পিএসজি: ৫ (মেসি, এমবাপে, রামোস, মার্কুইনহোস, একতিকে)
রিয়াধ অলস্টার: ৪ (রোনাল্ডো-২, সো জাং, তালিস্কা)
হয়ত কেরিয়ারের শেষবার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তর্কাতীতভাবে সর্বকালের অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ দুই নক্ষত্র- লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। প্রদর্শনী ম্যাচ সৌদিতে। সেই ম্যাচ ঘিরেই মরু রাজ্যে গোলের ঝড় উঠল। প্রীতি ম্যাচে দর্শকদের পয়সা উসুল হয়ে গেল। রোনাল্ডোর সৌদির মাটিতে অভিষেকেই জোড়া গোল, মেসি-এমবাপে গোল করলেন, একটা লাল কার্ড, নেইমারের পেনাল্টি মিস, পেন্ডুলামের মত স্কোরবোর্ড বারবার এদিক-ওদিক হল- রিয়াধের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে দর্শকদের সমস্ত চাওয়া-পাওয়াই পূর্ণ হয়ে গেল। ম্যাচের অধিকাংশ সময়ই ১০ জনে খেলেও পিএসজি হাই-স্কোরিং থ্রিলারে ৫-৪ গোলে রিয়াধ অল-স্টারকে হারাল।
ক্লাব পর্যায়ের টুর্নামেন্টে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার পর প্ৰথমবার খেলতে নেমেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ম্যাঞ্চেস্টারের বিতর্কিত এপিসোড, বিশ্বকাপ বিপর্যয় পিছনে ফেলে রিয়াধ অল-স্টারের জার্সিতে নেমেই স্বপ্নের অভিষেক ঘটালেন মহা তারকা। বিরতির আগেই দু-দু বার পিছিয়ে থাকা অবস্থায় সিআরসেভেন জোড়া গোল করে গেলেন। রোনাল্ডোর জোড়া গোলের আগেই স্কোরশিটে অবশ্য নাম তুলে ফেলেন মেসি। ম্যাচের একদম শুরুতেই। নেইমারের চিপ করে তুলে দেওয়া বলে দারুণ ভাবে ফিনিশ করে পিএসজিকে মেসি এগিয়ে দেন ম্যাচের বাঁশি বাজার প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই।
প্ৰথমে পিছিয়ে পড়লেও সৌদির দলটি বারবার বিপক্ষ বক্সে হানা দিচ্ছিল। বক্সের মধ্যে পিএসজিকে ব্যতিব্যস্ত করছিলেন রোনাল্ডো। গোলকিপার কেলর নাভাস রোনাল্ডোকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় রিয়াধ অল-স্টার। সেখান থেকে সমতা ফেরাতে দেরি করেননি রোনাল্ডো। সমতা ফেরার ঠিক পরেই হুয়ান বার্নাটকে লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। দাসেরিকে ফাউল করে মার্চিং অর্ডার পেয়ে বার্নাট বেরিয়ে গেলেও পিএসজিকে রুখে রাখা যায়নি।
আরও পড়ুন: মেসি-রোনাল্ডো ম্যাচে শাহেনশার সারপ্রাইজ এন্ট্রি! স্বপ্নের ম্যাচে বোধন হল কিংবদন্তি ভারতীয়র হাতেই
ক্যাপ্টেন মার্কুইনহোস বিরতির আগেই ২-১ করে যান। তবে বিরতির আগেই রোনাল্ডো রিয়াধকে ম্যাচে ফিরিয়ে ২-২ করে যান। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বলে হেডে ডান পোস্ট ঘেঁষে বল রেখেছিলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। তবে পোস্টে লেগে প্রতিহত হওয়ার পর রিবাউন্ড থেকে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি রামোস। সেই বল ধরেই বাঁ পায়ের শটে ২-২ করেন রোনাল্ডো।
বিরতির আগেই চার গোল। হাফটাইমের পরেও গোলের ঝড় থামেনি। নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেই রামোস দুর্ধর্ষ এমবাপের সেন্টার থেকে বিরতির পরেই ৩-২ করে যান। ঠিক তারপরেই কর্ণার থেকে ভেসে আসা বলে রিয়াধের জাং হেডে ৩-৩ করে যান। মেসির শট বক্সের মধ্যে আল বুলাহি হ্যান্ড বল করে বসলে পেনাল্টি পায় পিএসজি। সেখান থেকেই এমবাপে পিএসজিকে আরও একবার এগিয়ে দেন। ম্যাচের বয়স যখন ৬০ মিনিট। তখন দুই দলের একের পে এক তারকাদের তুলে নেওয়া হয়। রোনাল্ডো, নেইমার, মেসি, এমবাপে- সব তারকাকে দুই দলের কোচ তুলে নেওয়ার পর ম্যাচের গতি অনেকটাই কমে যায়।
দলের রথী-মহারথীরা উঠে যাওয়ার পরে পরিবর্ত হিসাবে নামা হুগো একতিকে দুর্ধর্ষ ফিনিশিংয়ে ৫-৩ করেন। ম্যাচের একদম শেষ লগ্নে আন্ডারসন তালিস্কা রিয়াধের হয়ে ব্যবধান কমিয়ে যান।
দুই দলের সব তারকাই গোলের দেখা পেলেও রিয়াধে সময়টা মোটেই ভাল গেল না নেইমারের। জোড়া সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করলেন। প্ৰথমবার মেসি এবং দ্বিতীয়বার এমবাপের এসিস্ট ঠিকমত কাজে লাগাতে পারলে তাঁর নামের পাশেও থাকত গোল। আর পেনাল্টিও মিস করলেন।