Advertisment

'ভবিষ্যতে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের আর বিদেশি ফুটবলার লাগবে না'

"প্রতিযোগিতা মূলক ফুটবল তো পরে হবে। আগে বাচ্চারা আনন্দের সঙ্গে মাঠে আসুক। খেলাটাকে ভালবাসুক। এটা বলতে পারেন একটা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Baby league cover

বেবি লিগের অনুষ্ঠানে মহম্মদ রফিক, শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, দেবাশিষ কুমার, প্রণব দাশগুপ্ত, গীতানাথ গঙ্গোপাধ্য়ায়, সুব্রত ভট্টাচার্য ও অপরূপ চক্রবর্তী (বাঁ-দিক থেকে) ছবি-শশী ঘোষ।

টেলিভিশন আর মোবাইলের গ্রাসে শৈশব। বাড়ির বাচ্চারা আজ আর মাঠে যায় না। আর গেলেও সংখ্যাটা হাতে গোনা। এই আক্ষেপ এই প্রজন্মের বাবা মায়ের। কলকাতার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিষ কুমারের গলাতেও সেই আক্ষেপের সুর। বলছেন, "আমার বাড়ির পাশেই দেশপ্রিয় পার্ক। ওখানে খেলেই বড় হয়েছেন চুনি গোস্বামী। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন খেলার জায়গা পেতাম না। আর এখন ক’জন খেলে? শনি-রবিবার একটু ভিড় হয়। জেলার কথা আমি বলতে পারব না। কিন্তু কলকাতার প্রায় সব মাঠেই এখন একই ছবি।"

Advertisment

বুধবার বিকেলে ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন দেবাশিষবাবু। তাঁর কথায় মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন মঞ্চে উপবিষ্টরা। যাঁরা বাংলা ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি ডাঃ প্রণব দাশগুপ্ত, সহ সচিব ডাঃ শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, মোহনবাগানের নতুন সভাপতি গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য ও বর্তমান ফুটবলার মহম্মদ রফিক। ফুটবলের একঝাঁক পরিচিত মুখ এদিন একত্রিত হয়েছিল বেবি লিগের আবির্ভাব লগ্নে।

আরও পড়ুন: অ্যাস্ট্রোটার্ফ পেলেই হকির ময়দানে নামবে ফুটবলের তিন প্রধান

Baby legue (1) বেবি লিগ মাতাবে এই খুদেরাই। ছবি: শশী ঘোষ

আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে শহরে শুরু হচ্ছে ‘লিগা প্রডিজিও’। ফিফা-র ফরোয়ার্ড প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন বা এআইএফএফ-এর এই প্রজেক্ট বেবি লিগ নামেই কলকাতায় চলবে। সল্টলেকের এ.ই. ব্লকের ফেজ ওয়ান ও বিধাননগর মিউনিসিপ্যালিটি স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ড দেখবে আগামীর ফুটবলারদের তুলে আনার মহাযজ্ঞ। অনূর্ধ্ব-৯, অনূর্ধ্ব-১১ ও অনূর্ধ্ব-১৩ বিভাগই থাকছে এখানে।

বেবি লিগের অপারেটরের ভূমিকায় রয়েছেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ম্যাচ কমিশনার অপরূপ চক্রবর্তী। তিনি জানালেন, "প্রতিযোগিতা মূলক ফুটবল তো পরে হবে। আগে বাচ্চারা আনন্দের সঙ্গে মাঠে আসুক। খেলাটাকে ভালবাসুক। এটা বলতে পারেন একটা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম। স্পোর্টসের ইকো সিস্টেমটা তৈরি হওয়া প্রয়োজন। ফেডারেশনের এই প্রজেক্ট দুর্দান্ত সাড়া ফেলেছে উত্তরপূর্ব ভারতে। সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয় হচ্ছে ধীরে ধীরে। নিউটাউনে এরকম একটা প্রজেক্ট শুরু হয়েছে। দেখবেন আমাদের বেবি লিগে ব্যারাকপুর, হালিশহর, নবদ্বীপ, মুর্শিদাবাদ থেকেও ফুটবলাররা আসছে।"

Baby legue (2) বিরল মুহূর্ত! ময়দানের দুই প্রধান ক্লাবের সভাপতি এক মঞ্চে। ছবি: শশী ঘোষ

এদিনের অনুষ্ঠানে এসে সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, "আমি বরাবর বলেছি জেলা থেকে ফুটবলার তুলে আনতে হবে। জেলা ভিত্তিক লিগের প্রয়োজন। নিঃসন্দেহে এটা ভাল উদ্যোগ। ছোট থেকেই পরিচর্যা করতে হবে ওদের। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। তবেই আমরা কিছু প্রতিভা পেতে পারি। আমরা ছোটবেলায় পাওয়ার লিগ খেলতাম। অনেকদিন পর এরকম একটা লিগ হচ্ছে ভেবে ভাল লাগছে। বাংলার সব কিংবদন্তি ফুটবলাররাই জেলা থেকে উঠে এসেছেন।" 

রফিকের এই লিগ নিয়ে মন্তব্য, "আমি কখনও এরকম লিগে খেলিনি। কিন্তু খেলাটা অল্পবয়স থেকেই শুরু করা প্রয়োজন। আশা করি এই লিগটা ভালই হবে।" গীতানাথবাবু বললেন, "এরকম লিগ হলে আগামী দিনে একটা সাপ্লাই লাইন তৈরি হবে বাংলায়। সেখান থেকেই ফুটবলারার ইস্ট বেঙ্গল-মোহন বাগানের মতো ক্লাবে খেলতে পারবে।" প্রণববাবু দামি একটা কথা বললেন এদিন। বেবি লিগের ভবিষ্যতটা এখনই দেখতে পাচ্ছেন তিনি। বললেন, "আমরা বিদেশি ফুটবলারদের জন্য মুখিয়ে থাকি। তাঁদের খেলাতে অনেক খরচও হয়। দেখবেন, আগামী ২০ বছরের মধ্যে ইস্ট বেঙ্গল-মোহন বাগানের আর বিদেশি ফুটবলার লাগবে না।"

Football AIFF
Advertisment