Advertisment

ফাঁকা যুবভারতীতে অনন্য সুন্দর মহমেডান, তিন বছর পর মোহনবাগানকে হারাল তারা

বিরতির পর ভিকুনা গোলের মধ্যে থাকা শুভ ঘোষকে নামালেন রোমারিও জেসুরাজের বদলে। কিন্তু ম্যাচের ৬১ মিনিটে জন চিডির শট আটকাতে পারলেন না দেবজিৎ। মহমেডান এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mohun Bagan vs Mohammedan

মোহনবাগান বনাম মহামেডান

মোহনবাগান ম্যাচের আগেরদিন সকালের ঘটনা। মহমেডান ক্লাবের ছোট্ট একটা ঘরে বসে দীপেন্দু বিশ্বাস। তাঁর পাশে গোলকিপার কোচ গোপাল দাস ও কোচ শহিদ রমন।

Advertisment

টিম লিস্ট মিলিয়ে দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের হাতে নিজের পকেট থেকে ইনসেনটিভ তুলে দিয়েছিলেন টিডি দীপেন্দু। বলেছিলেন, বাগানকে হারাতে পারলেও ক্লাবের এই প্রাক্তন ফুটবলারের পক্ষ থেকে থাকবে আরেক প্রস্থ ইনসেনটিভ।

বৃহস্পতিবার বাগানের বিরুদ্ধে কালো-সাদা জার্সিধারীদের পারফরম্যান্স দেখে মনে হল টিডি দীপেন্দুর প্রেসক্রাইবড ভিটামিন 'এম' (মানি) বদলে দিল টিমের চেহারাটাই। সম্ভবত এই মুরসুমের সেরা ফুটবলটা উপহার দিলেন তীর্থঙ্কররা। মহমেডান ৩-২ গোলে হারিয়ে দিল কিবু ভিকুনার মোহনবাগানকে।

আরও পড়ুন মহমেডান কি পারবে ইতিহাস বদলাতে? সমর্থকদের জন্য় জিততে চাইছেন দীপেন্দু

এদিন দীপেন্দু- রমনের সাদা-কালো ব্রিগেড ১০ মিনিটের মধ্যে মোহনবাগানের রক্ষণ ফালাফালা করে তুলে নিল জোড়া গোল। ম্যাচের সাত মিনিটের মধ্যে প্রথম গোল চলে আসে করিম ওমোলোজার পা থেকে। চাংতের কর্নার থেকে তাঁর চোখ ধাঁধানো কার্লার বুঝতেই পারলেন না দেবজিত।

আর এই গোলের তিন মিনিটের মধ্যেই ফের ব্ল্যাক প্যান্থার্সকে এগিয়ে দেন বাগানের প্রাক্তন ফুটবলার। ২০-২২ গজ দূর থেকে ডান পায়ে বুলেট শটে স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলেন। দু'টো গোলের ক্ষেত্রেই বাগানের তিন ডিফেন্ডার লালরাম চুলোভা, ড্যানিয়েল সাইরাস ও কিমকিমাদের অস্তিত্ব বোঝা গেল না। বিরতির ২০ মিনিট আগে সুবজ-মেরুনের মুক্ত বাতাস নিয়ে আসেন জোসেবা বেইতিয়া। ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ ইনসুইং শটে ব্যবধান কমান তিনি। গোলকিপার প্রিয়ান্ত সিংয়ের কিছু করার ছিল না।

বিরতির পর ভিকুনা গোলের মধ্যে থাকা শুভ ঘোষকে নামালেন রোমারিও জেসুরাজের বদলে। কিন্তু ম্যাচের ৬১ মিনিটে জন চিডির শট আটকাতে পারলেন না দেবজিৎ। মহমেডান এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে। মহমেডান বিরতির পরেও একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল। মোহনবাগান রক্ষণের কঙ্কালসার চেহারাটা ক্রমেই প্রকট হচ্ছিল।

এক এক সময় মনে হচ্ছিল মহমেডানের ফুটবলাররা বাগানের ডিফেন্স নিয়ে ছেলেখেলা করছে। আর এর মাঝেই ৬৯ মিনিটে মোহনবাগানকে খেলায় ফিরিয়ে আনে সুপার-সাব সালভা চামোরো। ২৫ গজের মধ্যে থেকে বেইতিয়ার ফ্রি-কিক থেকে মাথা ছুঁইয়ে স্কোরলাইন ৩-২ করেন। এরপর আর কোনও দলই কোনও গোল করতে পারেনি। এদিন মহমেডান অন্ততপক্ষে পাঁচ গোল করতেই পারত। অল্পের জন্যই তাদের কয়েকটা গোল হাতছাড়া করতে হয়েছে। তবে মহমেডান সমর্থকদের মনে এই ফুটবল দীর্ঘদিন মনে থেকে যাবে। শেষ তিন ম্যাচে মহমেডান পারেনি মোহনবাগানকে হারাতে। এমনকী ইতিহাস বলছে ২০১৭-র পর থেকে আর মহমেডান বাগানের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি। ২০১৬ সালে শেষবার ডোডোজের একমাত্র গোলে মহমেডান হারিয়েছিল বাগানকে। তিন বছর পর ফের মোহনবাগানকে হারাল মহমেডান।

সরকারি ভাবে যে স্টেডিয়ামে ৬৬ হাজারের কিছু বেশি দর্শকাশন রয়েছে সেখানে হাজার দু-তিনেক মানুষের দেখা পাওয়া গেলে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, গ্যালারি প্রায় ফাঁকা। কর্মব্যস্ত দিনে মিনি ডার্বি ম্যাচে প্রায় 'সমর্থকহীন' ভাবেই খেলল কলকাতা ময়দানের অন্যতম দুই প্রধান। যদিও নিরাপত্তা জনিত কারণও রয়েছে এর সঙ্গে।

মোহনবাগান দল: দেবজিৎ, চুলোভা, সাইরাস, কিমকিমা, গুরজিন্দর, নাওরেম, সহিল, গঞ্জালেজ, জেসুরাজ (শুভ ঘোষ), বেইতিয়া ও ভিপি সুহের

মহমেডান দল: প্রিয়ান্ত, সুজিত, প্রসেনজিৎ, ওমোলাজা, সইফুল, মুসা, ফিরোজ, তীর্থঙ্কর, সত্যম, চাংতে ও উজোদিনমা

Mohun Bagan Kolkata Football
Advertisment