বিশ্বকাপে খেলেছেন। নেইমারদের বিরুদ্ধে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁকে যে যেভাবে ভারতে এসে আতান্তরে পরে যেতে হবে। ভাবতেও পারেননি। বেতন পাননি, থাকার কোনো জায়গা নেই। বাড়িতে ফেরার ফ্লাইট টিকিটও নেই। জনি একোস্টা আপাতত মাথা গোজার ঠাঁই হিসাবে বেছে নিয়েছেন নয়া দিল্লির কোস্টারিকার এমব্যাসি।
একোস্টার ম্যানেজার হোসে লুইজ রদ্রিগেজ সরাসরি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে জানিয়ে দিলেন, খুবই খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে ক্লাবের তরফ থেকে। চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সময়ের আগেই ফ্ল্যাট খালি করে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বেতনের দুমাসের টাকা এবং ফ্লাইটের টিকিটও দেওয়া হয়নি।
রদ্রিগেজ আপাতত ক্ষোভে ফুঁসছেন। বলে দিয়েছেন, ক্লাবের বিরুদ্ধে সরাসরি ফিফায় যাবেন তারা। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলের তরফ থেকে দায় ঝেড়ে ফেলার ইঙ্গিত। বলা হয়েছে, ফুটবলারের চুক্তি ছিল ক্লাবের প্রাক্তন ইনভেস্টরের সঙ্গে।
রদ্রিগেজ বলছিলেন, “জনি কোস্টারিকায় খুব জনপ্রিয় ফুটবলার। দুটো বিশ্বকাপ খেলেছে। ওকে অন্তত কিছুটা সম্মান দিতে পারত ক্লাব। খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে একোস্টা। ক্লাবের ব্যবহারে ভীষণ হতাশ ও।আপাতত ও কিছুটা ভালো আছে। কারণ দিল্লির কোস্টারিকার এমব্যাসিতে রয়েছে। শনিবারই হয়ত দেশে ফেরার ফ্লাইটে উঠবে ও।”
কোয়েসের পক্ষ থেকে আচমকাই মহামারীর কারণ দেখিয়ে সময়ের একমাস আগেই চুক্তিছিন্ন করে ফেলা হয়। একোস্টার ম্যানেজার বলছিলেন, “এই পরিস্থিতির উপর কারোর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে ক্লাব একটু সদয় হতে পারত।”
পাশাপাশি তিনি চুক্তির কাগজ দেখিয়ে জানাচ্ছিলেন, ফুটবলারদের দেশ থেকে ভারতে আনা এবং দেশে ফেরানোর পুরো দায়িত্বটাই ক্লাবের।
এই নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে খেলতে কলকাতায় এসেছিলেন জনি অ্যাকোস্টা। ২০১৮ র এক মরশুম লাল হলুদ জার্সিতে মাঠ মাতিয়ে গিয়েছিলেন এর আগে। তবে পরের বছর সমস্যায় পড়ায় ফের একবার অ্যাকোস্টাকে নেয় ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় দফায় খেলতে এসেও মনোমালিন্যের শুরু। কোস্টারিকার বিশ্বকাপারের এজেন্ট জানাচ্ছিলেন, “ওদের স্বভাব এবার অস্বাভাবিকভাবে পাল্টে গেছে। জনি প্রথমবার খেলতে এসে ক্লাবের ব্যবহারে সন্তুষ্ট ছিল, সেই কারণেই দ্বিতীয়বার এখানে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সময় ওদের দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি।”
চুক্তি আচমকা ছেঁটে ফেলে অ্যাকোস্টাকে ফ্ল্যাটের চাবি দিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। দেশে ফেরার ফ্লাইটের টিকিটও দেওয়া হয়নি। তাই এমন পরিস্থিতিতে ফ্ল্যাট ছাড়তে রাজি ছিলেন না বিশ্বকাপার। রদ্রিগেজ বলেন, “অ্যাকোস্টা রাস্তায় থাকবে, এমনটা কি ওরা আশা করেছিল?”
ইস্টবেঙ্গলের সচিব কল্যাণ মজুমদার জানান, “অ্যাকোস্টার চুক্তির সঙ্গে আমাদের কিছু করার নেই। কোয়েসের সঙ্গে ওর চুক্তি হয়। আমার কাছে যেটুকু তথ্য রয়েছে, তাতে জানি ও এখন কোস্টারিকায় ফিরে গিয়েছে।”
কোয়েস কর্পের চেয়ারম্যান অজিত আইজাক জানান, “ক্লাবের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এই বিষয়ে কিছু বলব না।”
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে অ্যাকোস্টাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে দিল্লির কোস্টারিকার এমব্যাসি। কলকাতা থেকে দিল্লিতে মালপত্র সমেত তারকাকে আনার কাজ করেছেন দূতাবাসের আধিকারিকরা। সেখানেই আপাতত আস্তানা গেড়েছেন নেইমারকে সামলানো ডিফেন্ডার। অপেক্ষা করছেন দেশের ফ্লাইটের।