Sanju Samson & Vijay Hazare Controversy: বিজয় হাজারে ট্রফিতে না খেলার জন্য সঞ্জু স্যামসনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন কেরল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেসিএ)-এর সভাপতি জয়েশ জর্জ। তিনি ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারের উদ্দেশে বলেছেন, 'তোমার ইচ্ছা হল, আর তুমি কেরলের হয়ে খেলতে চলে আসবে, এটা হবে না।' বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম-সচিব জর্জ আরও জানিয়েছেন যে গোটা বিষয়টাতে বিসিসিআই নজর রাখছে। শনিবার সকালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল নির্বাচনের আগে বিসিসিআইয়ের সিওও হেমাঙ্গ আমিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি বিজয় হাজারে ট্রফি টুর্নামেন্টে সঞ্জু স্যামসনের অনুপস্থিতির ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেন।
শনিবার ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করেছে। সেখানে সঞ্জু স্যামসন জায়গা পাননি। আর, তারপরই স্যামসনকে জর্জ সমালোচনার বাণে ভরিয়ে দিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে কেরল দলের নেতৃত্ব দেন সঞ্জু। তিনি ৫০ ওভারের টুর্নামেন্টের আগে কেরলের তিন দিনের প্রস্তুতিমূলক ক্যাম্পে অনুপস্থিত ছিলেন। এই ব্যাপারে কেসিএ সচিব বিনোদ এস কুমার ১৮ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'সঞ্জু একটি ইমেল পাঠিয়েছিল। জানিয়েছিল যে ও ক্যাম্পে থাকতে পারবে না। ওঁকে ছাড়াই আমরা ওয়ানাদে কেরল দলের একটি ছোট ক্যাম্প করি। আমরা ওই ক্যাম্প থেকেই দল বেছেছি। ফলে সঞ্জুকে দলে রাখা হয়নি।'
তবে কেসিএ সচিব একথা বললেও, ওয়ানাদ ক্যাম্পে না থাকা আবদুল বাজিথ ও আদিত্য সারভাতের মতো একাধিক খেলোয়াড়কে বিজয় হাজারে ট্রফি (ভিএইচটি) স্কোয়াডে রেখেছিল কেসিএ। ফলে, কেসিএ কর্তাদের ক্যাম্পে না আসায় সঞ্জুকে বাদ দেওয়ার দাবি ঘিরে প্রশ্ন উঠছেই। ২৩ ডিসেম্বর বরোদার বিরুদ্ধে কেরলের প্রথম গ্রুপ-পর্বের ম্যাচের পর, কেরালা ওই স্কোয়াডই ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তার আগেই অবশ্য স্যামসন জানিয়েছিলেন, তিনি টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলোয় খেলতে পারবেন। এই ব্যাপারে কুমার ২৬ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'সঞ্জু আমাদের জানিয়েছিল, পরের ম্যাচগুলোয় ও থাকতে পারবে। আমরা তারপর আর ওঁকে দলে নিইনি। হায়দরাবাদে গোটা দলটাই আছে। মাত্র দুটি ম্যাচ হয়েছে। আমরা বদলাতে চাই না।'
কিন্তু, তাঁর সচিব এসব বলার পরও কেসিএ সভাপতি স্যামসনকে তুলোধনা করলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, স্যামসনকে বিজয় হাজারে থেকে বাদ দিলেন কেন? জবাবে জর্জ বলেছেন, 'বিজয় হাজারে ট্রফিতে ওঁকে দলে না রাখার কারণ, ও একলাইনের মেসেজ পাঠিয়েছিল। লিখেছিল যে ৩০ সদস্যের প্রস্তুতিমূলক শিবিরে থাকতে পারবে না। আমরা ভেবেছিলাম, ও দলের নেতৃত্ব দেবে। কারণ ও আমাদের সাদা বলের অধিনায়ক। সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতেও (এসএমএটি) দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল।'
জর্জ বলেন, 'আমরা সেসব ভেবেই দল ঘোষণা করেছিলাম। কিন্তু, তারপর ও ওই ইমেলটা করে। সঞ্জুই হোক বা অন্য কেউ, কেসিএ-র একটি গাইডলাইন আছে। সেটাকে মানা উচিত। আমরা সবাই জানি যে সঞ্জুর দলে ঢোকার জন্য কোনও শিবিরের দরকার নেই। তবে, চাইলেই ও কেরল দলের হয়ে খেলতে পারবে না। স্যামসন ভারতীয় টিমে গেছে এই কেরলের দৌলতে, কেসিএ-র মাধ্যমে। এখন সেই কেরল দলেই ইচ্ছামত আসবে আর খেলবে, এসব বরদাস্ত করা হবে না। হেমাঙ্গ আমিন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে স্যামসনের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না? আমি বলেছি না। হ্যাঁ, বললে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ওঁর নামই আলোচনায় আসত না।'
আরও পড়ুন- লখনউয়ের ক্যাপ্টেন এবার দিল্লির প্রাক্তন অধিনায়ক? আইপিএলের আগেই ব্যাপক শোরগোল
জর্জের মন্তব্য সামনে আসার পর পালটা মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তিনি স্যামসনের কেরিয়ার নষ্টের চেষ্টার জন্য কেসিএ-র সমালোচনা করেছেন। এই প্রসঙ্গে থারুর বলেছেন, 'কেরল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং সঞ্জু স্যামসনের কাহিনি শুনে বেশ খারাপ লাগল। সঞ্জু জানিয়ে দিয়েছিল যে ও বিজয় হাজারে ট্রফি টুর্নামেন্টের ক্যাম্প থাকতে পারবে না। তারপরও ওঁকে কেরল দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন তো সঞ্জুকে ভারতীয় দল থেকেই বাদ দেওয়া হল। সঞ্জুকে বাদ দেওয়ার পর কেরল বিজয় হাজারের কোয়ার্টার ফাইনালেও পৌঁছতে পারেনি। এনিয়ে কেসিএ কর্তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই!'
অবশ্য ওয়ানডে দলে রাখা না হলেও সঞ্জুকে ৫ ম্যাচের টি২০ সিরিজে ভারতীয় দলে রেখেছেন নির্বাচকরা। এই সিরিজ ২২ জানুয়ারি কলকাতায় শুরু হতে চলেছে।