লড়াই এখন দ্বিমুখী। কল্যাণ চৌবে বনাম বাইচুং ভুটিয়া। কলকাতা ময়দানের দুই চিরচেনা মুখ এবার দেশের ফুটবলের কুর্সি দখলের দৌড়ে ।
তবে মাঠের খেলার মধ্যেই ঢুকে গিয়েছে রাজনৈতিক খেলা-ও। 'খেলা হবে' স্লোগানের মধ্যেই তীব্র আপত্তি এবার বাইচুংয়ের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে সরাসরি পাহাড়ি বিছে বলে দিলেন, "ভীষণভাবে বিশ্বাস করি ভারতীয় খেলাধুলা প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব, হস্তক্ষেপে। এখন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্রব নেই আমার। ২০১৪-য় তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করেছি। আট বছর রাজনীতির বাইরে। তাই যে কোনও রাজ্যে যে কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে ফুটবলের উন্নয়নের জন্য যেতে পারব। যে কোনও রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে পারব।
আরও পড়ুন: কনস্টানটাইনকেই কেন কোচ বাছল ইস্টবেঙ্গল! ডার্বির আগে কারণ জানিয়ে দিলেন ডি রাইডার
বিষ্ফোরক ফোনালাপে বাইচুংয়ের অভিযোগ স্রেফ ফুটবল-ই নয়, অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রেও রাজনীতিকরণ ঘটেছে। তিনি বলে দিলেন, "শুধু ফুটবলেও নয়, অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক প্রভাবের ব্যাপার ঘটছে। ফেডারেশনের এই নির্বাচন রাজনৈতিক পার্টির মধ্যে না রেখে ফুটবলকেই জেতানো হোক। ভবিষ্যতের ফুটবলার অথবা সেই শিশুদের কথা ভাবা হোক যারা বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখে। পুরো বিষয়ে রাজনৈতিক ছোঁয়াচ চলে আসায় ফুটবল-ই ব্যাপকভাবে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"
একের পর এক বিধ্বংসী ফোনালাপে বাইচুং জানালেন, দু-একটি রাজ্য সংস্থার কয়েকজন কর্তা অন্যদের বুলডজ করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনে বাকিদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। "দু-একটা রাজ্য ফুটবল সংস্থা বাকিদের বুলডজ করতে চাইছে। আলাদা ঘরে নথিপত্র সইয়ের কাজ চালানো হচ্ছে। এটা লজ্জার। এরাই ভারতীয় ফুটবল ধ্বংসের ক্ষ্য করছে।"
ফিফার নির্বাসনের অমাবস্যায় পড়েছে ভারতীয় ফুটবল। এমন অন্ধকার সময়ে তিনিই আলোর পথের সন্ধান দিতে পারেন মনে করেন ভারতীয় ফুটবলের পোস্টার বয়। বাইচুং জানাচ্ছেন, "ফিফা নির্বাসনের পরে এখন ভারতীয় ফুটবলের পুনরুত্থান ঘটানোর এটাই সেরা সময়। ফুটবলের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা, পরিকল্পনা রয়েছে এমন ব্যক্তিদেরই ম্যানেজমেন্টে আসা উচিত। আমি সেই কাজ করতে পারি। কারণ আমার মধ্যে ফুটবল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রয়েছে, অভিজ্ঞতা রয়েছে।"
আরও পড়ুন: ডার্বিতে ফেভারিট বাগান-ই! লাল-হলুদ কর্তাদের ঠুকে বিষ্ফোরক প্রাক্তন মর্গ্যান
বন্ধু কল্যাণের সঙ্গে তাঁর কোনওরকম বৈরিতা নেই। বরং তিনি সোজাসুজি বলছেন, কল্যাণ দারুণ মানুষ। আমার খুব ভালো বন্ধু। তবে ওঁকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। আজকের কাগজে দেখলাম কল্যাণ বলেছে, প্রত্যেক রাজ্যে হাজার স্কোয়ার ফুট অফিস বানাতে হবে। তবে সেটা এখন অগ্রাধিকার নয়। তৃণমূল স্তর থেকে ফুটবলের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আমি প্ৰথমেই গ্রাসরুট ডেভেলপমেন্টের ক্ষ্য করতে চাইব। প্রত্যেক রাজ্য ফুটবল সংস্থায় উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তুলব।"
বাইচুং ভুটিয়া নাকি প্রয়াত অঞ্জনের জামাতা কল্যাণ- ভারতীয় ফুটবলের মসনদে কে বসেন, তা আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা।