Manoj Tiwary interview: বাংলার ক্রিকেটে মহীরুহ তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০ হাজারের ওপর রান রয়েছে। দু-দশকের বেশি ক্রিকেট কেরিয়ারে ইতি পড়ল গত সপ্তাহে। আন্তর্জাতিক স্তরেও নক্ষত্র হওয়ার স্বাদ পেতে পারতেন মনোজ তিওয়ারি। তবে আক্ষেপ যেন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে বিদায়বেলায়। সমস্ত প্রত্যাশা, হৃদয় হারানো বেদনা শেষবেলায় উজাড় করে দিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে।
বলে দিলেন, ক্রিকেটারদের মধ্যে সেই খিদেই আর নেই পারফর্ম করার। এর জন্য বাংলার সুপারস্টার দুষছেন আইপিএলের জৌলুসকেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে মনোজ বললেন, "আইপিএলের কন্ট্রাক্ট পাওয়ার পর কোনও ক্রিকেটার রঞ্জিকে আর সেভাবে গুরুত্ব দেয়ই না। আমরা যখন ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করি, আমাদের বলা হয়েছিল সিরিয়াস হয়ে খেলতে। ম্যাচ উইনার হওয়ার লক্ষ্য থাকত আমাদের। এখন সেই খিদেই আর দেখা যায় না।"
"বলছি না আইপিএল খারাপ। আইপিএল প্লেয়ারদের ম্যাচ জেতার বাসনা তীব্র করে। তবে সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের মনে অসতর্কভাবেই হানা দেয় কেয়ারলেস মনোভাব। রঞ্জি কিন্তু সেই টুর্নামেন্ট যা টেস্ট ক্রিকেটার গড়ে তোলে!"
শুধু ক্রিকেটারই নয়, রঞ্জি ট্রফির আম্পায়ারদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মনোজ তিওয়ারি। কোনও রাখঢাক না রেখেই তারকা ক্রিকেটার বলো দিয়েছেন, "আম্পায়ারিং নিয়ে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তার অবকাশ রয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান কিন্তু যথেষ্ট দুর্বল। বোর্ডের উচিত আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা। স্রেফ একটা-দুটো সিজন দেখেই এমনটা বলছি না। বছরের পর বছর এমনটা হয়েই চলেছে। একদম হাস্যকর শিশুসুলভ সমস্ত ভুলভ্রান্তি করা হয়।"
নিজের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মনোজ জানিয়েছেন, "একজন ক্রিকেটারকে যদি ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হয়, তাহলে ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম বলবৎ হওয়া উচিত। বহুবার দেখেছি আম্পায়াররা হ্যাংওভার সমেত ম্যাচ পরিচালনা করতে নামছেন। তাঁদের দেখে ঘুমন্ত মনে হয়। এমন অবস্থায় তাঁরা কীভাবে ম্যাচ পরিচালনা করবেন? আমি হয়ত জিজ্ঞাসা করলাম, "স্যার গতকাল রাতে কী পান করেছেন?" জবাব পাই, "আমি হুইস্কি অন দ্যা রকস পছন্দ করি।" তারপর তাঁরা হাসতে থাকে। বোর্ডের উচিত ম্যাচ পরিচালনার আগে সমস্ত আম্পায়ারদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করা।"
অবসরের সময়ে আক্ষেপ একটাই। জাতীয় দলের হয়ে নিজের কেরিয়ার দীর্ঘায়িত না হওয়া। মনোজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "ক্রিকেট খেলা বরাবর উপভোগ করেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০ হাজারের ওপর রান রয়েছে আমার। তবে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট না খেলার আক্ষেপ রয়েই যাবে।২০১১-য় শতরান করার পরেও জাতীয় দল থেকে কেন আমাকে বাদ দেওয়া হল, বিশেষ করে সেই অস্ট্রেলিয়া সফরে, যখন সকলেই ব্যর্থ হয়েছিল! সুযোগ পেলে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই। রোহিত শর্মা, সুরেশ রায়না তো বটেই বিরাট কোহলির মত সুপারস্টার হওয়ার যোগ্যতা ছিল আমার। তবে তা হইনি। আজকে টিভিতে যখন দেখি, সমস্ত ক্রিকেটাররা এত সুযোগ পায়, আমার খারাপ লাগে।”
"সবমিলিয়ে এই যাত্রা দারুণ ছিল। পুরোটাই উপভোগ করেছি। ক্রিকেট আমার জীবন বদলে দিয়েছে। তাই কোনও অভিযোগ নেই।"