শতবর্ষে পা রাখতে চলা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কটূক্তি করেছিলেন দিন দুয়েক আগেই। সরাসরি জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে থেকে কীভাবে ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন! তারপরে রীতিমতো ঝড় উঠে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্রুদ্ধ লাল-হলুদ সমর্থকদের ক্ষোভের সামনে পড়েছিলেন তথাগত রায়। যদিও তাঁর মন্তব্য অপব্যাখ্যা হয়েছে বলে পরে দ্বিতীয় একটি ট্যুইট করেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা বর্তমানে মেঘালয়ের রাজ্যপাল।
সেই মন্তব্যেরই এবার পালটা দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে দাঁড়িয়েই ধুয়ে দিলেন মেঘালয়ের রাজ্যপালকে। মুখ্যমন্ত্রী বিস্ফোরক বক্তৃতায় উগরে দিলেন ক্ষোভ। জানালেন, "আমার কানে কিছু ওয়েস্ট বেঙ্গল, ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কিত মন্তব্য এসেছে। ওপার বাংলায় জন্মেছি বলে এপার বাংলার ক্লাবকে ভালবাসব না, এ আবার কেমন কথা! এরকম মন্তব্য শুনে আমি লজ্জিত বোধ করি।"
এখানেই না থেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও সংযোজন, "এটা ক্লাবের কাছে অপমান। ফুটবলের কোনও ভৌগোলিক সীমানা হয় না, কোনও গণ্ডি নেই।"
আরও পড়ুন শাস্ত্রীকে নিয়ে কোহলির মন্তব্যকে সম্মান করেন কপিল
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। সেদিনই বিতর্কিত টুইটে তথাগত রায় লিখেছিলেন, "পশ্চিমবঙ্গে থেকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে সমর্থন কেন? এখানে থেকে ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন কী করে করেন আপনারা? তারপরেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। ময়দানি ফুটবলের বিতর্কের ঢেউ সেই ঢেউ আছড়ে পড়ে সর্বত্র।
কপিল দেব ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখোমুখি পরস্পরের (এক্সপ্রেস ছবি, শশী ঘোষ)
তারপরেই যদিও ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে তথাগত রায় দ্বিতীয় টুইটে লেখেন, গালিগালাজ করা হচ্ছে আমাকে। আমার টুইটের সারমর্ম না বোঝার ফলেই এই আক্রমণ। আমাদের অনেকেই পূর্ববঙ্গীয় শিকর ভুলে গিয়েছেন। তবে সেই নামের ক্লাব পছন্দ করেন। ঘটনা হল, পশ্চিমবঙ্গে বসে ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করতে হচ্ছে, এই ঘটনা আমাকে প্রতিনয়ত মনে করিয়ে দেয়, কেবলমাত্র ধর্মের জন্যই আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।"
তারপরেই এবার রণংদেহী মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী। নিজের পূর্বনির্ধারিত র্যালিতে যোগ না দিয়ে সরাসরি চলে এসেছিলেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। কারণ তিনি জানালেন, "ইস্টবেঙ্গলের জন্য় মন কেমন করছিল।" তিনি আরও বললেন, "ভারতীয় ফুটবলের সমর্থকরা যেরকম নিজের ক্লাবের জন্য গর্ববোধ করেন, সেরকম পৃথিবীর অন্য কোথাও কেউ করে না। ক্লাবের অপমান তাঁরা সহ্য করে না। আমি ফ্যানেদের স্যালুট জানাই। ইস্টবেঙ্গল একটা যৌথ পরিবারের মতো। এখানে আমরা সবাই এক। জয় হিন্দ, জয় বাংলা, জয় ইস্টবেঙ্গল।"