আইলিগের ভবিষ্যতকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে অতল গহ্বরে। সুপার লিগের প্রধান আয়োজককারী সংস্থার চাপে ফেডারেশন দেশের এক নম্বর লিগের মান্যতা কার্যত দিয়ে দিয়েছে আইএসএল-কে। এমন অবস্থায় অস্তিত্বরক্ষার যুদ্ধে অবতীর্ণ একসময়ের জাতীয় লিগ তথা বর্তমান আইলিগ। এমন অবস্থায় দেশের শাসক দলের পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের দ্বারস্থ হল কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন দুই ক্লাব- ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান।
কলকাতার হিন্দুস্থান ক্লাবে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে এদিন আলোচনায় বসেন দুই ক্লাবের প্রতিনিধিরা। ইস্টবেঙ্গলের তরফে উপস্থিত ছিলেন শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত এবং দেবব্রত সরকার। অন্যদিকে, মোহনবাগানের প্রতিনিধি ছিলেন সৃঞ্জয় বসু এবং দেবাশিস দত্ত। পুরো বৈঠকটি আয়োজন করেন দুই প্রধানে খেলা কল্য়াণ চৌবে।
আরও পড়ুন মাদারের কলকাতা এখনও হৃদয়ে, সাক্ষাৎকারে অকপট মেসি-মারাদোনার আদরের ‘বুরু’
এর আগে একাধিকবার আইলিগের ক্লাব জোট নিজেদের মধ্যে আলোচনা সেরেছে। কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি-র চেয়ারম্যান অজিক আইজ্যাক, বাগানের দুই শীর্ষ কর্তা দেবাশিস দত্ত-সৃঞ্জয় বসু, মিনার্ভার কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ ছিলেন সেই আলোচনায়। সঙ্গী হয়েছিল গোকুলম, নেরোকার মতো ক্লাবও।
তবে ক্লাব জোটের অনঢ় মানসিকতাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। ফেডারেশনের আইএসএল-কে দেশের একনম্বর লিগের স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা এখন। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি লেখা হয়েছে। তবে এবারে কেন্দ্রীয় শাসকদলের রাজ্যস্তরের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে ফেডারেশনকে কার্যত বার্তা দিয়ে দেওয়া হল, এত সহজে হাল ছাড়ছে না তাঁরা।
সভায় উপস্থিত থাকা শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চাইছি না আমরা। তবে ফেডারেশনের বিমাতৃসুলভ আচরণের জন্য এবার আমরা আলোচনা করতে বাধ্য হয়েছি। এটা কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নয়। বহুবছরের ঐতিহ্যশালী আইলিগকে শেষ করে দেওয়ার জন্য ফেডারেশন যা করেছে, তা আমরা জানিয়েছি কৈলাশজিকে। উনি প্রফুল্ল প্যাটেলের বন্ধুস্থানীয়। তাই ওঁর মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হল।"
সভায় কী নিয়ে আলোচনা হল? লাল-হলুদ কর্তা বলছেন, "মোহনবাগান ও আমাদের সমস্য়া একই। তাই আমরা একযোগে ওঁর কাছে জানিয়েছি, সাম্প্রতিককালে আমরা কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। উনি আমাদের কথা শুনেছেন। আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা যে চিঠি পাঠিয়েছিলাম, তার এক কপি-ও তুলে দেওয়া হয়েছে ওঁর কাছে।"
পরে দুই প্রধানে খেলা ফুটবলার কল্য়াণ চৌবে বলছিলেন, "আইলিগকে দ্বিতীয় ডিভিশনে নামিয়ে দেওয়া হবে, এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই দেশের ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে চেষ্টা করছি আইলিগকে যাতে সমস্য়ার মুখে পড়তে না হয়।"
জানা গিয়েছে, বৈঠক চলেছে প্রায় ঘণ্টাখানেকের কাছাকাছি। সেই সভায় দুই ক্লাবই তাঁদের অনুযোগ ব্যক্ত করেছেন। ইস্টবেঙ্গল চলতি বছরেই শতবর্ষে পদার্পণ করছে, এই বিষয়েও জানানো হয়েছে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে।