শুক্রবার লিডসে লঙ্কাকাণ্ড দেখেছে বিশ্বকাপ। সৌজন্য লাসিথ মালিঙ্গা। শ্রীলঙ্কার ২৩২ রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড যে, ২১২ রানে গুটিয়ে যেতে পারে, এমনটা কল্পনা করতে পারেননি কেউই। আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর ওয়ানডে টিম। এই টুর্নামেন্ট জয়ের অন্যতম ফেভারিট। তাদের ২০ রানে হারিয়ে লঙ্কা বাহিনীর জয় নিঃসন্দেহে বড় চমক। শ্রীলঙ্কার জয়ের কাণ্ডারি বলতে গেলে মালিঙ্গাই। একটি মেডেন সহ ১০ ওভার বল করে ৪৩ রান খরচ করে চার উইকেট তুলে নেন তিনি। ইকনমি ৪.৩০।
মুথাইয়া মুরলীথরনের পর মালিঙ্গাই দ্বীপরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ৫০টি উইকেট নিলেন। বিশ্বের দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে এই নজির গড়লেন তিনি। মালিঙ্গা মাত্র ২৬ ম্যাচে এই নজির গড়েছেন। বিশ্বের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে এই রেকর্ড করলেন তিনি। গ্লেন ম্যাকগ্রা আর মুরলীথরনের লেগেছিল ৩০টি ম্য়াচ। পাক কিংবদন্তি ওয়াসিক আক্রমের লেগেছিল ৩৪টি ম্যাচ।
আরও পড়ুন: বিশাল ভুড়ি মালিঙ্গার, এই ছবিতেই লুকিয়ে তারকার প্রতি সম্মানের বার্তা
✅ 2007
✅ 2011
✅ 2015
✅ 2019Sri Lanka have beaten England every time they've faced them at men's World Cups this century... and one man has starred in all four wins!#CWC19 | #LionsRoar pic.twitter.com/bNLSFGXZrg
— Cricket World Cup (@cricketworldcup) June 21, 2019
শেষ চারটি বিশ্বকাপে একবারও শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড। আর প্রতিবারই নিজের ছাপ রেখেছেন মালিঙ্গা। ২০০৭ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা ২ রানে জিতেছিল, মালিঙ্গা নেন একটি উইকেট। ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা যথাক্রমে ১০ ও ৯ উইকেটে জেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। মালিঙ্গা একটি করে উইকেট পান। ৩৫ বছর বয়সে মালিঙ্গা যে বোলিংটা করছেন সেটা অনেকেই ভাবতেও পারবে না। বিশ্বকাপের মাসদুয়েক আগের ঘটনার কথা বললেই বোঝা যাবে মালিঙ্কা কিভাবে নিজের সেরাটা দিতে মরিয়া ছিলেন তিনি।
আইপিএল টুয়েলভের প্রথম ‘এল ক্লাসিকো’তে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৩৭ রানে হারিয়েছিল এমএসধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে। সেই ম্যাচে ৩৪ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মালিঙ্গা। ম্যাচের পর সব খেলোয়াড়ই হোটেলে ফিরে নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য় ফ্রেশ হতে চান। কিন্তু মালিঙ্গার মাথায় ছিল অন্য পরিকল্পনা। হোটেলে ফেরার কিছু পরেই মালিঙ্গা পৌঁছে গিয়েছিলেন মুম্বইয়ের বিমানবন্দরে। রাত দেড়টার বিমান ধরে চলে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। ওখানে ভোর সাড়ে চারটের সময় পৌঁছান তিনি। আর এর তিন ঘণ্টার মধ্য়েই মালিঙ্গা নিজেকে প্রস্তুত করে নেন দ্বিতীয় ম্য়াচের জন্য়।
সেদেশের ঘরোয় ক্রিকেটের জার্সিতে নেমে যান তিনি। গলের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন ‘স্লিঙ্গা’। ৪৯ রান দিয়ে তুলে নেন সাত উইকেট। মালিঙ্গার লিস্ট এ ক্রিকেট কেরিয়ারে এটাই সেরা পরিসংখ্যান। তাঁর বোলিংয়ে ভর করেই গল ১৫৬ রানে জিতে যায়। হিসেব বলছে মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে দু’টো আলাদা দেশের খেলে মালিঙ্গা নিয়েছিলেন ১০ উইকেট।