস্টবেঙ্গল সমাচার

অ্যাকোস্টার থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই কাদামাখা মাঠে খেলতে তাঁর কোনও অসুবিধা হবে কি না। পেশাদার ফুটবলারের উত্তর এলো, “না’’। ভারতে সফল হওয়ার প্রসঙ্গে অ্যাকোস্টা বলছেন, "আমি মাঠে না নামলে বুঝতে পারব না, দলের ফর্মেশন কী, বা কেমন ভাবে খেলা হচ্ছে। আগে খেলার সম্বন্ধে একটা ধারণা তৈরি হোক, তারপর বুঝতে পারব।”  

আরও পড়ুন: মোহনবাগানকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতল ইস্টবেঙ্গল

অন্যদিকে ভাষার সমস্যাতে এই প্রথম পড়লেন বলেও মন্তব্য করলেন অ্যাকোস্টা। সঙ্গে এও জানালেন, তিনি আশাও করেন না, বিশ্বের অন্য প্রান্তে এসে স্প্যানিশভাষী মানুষদের পাবেন তিনি। তবে খেলার সময় অ্যাকোস্টার ভাষা নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেই জানালেন বিশ্বকাপার। তাঁর মতে, খেলার একটা আলাদা ভাষা থাকে।

২০১৪ সালে ব্রাজিলে ও ২০১৮-তে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ খেলেছেন অ্যাকোস্টা। ব্যাক-টু-ব্যাক শ্রেষ্ঠ ফুটবলের আসরে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। জানতে চাওয়া হয়েছিল কোনটা সেরা? অ্যাকোস্টার উত্তর, "ব্রাজিলে আমরা শেষ আটে উঠেছিলাম, কিন্তু রাশিয়ায় গ্রুপ লিগেই ছিটকে গিয়েছিলাম। ফলে ব্রাজিলই সেরা।"

বিশ্বকাপের আসরে কেন দীর্ঘদিন দক্ষিণ আমেরিকার কোনও দেশকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখা যাচ্ছে না? অ্যাকোস্টার একটাই উত্তর, "ইউরোপের প্রস্তুতি অনেক ভাল।" সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মরসুমের প্রথম ডার্বি হওয়ার কথা রয়েছে। অ্যাকোস্টা ডার্বির বিষয়ও ওয়াকিবহাল নন, তিনি পরিচিত এল-ক্লাসিকোর সঙ্গে। এমনটাই বললেন তিনি।

Eastbengal
Advertisment