Advertisment

ধোনির মতোই ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশার! এই তারকাকেই ফাইনালে ভয় ভারতের

মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটিংয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ঝুঁকি হীন ব্যাটিং! ইনিংস সাজানোর রণকৌশল বেশ পরিষ্কার, প্রথম ৩০ রান করার আগে কোনওরকম ঝুঁকিপূর্ণ শট, যেমন সুইপ, ফ্লিক, গ্লাইড খেলা যাবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mahmudul Hasan Joy

বাংলাদেশের ধোনি বলা হচ্ছে মাহমুদুল হাসান জয়কে (ফেসবুক ও টুইটার)

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট সার্কিটে মাহমুদুল হাসান জয়ের নাম সুপরিচিত একটাই কারণে। স্রেফ ক্রিকেটীয় পারফরম্যান্সে অনেক বড়সড় প্রতিপক্ষকেই ঝলসে দিতে পারেন। সেই জয়ই এবার বাংলাদেশকে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে আরও একবার নিজের উপস্থিতি প্রমাণ করলেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে একা কার্যত কাঁপিয়ে দিলেন।

Advertisment

আইসিসি টুর্নামেন্টে প্রথমবার বাংলাদেশ পা রাখল মাহমুদুল হাসান জয়ের ১২৭ বলে ১০০ রানের ইনিংসে ভর করে। ঘটনাচক্রে, বিশ্বকাপে কিন্তু মোটেই ফর্মে ছিলেন না তিনি। সেমিফাইনালের আগে পাঁচ ইনিংস মিলিয়ে জয়ের রান ছিল মাত্র ৭৬। এর মধ্যে দু-টো শুন্যও করেছিলেন। তবে কোচ নাভেদ নওয়াদের পুরো বিশ্বাস ছিল জয়ের উপরে। সেই কারণে তিনি ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছিলেন, "জয় একজন ক্লাস ক্রিকেটার। ওকে ব্যাক করা প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত দলের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তেই ও জ্বলে উঠবে।"

আরও পড়ুন ভারতের বিরুদ্ধে বারেবারেই হার! বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রতিশোধের স্বপ্ন বাংলাদেশের

আসলে ঘরোয়া ক্রিকেটে জয়কে খুব কাছ থেকে দেখেছেন মাহমুদুল হাসান। গত বছরেই ইংল্যান্ডের অনুর্ধ্ব-১৯ যুব দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিনের ফাটাফুটো পিচে শতরান করে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সেই সময় ৩৩৩ রান তাড়া করছিল। এবং নিয়মিত ব্যবধানে উইকেটও হারাচ্ছিল। তবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে জয় ৩ উইকেট হাতে নিয়ে দলকে জয়ের সরণিতে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এর কয়েকদিন পরেই ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বেড়ে ওঠা মাহমুদুল হাসান নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১২৬ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন।

গত কয়েক বছর হল বড়দের কিংবা ছোটদের ফাইনাল- ভারতের কাছে একাধিকবার বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশ তো জয়ের খুব কাছে গিয়ে ফিরে এসেছে। এরপর এশিয়া কাপের ফাইনালও হারতে হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৯-স্তরেও একই ঘটনা ঘটেছে। শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ যখন জয় দেখছিল বাংলাদেশ তখনই অবিশ্বাস্যভাবে সেই ভারতের কাছে হেরে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ইংল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। সেখানে হারের যন্ত্রণা সইতে হয়েছে।

আরও পড়ুন রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী, সৌরভের একরত্তি সানা এখন আঠারো

সেই ট্র্যাডিশনই ঘুরিয়ে দিতে যেন এসেছেন জয়! নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সময়ে একবারের জন্যও মনে হয়নি জয় চাপের মধ্যে রয়েছেন। বরং ঢাকায় ক্লাব ক্রিকেটে যেরকমভাবে খেলেন, তেমনই সহজভাবে ম্যাচের পরিস্থিতি সামলে নিয়েছিলেন। চাপহীন খেলার মানসিকতার জন্য জয় দেশের ক্রিকেট সার্কিটে বাংলাদেশের ধোনি নামেও পরিচিত! ধোনিকে নিজের আদর্শও মানেন তিনি।

মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটিংয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ঝুঁকি হীন ব্যাটিং! ইনিংস সাজানোর রণকৌশল বেশ পরিষ্কার, প্রথম ৩০ রান করার আগে কোনওরকম ঝুঁকিপূর্ণ শট, যেমন সুইপ, ফ্লিক, গ্লাইড খেলা যাবে না। ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়ার পরেই আক্রমণাত্মক শট নিয়ে থাকেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও একই কৌশলে রান করলেন তিনি। অপেক্ষা করার পরে লেগস্পিনার অশোক আদিত্যকে আক্রমণের লক্ষ্য বানালেন। পাশাপাশি জয়ের শটে থাকে অদ্ভূতভাবে শক্তি ও টাইমিংয়ের মিশ্রন।

আরও পড়ুন শচীনের পুঁচকি সারা এখন রীতিমতো ডিভা! গ্ল্যামারে ঝলসে দেবেন বলি নায়িকাদেরও

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়কে যোগ্য সঙ্গত করে গেলেন একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা তৌহিদ হৃদয় (৪৭ বলে ৪০) এবং শাহাদাত হোসেন (৫১ বলে ৪০)। ক্যাপ্টেন আকবর আলি তো পরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেই গেলেন, "যেভাবে জয় ও হৃদয় ব্যাটিং করছিল, তা অসাধারণ! ওরা অনেক পরিশ্রম করে থাকে অনুশীলনে। এটা প্রশংসনীয়। পাশাপাশি আমাদের তিন স্পিনারেরও কৃতিত্ব প্রাপ্য।"

এবার সামনে টুর্নামেন্টের সবথেকে শক্তিশালী দলের বাধা! ভারতকে কী হারাতে পারবে বাংলাদেশ? অধিনায়ক আকবর আলি বলেই দিয়েছেন, "ভারত অনেক শক্তিশালী দল। আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে চাইব। চেষ্টা করব নিজেদের সেরা খেলাটা দেখাতে। তিন বিভাগেই ভাল করতে হবে আমাদের, ওরা যেহেতু দারুণ দল।"

ফাইনালে জয় দলকে জয়ে ঐতিহাসিক জয় উপহার দিতে পারবেন? রবিবারেই মিলবে উত্তর!

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
https://t.me/iebangla

Read the full article in ENGLISH

Bangladesh Cricket World Cup
Advertisment