করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে, এমন সূত্র মেনেই ইউরোপে চালু হয়ে গিয়েছে ফুটবল লিগ। ইন্ডিয়ায় ক্রিকেট কর্তারা চাইছেন, অতিমারীর ঢেউ কেটে গেলে আইপিএলের মাধ্যমেই যেন খেলার মরশুম শুরু করা যায়।
টি২০ বিশ্বকাপের ভাগ্য সরকারিভাবে এখনো ঘোষণা না করা হলেও, সম্ভবত স্থগিত করার পথেই হাঁটবে আইসিসি। সেই উইন্ডোতে অক্টোবর-নভেম্বরে টি২০ বিশ্বকাপের আয়োজন করতে পারে বিসিসিআই। বোর্ড ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে রেখেছে।
আইপিএল আয়োজন নিয়ে কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইশোর অন্য পরিকল্পনার সন্ধান দিলেন। জানালেন, মুম্বইয়ের মত বড় শহরে আইপিএল আয়োজন করা যেতে পারে। চারটে আন্তর্জাতিক মাঠ রয়েছে। পুনে ধরলে পাঁচটি। প্রত্যেক টিম নিজস্ব মাঠকে বেস করে খেলতে পারে।
তবে মুম্বই নিজেই যেখানে করোনায় ব্যতিব্যস্ত, সেখানে ভেঙ্কির পরিকল্পনা কতটা কাজে আসবে বলা মুশকিল।
আপাতত টি২০ বিশ্বকাপ নিয়ে নিয়ামক সংস্থা আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে বিসিসিআই। সেই বিষয়ের নিষ্পত্তি হয়ে গেলেই বোর্ডের তরফে ৪০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা মেনে কীভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। এমনটাই জানিয়েছিলেন কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল। এর আগে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইপিএল চেয়ারম্যান ব্রিজেশ প্যাটেল জানিয়েছিলেন, সমস্ত অপশন ই খোলা রাখছে বোর্ড।
যাইহোক, আইপিএল আয়োজনের জন্য অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজিই চাইছে, বিদেশিদের ছাড়াই লিগ চালু হোক। এই নিয়ম আবার চাইছেন না কেকেআর সিইও ভেঙ্কি মাইশোর। তাঁর বক্তব্য, আইপিএলের নিজস্ব ব্যান্ড রয়েছে বিশ্বের কাছে। বিদেশিদের ছাড়া আইপিএল জৌলুস হারাবে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলের সিইও উদয়শঙ্কর বলেছেন, "ওদের চার্টার্ড প্লেনে করে আনা যেতে পারে। আগে ওরা টুর্নামেন্টের দু-দিন আগে আসতো। এখন দু-সপ্তাহ আগে আসতে হবে। তারপর কোয়ারেন্টাইন পর্ব কাটিয়ে খেলতে নামানো হোক। অনুশীলন করার সময়ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।"
ঘটনা যাইহোক, ক্লোজড ডোর আইপিএল হলে তাঁর অর্থনীতি কেমন হতে পারে, সেই বিষয়েই খতিয়ে দেখছে বোর্ড। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কী আইপিএল আয়োজন করা সম্ভব? বোর্ডের প্রাক্তন প্রশাসক রত্নাকর শেট্টি জানিয়েছেন, প্রত্যেক দলের থাকার বন্দোবস্ত করা, হোটেল থেকে মাঠে আনা, গ্রাউন্ডসম্যান থেকে প্রোডাকশন টিমের সবার খোঁজ রাখা খুব কঠিন। এটা যে একদম অসম্ভব তা নয়।তবে সাধারণের জন্য যে নিয়ম প্রযোজ্য হবে তা তারকা ক্রিকেটারদেরও মেনে চলতে হবে। তিনি আরো বলছেন, "স্কোয়াডের সদস্য সংখ্যা কমাতে হবে। সাংবাদিক সম্মেলন অনলাইনে করতে হবে। ম্যাচের আগে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না।"
মাইশোর আবার বলছেন, ক্রিকেট খেলার এমনিতেই সুবিধা অনেক। বড় মাঠে প্রতিপক্ষের এগারো জনের বিরুদ্ধে মাত্র দুজন ব্যাটসম্যান এবং দুই আম্পায়ার থাকে।
ক্রিকেট নিয়ে এই আলোচনা শুনলে আবার বোর্ডের অন্য প্রাক্তন প্রশাসক নিরঞ্জন শাহ জানিয়ে দেন, "এমন সময়ে আগে কখনও আসেনি। ক্রিকেট নিয়ে এমন আলোচনা পুরোটাই হাস্যকর। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দেওয়া হোক। একজন ক্রিকেটারও এই ভাইরাসের কবলে পড়ুক, সেই ঝুঁকি কি নেওয়া যায়!"